দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন

টিএলপি নেতাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থায় যেতে পারে পাকিস্তান সরকার

পাকিস্তানের কট্টর ডানপন্থী রাজনৈতিক দল তেহরিক-ই-লাব্বায়েক পাকিস্তান (টিএলপি) এর নেতাদের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে সামরিক-বেসামরিক নেতৃবৃন্দ। ব্লাসফেমির অভিযোগ থেকে খ্রিস্টান নারী আসিয়া বিবিকে আদালতের নিষ্কৃতি প্রদানকে চ্যালেঞ্জ করা এবং বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরির জন্য এমন ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। বুধবার (৭ নভেম্বর) এ খবরটিকে প্রধান শিরোনাম করেছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।

দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রথম পাতা
মঙ্গলবার (৬ নভেম্বর) পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সভাপতিত্বে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির (এনএসসি) বৈঠক হয়। সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান এবং মন্ত্রিপরিষদের জ্যেষ্ঠ সদস্যরা বৈঠকে অংশ নেন। তারা বলেন, ‘পাকিস্তানের শান্তি, স্থিতিশীলতা ও আইনের শাসনের ওপর দেশটির অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির বিষয়টি’ নির্ভর করে।

পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, আইনের শাসনের ওপর এনএসসি’র জোর দেওয়ার মধ্য দিয়ে বোঝা যায়, সরকার টিএলপি ও এর নেতাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থায় যেতে পারে।  এনএসসি’র বৈঠক শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মিঞা সাকিবের বক্তব্য থেকেও একই ইঙ্গিত মিলেছে। তিনি বলেছেন, পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রতিক্রিয়ায় যে দাঙ্গা-হাঙ্গামা সংঘটিত হয়, তাতে সাধারণ মানুষের জীবন ও সম্পদের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে মুসলিম শ্রমিকদের গ্লাসে আসিয়ার পানি পান করাকে কেন্দ্র করে তার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তোলা হয়। ২০১০ সালে পাকিস্তানের ব্লাসফেসি আইনে দেশটির প্রথম নারী হিসেবে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলে তখন থেকেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জোরালো সমালোচনা শুরু হয়। উচ্চ আদালতের রায় বাতিল করে গত ৩১ অক্টোবর পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালত আসিয়া বিবির মৃত্যুদণ্ড বাতিল করে তাকে সাজা থেকে অব্যাহতি দেন। মৃত্যুদণ্ড বাতিলের রায় দেওয়ার পর পরই ইসলামাবাদ,করাচি ও লাহোরের গুরুত্বপূর্ণ অনেক রাস্তা অবরোধ করে টিএলপি-তেহরিক ই লাব্বায়েক পাকিস্তান নামের উগ্রবাদী সংগঠন। সরকার ও সেনাপ্রধানকে উৎখাতসহ বিচারকদের হত্যার দাবি তোলে বিক্ষুব্ধরা। উত্তেজনা নিরসনে শনিবার (৩ নভেম্বর) টিএলপির সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছায় ইমরান খানের সরকার। সমঝোতা অনুযায়ী,উগ্রবাদী বিক্ষোভের অবসানের বিনিময়ে সরকারের পক্ষ থেকে আসিয়া বিবির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে কেউ রিভিউ পিটিশন দায়ের করলে তার বিরোধিতা না করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।