হিন্দুস্তান টাইমস

যেকোনও সময় ভারতের সঙ্গে আলোচনার জন্য আমি প্রস্তুত: ইমরান খান

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, ভারতের সঙ্গে যেকোনও সময় আলোচনায় যোগ দিতে তিনি প্রস্তুত। বৃহস্পতিবার (২৯ নভেম্বর) তিনি আরও বলেছেন, সন্ত্রাসীরা যে পাকিস্তানে থেকে তৎপরতা চালায় তা পাকিস্তানের নিজের জন্যও ভালো ফল বয়ে আনে না। কিন্তু শান্তির জন্য কোনও এক পক্ষের প্রচেষ্টা ফলপ্রসূ হবে না। এর জন্য দুই দেশকেই এগিয়ে আসতে হবে। যেহেতু ভারতে জাতীয় নির্বাচন আসন্ন, সেহেতু আনুষ্ঠানিক আলোচনার জন্য তিনি নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতেও রাজি। এ বিষয়ে ভারতীয় সংবাদপত্র ‘হিন্দুস্তান টাইমস’ ৩০ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে মুদ্রিত সংখ্যার প্রধান শিরোনাম করেছে, ‘রেডি ফর টকস এনি টাইম: ইমরান।’Untitled

কর্তারপুর গুরুদুয়ারা দরবার পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের নারোয়াল জেলায় অবস্থিত। সীমান্ত থেকে একেবারে কাছে এই জায়গা শিখদের জন্য অত্যন্ত পবিত্র। ভারতীয় শিখরা প্রতিবছর সীমান্ত পেরিয়ে গুরুনানকের হাতে তৈরি এই পবিত্র স্থানে উপস্থিত হন। ১৫২২ সালে এটি তৈরি হয়। জীবনের শেষ ১৮ বছর এখানেই কাটিয়েছেন গুরুনানক। বর্তমানে শিখ তীর্থযাত্রীদের পাকিস্তানে যেতে ভিসা প্রয়োজন হলেও তাতে কোনও বাধা নেই। যে কেউ কর্তারপুরের গুরুদুয়ারায় যেতে পারেন। তার জন্য পাকিস্তান সরকারের বিশেষ অনুমতি লাগে না। শিখরা বছরে চারটি অনুষ্ঠানে কর্তারপুরে যান। তবে এবার শিখদের সারা বছর গুরুদুয়ারায় যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য একটি রাস্তা নির্মাণে ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে অনুরোধ জানানো হয়। পাকিস্তান সে আবেদনে সাড়া দিয়েছে। আর এমন পরিবেশে সার্বিক বিষয়-আশয় নিয়ে দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা আলোচিত হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে।

কিন্তু গত বুধবার ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বলেছেন, কার্তারপুরের করিডোর পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা শুরুর জন্য যথেষ্ঠ নয়। তার ভাষ্য, ‘সংলাপ ও সন্ত্রাস হাত হাত মিলিয়ে চলতে পারে না। যে মুহূর্তে পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসীদের মদদ দেওয়া বন্ধ করবে, সেই মুহূর্তেই আলোচনা অনুষ্ঠিত হতে পারে।’ তাছাড়া, বিশেষ উল্লেখযোগ্য কোনও ঘটনা না ঘটলে পাকিস্তানে অনুষ্ঠিতব্য সার্ক সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর যাওয়ার কোনও সম্ভাবনাও নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

ভারতের এমন অবস্থানের প্রেক্ষিতে পাকিস্তান সফরে যাওয়া ভারতীয় সংবাদ কর্মীদের পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, ‘আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, যে কেউ পাকিস্তানকে সন্ত্রাসী তৎপরতার ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করুক না কেন, তা পাকিস্তানের জন্য ভালো ফল বয়ে আনে না।’ লসকর-ই-তৈইয়্যাবার প্রধান ও মুম্বাই হামলার নাটের গুরু হিসেবে চিহ্নিত হাফিজ সাইদের বিষয়ে প্রশ্ন করলে ইমরান বলেছেন, তার বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন একটি বিষয়। তবে তাকে যথেষ্ঠ কড়া নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে।

ভারতের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে এসময় ইমরান অভিযোগ করেন, তার সদিচ্ছার জবাবে ভারত যথাযথ পদক্ষেপ নেয়নি। তিনি নির্বাচনে জয় লাভের পরপরই বলেছিলেন, ভারত এক পা আগালে পাকিস্তান দুই পা আগাবে। কিন্তু গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বৈঠক চলাকালে ভারত  পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের একটি আলোচনার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে।