দ্য হিন্দু

ভারতের রাজ্যসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী ও তিন তালাক বিল প্রত্যাখ্যান

ভারতের রাজ্যসভায় বিতর্কিত তিন তালাক ও নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস হয়নি। দুইটি বিলই এর আগে ভারতের পার্লামেন্টের নিম্ন কক্ষ লোকসভায় পাস হয়েছিল। তবে ভারতে কোনও বিলকে আইনে পরিণত করতে হলে পার্লামেন্টের দুই কক্ষেই তা পাস করানোর বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাজ্যসভায় পাস না হওয়ায় দু’টি বিলই বাতিলের খাতায় চলে গেল। বৃহস্পতিবার এ খবরটিকে প্রথম পাতার শিরোনাম করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু। 

দ্য হিন্দু প্রথম পাতা
বুধবার রাজ্যসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী ও তিন তালাক বিলসহ বেশ কয়েকটি বিল পাস করানোর চেষ্টা করে মোদি সরকার। তুমুল বিরোধিতার মধ্যে তা আর সম্ভব হয়নি। এমনকি রাষ্ট্রপতির বক্তৃতার উপরে ধন্যবাদ জানানোর প্রস্তাব ও অন্তর্বর্তী বাজেটও আলোচনা ছাড়াই পাস করাতে হয়। 

তিন তালাক নিষিদ্ধ করে ভারতের লোকসভায় বিল পাস হয়েছিল ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে। তাতে বলা হয়েছিল,তিন তালাক একটি জামিন অযোগ্য অপরাধ। কোনও মুসলিম ব্যক্তি স্ত্রীকে তিন তালাক দিলে তার তিন বছরের কারাদণ্ড ও জরিমানা হবে। সেসময় ওই বিল নিয়ে তীব্র আপত্তি তোলেন বিরোধীরা। ওই আইনের অপব্যবহার হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তারা। আর বিরোধীদের সমর্থন ছাড়া রাজ্যসভায় ওই বিল পাস করানো সম্ভব নয়। সে কথা মাথায় রেখে কেন্দ্রীয় সরকার ওই বিলে সংশোধনী আনে। সংশোধিত বিলে বলা হয়,বিচারক ইচ্ছা করলে তিন তালাকের মামলায় অভিযুক্তকে জামিন দিতে পারবেন। এক্ষেত্রে অভিযোগ করতে পারবেন কেবল সংশ্লিষ্ট নারী ও তার পরিবারের লোকজন। সংশোধিত বিলটিও লোকসভায় বিরোধিতার মুখে পড়ে। তবে বিরোধিতার মধ্যেই গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর লোকসভায় বিলটি পাস হয়। বুদবার তা উত্থাপন করা হয় রাজ্যসভায়। এখানে আর পাস করানো যায়নি বিলটি।

এ বছরের জানুয়ারিতে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস করে ভারতের লোকসভা। এ বিলে বাংলাদেশ,পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ভারতে গিয়ে বসবাসরত অমুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এর ফলে প্রতিবেশী মুসলিম দেশগুলোতে ধর্মীয় সহিংসতার শিকার হয়ে কোনও অমুসলিম ভারতে বসবাসের আবেদন করলে দেশটির নাগরিকত্ব পাওয়া যাবে। এই তালিকায় রয়েছে হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন,পার্সি, শিখ ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সদস্যরা। কংগ্রেসসহ কয়েকটি বিরোধী দলের বিরোধিতার মধ্যেই ভারতের লোকসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস হয়। শুধু কংগ্রেস বা বাম দলগুলো নয়,উত্তরপূর্ব ভারতে বিজেপির সঙ্গে জোটবদ্ধ কয়েকটি দলও এই বিলের বিরোধিতা করে। বিরোধীদের দাবি, এই বিলটি ১৯৮৫ সালের আসাম অ্যাকর্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ১৯৮৫ সালের আসাম অ্যাকর্ডে বলা হয়েছিল,১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের আগে থেকে যারা আসামে বাস করছে,তারাই শুধু নাগরিকত্ব পাবে। তবে লোকসভায় পাস হলেও বুধবার এ বিলটিও রাজ্যসভায় আটকে গেছে।