দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট

শাট ডাউনের অবসানে দুই প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটির সিদ্ধান্ত সিনেটে

মার্কিন সরকারের আংশিক অচলাবস্থার (শাট ডাউন) অবসান ঘটাতে সিনেটে ভোটাভুটির সিদ্ধান্ত হয়েছে। দুইটি প্রস্তাবে ভোট দেবেন সিনেটররা। এর একটি ট্রাম্পের, রিপাবলিকানরা যা সমর্থন করছেন। অপরটি ডেমোক্র্যাটদের। কিন্তু কার্যত দুইটি প্রস্তাবের কোনওটিরই চূড়ান্ত পর্যায়ে পাস হওয়ার সুযোগ নেই। সিনেটে রিপাবলিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও হাউজ অব রিপ্রেজেনটিটিভে সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে ডেমোক্র্যাটদের। মার্কিন সংবাদপত্র ওয়াশিংটন পোস্ট মনে করে, সিনেটের এই ভোটাভুটি শেষ পর্যন্ত এটাই প্রমাণ করবে যে সংশ্লিষ্ট প্রস্তাবগুলো নয়, বরং সমাধানের জন্য অন্য কিছুর কথা ভাবতে হবে।  ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’ ২৩ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মুদ্রিত সংখ্যার প্রধান শিরোনাম করেছে এ বিষয়ে, ‘সিনেট প্ল্যান্স ভোটস অন কম্পিটিং বিলস টু রিওপেন গভর্নমেন্ট।’Untitled

গত ২২ ডিসেম্বর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি অর্থ বরাদ্দ নিয়ে দেখা দিয়েছে আংশিক অচলাবস্থা। শাট ডাউন নামে পরিচিত এমন অবস্থার সূচনা তখন হয় যখন কংগ্রেসের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্টের দ্বিমত হয় এবং তা নিয়ে কোনও সমঝোতায় উপনীত হওয়া যায় না। অর্থ বরাদ্দের কোনও প্রস্তাব কার্যকর করাতে সংশ্লিষ্ট বিলকে দুই কক্ষের অনুমোদন ছাড়াও পেতে হয় প্রেসিডেন্টের সম্মতি। সর্বশেষ অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাবে সম্মতি দিতে অস্বীকার করেন ট্রাম্প। কারণ ওই প্রস্তাবে দেওয়ালের জন্য ৫৭০ কোটি ডলার বরাদ্দ দেওয়া হয়নি, যে বরাদ্দ তিনি চেয়েছিলেন। তার প্রত্যাশা পূরণ হবে না, যদি ডেমোক্র্যাটরা সমর্থ না দেয়। হাউস অব রিপ্রেজেন্টিটিভে রিপাবলিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। এদিকে অচলবস্থায় পার হয়ে গেছে একমাসেরও বেশি সময়।

সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ রিপাবলিকান সদস্যদের নেতা মিচ ম্যাককোনেল গত মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারি) শাট ডাউন ‘নিরসনে’ প্রণীত দুইটি প্রস্তাবে ভোটাভুটির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।  

শাট ডাউনের অবসানে ট্রাম্প ড্রিমারর নামে পরিচিত প্রায় ৭ লাখ অভিবাসী হতে ইচ্ছুক ব্যক্তিকে তিন বছরের জন্য ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। শৈশবে বাবা-মায়ের সঙ্গে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানো অভিবাসীদের কাজের অনুমতি দিতে ‘ড্রিমার’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল ওবামা প্রশাসন। এ কর্মসূচির দাফতরিক নাম ‘ডেফারড অ্যাকশন ফর চিলড্রেন অ্যারাইভাল’ (ডিএসিএ)। ড্রিমার ছাড়াও লাতিন আমেরিকা ও আফ্রিকা থেকে যাওয়া অভিবাসীদের সুরক্ষা দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে ট্রাম্পের প্রস্তাবে। কিন্তু ডেমোক্র্যাটরা আগেই ফিরিয়ে দিয়েছে ট্রাম্পের প্রস্তাব।

অন্যদিকে ডেমোক্র্যাটরা প্রস্তাব দিয়েছে, ট্রাম্পকে দেয়াল বানাতে ট্রাম্পের চাওয়া অর্থ বরাদ্দ না দিয়েই অচলাবস্থা নিরসনের। তার ইচ্ছে, আগামী ০৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর অর্থায়নের বিল পাস করানো। কিন্তু দেয়ালের অর্থ না পেয়েই তো ট্রাম্প অর্থ বিলে সম্মতি দিচ্ছেন না, যার কারণে দেখা দিয়েছে অচলবস্থার। ফলে তাদের প্রস্তাবও শেষ পর্যন্ত সিনেট, হাউস, প্রেসিডেন্টের অফিস পার হয়ে কার্যকর হয়ে উঠতে পারবে না বলে মনে করে ওয়াশিংটন পোস্ট। পত্রিকাটির ভাষ্য, এর মাধ্যমে আট লাখ মার্কিন ফেডারেল কর্মীর বেতন আটকে থাকা বা বেতন না পাওয়ার দায় তারা একে অপরের ঘাড়ে চাপাতে পারবেন শুধু।