নেপালি কিশোরী নির্মলা পান্তাকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে প্রদীপ রাওয়াল নামে ১৯ বছর বয়সী এক তরুণকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মহারাজগঞ্জের কাঞ্চনপুরের ভিমদত্ত এলাকার বাসিন্দা সে। শুক্রবার (৭ ডিসেম্বর) এ খবরটিকে প্রধান শিরোনাম করেছে নেপালি সংবাদমাধ্যম দ্য হিমালয়ান টাইমস।
নেপালি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রকে উদ্ধৃত করে হিমালয়ান টাইমস জানায়, কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরোর (সিআইবি) পক্ষ থেকে রাওয়ালকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে এবং তার জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। এরপর তার ডিএনএ নমুনা পাঠানো হয়েছে ফরেনসিক ল্যাবে। সূত্র আরও জানায়, বৃহস্পতিবার রাওয়ালের জবানবন্দি নেওয়ার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে পুলিশের আইজি জানিয়েছেন, এর মধ্য দিয়ে নির্মলা হত্যাকাণ্ড তদন্তে খানিক দিশা পাওয়া যাবে।
মহারাজগঞ্জ পুলিশ জানিয়েছে, ওই এলাকায় মেয়েদের সঙ্গে বাজে ব্যবহারের অভিযোগে গত ৩ ডিসেম্বর রাওয়ালকে সর্বপ্রথম গ্রেফতার করা হয়। মহারাজগঞ্জ ইউনিটে জায়গা কম থাকায় তাকে স্থানান্তর করা হয়েছে সিআইবিতে। তার মা-বাবা ভারতে থাকেন। মাঝে মাঝে মা-বাবার সঙ্গে দেখা করতে ভারতে যেতো রাওয়াল।
উল্লেখ্য, জুলাইয়ের শেষের দিকে স্কুল শিক্ষার্থী নির্মলা পান্তা নিখোঁজ হয়। পরদিন আঁখের ক্ষেত থেকে উদ্ধার হয় তার মৃতদেহ। নির্মলার শেষকৃত্য হয় ৩০ জুলাই। পরিবারের অভিযোগ,মৃতদেহ উদ্ধারের পরদিনই তার শেষকৃত্য করতে তাদেরকে বাধ্য করেছে পুলিশ,স্থানীয় সরকার ও জেলা প্রশাসন। নির্মলার পরনে যে কাপড় ছিল তাও পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। স্বজনদের অভিযোগ,অপরাধের এলাকা থেকে আলামত নষ্ট করতে পুলিশ ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে। এ ঘটনায় পুলিশি তদন্তের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ন্যায়বিচারের দাবিতে তুমুল বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভ করার সময় পুলিশের গুলিতে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে। নির্মলাকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা তদন্তে অবহেলা ও দোষীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরে ব্যর্থতার জন্য এসপি দিলিরাজ বিস্তা ও ইন্সপেক্টর জগদীশ ভাট্টাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। নির্মলাকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার দিন এসপি বিস্তা কাঞ্চনপুর জেলা পুলিশের প্রধান ছিলেন। আর ইন্সপেক্টর ভাট্টা মাহেন্দ্রনগর পুলিশ ইউনিটের নেতৃত্বে ছিলেন। ২৫ অক্টোবর নেপালি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়,তারা দুইজন অপেশাদারিত্ব ও দায়িত্বজ্ঞানহীনতা দেখিয়েছে, ন্যুনতম অপরাধ তদন্তের মানদণ্ড অনুসরণ করেনি এবং আলামত নষ্ট করেছে।