দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট

নিবন্ধ রচয়িতার পরিচয় জানতে আইন মন্ত্রণালয়ের তদন্ত চান ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মনে করেন, নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত বেনামে লেখা নিবন্ধের রচয়িতার পরিচয় উন্মোচিত হওয়া দরকার। আইন মন্ত্রী জেফ সেশনসের এ বিষয়ে তাদন্ত শুরু করা উচিত মন্তব্য করে শুক্রবার তিনি বলেছেন, নিবন্ধের রচয়িতা জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি হুমকি। এমন নিবন্ধের রচয়িতা পরিচয় গোপন করে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বৈঠকে উপস্থিত থাকুক তা তিনি চান না। শুক্রবার এয়ার ফোর্স ওয়ানে নিউ ইয়র্ক টাইমসের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছেন কি না তা সাংবাদিকরা জানতে চাইলে ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমি ভাবছি।’ এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদপত্র ওয়াশিংটন পোস্ট ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মুদ্রিত সংখ্যার অন্যতম প্রধান শিরোনাম করেছ, ‘ট্রাম্প কলস অন জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট টু ফাইন্ড অপ-এড অথর।’ওয়াশিংটন পোস্ট - ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

ঘটনার শুরু গত বুধবার। সেদিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়। এর মূল বক্তব্য হচ্ছে, ট্রাম্প রিপাবলিকান প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হলেও রিপাবলিকানদের মূল্যবোধ মেনে কাজ করেন না। নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়ে কোনও স্থিরতা নেই। প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি যখন তখন মত পাল্টান। কিম জং উন ও পুতিনের মতো একনায়কের প্রতি তার সমর্থন রয়েছে।  বন্ধু রাষ্ট্রগুলোকে তিনি উপেক্ষা করার চেষ্টা করেন। এরকম আরও বেশ কিছু অভিযোগের কথা উল্লেখ করে লেখা হয়েছে, নিবন্ধের রচয়িতা ও ট্রাম্প প্রশাসনের সমমনা কর্মকর্তারা আসলে ‘দ্বৈত শাসনের’ দ্বারস্থ হয়েছেন। একদিকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প তার খেয়ালখুশি মতো সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন। অন্যদিকে ট্রাম্পবিরোধী কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থবিরোধী সিদ্ধান্তে বাস্তবায়ন ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন। এর প্রতিক্রিয়াতেই ট্রাম্প তদন্ত শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন।

এমন ঘটনার কোনও তদন্ত হচ্ছে কি না তা জানতে চাইলে আইন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মন্তব্য করেছেন, তদন্ত হচ্ছে কি হচ্ছে না সে বিষয়ে কোনও তথ্য দেওয়াটা আইন মন্ত্রণালয়ের রীতির মধ্যে ওরে না! ওয়াশিংটন পোস্ট লিখেছে, অথচ বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, কোনও আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু না হলেও অনানুষ্ঠানিক একটি অনুসন্ধান চলছে। হোয়াইট হাউজের চিফ অব স্টাফ জন কেলি এই অনুসন্ধানের তত্ত্বাবধান করছেন।

হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি সারাহ স্যান্ডার্স নিউ ইয়র্ক টাইমসের ফোন নাম্বার উল্লেখ আহ্বান জানিয়েছেন, সবাই যেন নিবন্ধের রচয়িতার নাম প্রকাশের দাবি জানিয়ে পত্রিকাটিকে ফোন করেন।

এদিকে বৃহস্পতিবারই নিউ ইয়র্ক টাইমসের পক্ষ থেকে সংবাদ মাধ্যমটির মুখপাত্র এলেন মরফি, বেনামে ওই নিবন্ধটি ছাপানোর পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, সব মার্কিন নাগরিকের জন্য সংবিধানের দেওয়া মত প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারকে আইন মন্ত্রণালয় সম্মান জানাবে এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে রচয়িতার নাম প্রকাশে বাধ্য করবে না।’

বুধবার ‘আই অ্যাম পার্ট অব দ্য রেজিস্টেন্স ইন্সাইড রেয়াম্প অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ শীর্ষক নিবন্ধটি কে লিখেছেন টানিয়ে জল্পনা কল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছিল। সংশ্লিষ্ট উচ্চপদস্থ মার্কিন কর্মকর্তাদের অনেককেই ওই নিবন্ধ লেখার কথা অস্বীকার করে বিবৃতি দিয়ে হয়েছে। এদের মধ্যে স্বয়ং ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স ও পররাষ্ট্র মন্ত্রী পাইক পম্পেও রয়েছেন!