দ্য গার্ডিয়ান

এবার ব্রিটিশ কনজারভেটিভ পার্টিতে ভাঙন

যুক্তরাজ্যের বিরোধী দল লেবার পার্টির পর এবার ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টিতেও বাজল ভাঙনের সুর। দলটির তিন সংসদ সদস্য পার্টি থেকে অব্যহতি নিয়েছেন। যোগ দিয়েছেন লেবার পার্টি থেকে অব্যহতি নেওয়া সংসদ সদস্যদের তৈরি ‘ইন্ডিপেন্ডেন্ট’ গ্রুপে। নিজেদের কনজারভেটিভ পার্টি থেকে বের হয়ে আসার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট সংসদ সদস্যরা বলেছেন, দলের ভেতরে ব্রেক্সিটপন্থীদের যে দাপট তাতে দলটির সংস্কার প্রক্রিয়া মুখ থুবড়ে পড়েছে। আর এর প্রতিবাদেই দল ছেড়েছেন তারা। দেশটির সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান ২০১৯ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে মুদ্রিত সংখ্যা প্রধান শিরোনাম করেছে, ‘নাও দ্য টোরিস স্প্লিট: রিবেলস ডিনাউন্স গ্রিপ অব হার্ডলাইনার্স।’Untitled
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ব্রিটিশ বিরোধী দল লেবার পার্টির সাত জন সংসদ সদস্য পদত্যাগের কথা জানান। এরা হচ্ছেন, মাইক গ্যাপস, চুকা উমুনা, লুসিয়ানা বার্গার, গ্যাভিন শুকার, অ্যাঞ্জেলা স্মিথ, ক্রিস লেসলি ও অ্যান কফি। দলের বর্তমান নেতা জেরেমি করবিনের প্রতি অনাস্থা, ব্রেক্সিট বিষয়ে দলের আনুষ্ঠানিক অবস্থান এবং ইহুদিবিরোধিতার বিষয়ে মতানৈক্যের কারণে তাদের এই দলত্যাগের সিদ্ধান্ত। তারা স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাবেন। আপাতত ‘ইন্ডিপেন্ডেন্ট গ্রুপের’ সদস্য হিসেবে পরিচিত হতে চাইলেও সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছিলেন, ভবিষ্যতে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করা হতে পারে।
এদিকে ২০ ফেব্রুয়ারি কনজারভেটিভ পার্টির সংসদ সদস্য অ্যানা সৌবরি, সারাহ ওলাস্টন এবং হেইডি অ্যালেন পদত্যাগ করেছেন দল থেকে। তারা যোগ দেবেন ‘ইন্ডিপেন্ডেন্ট’ গ্রুপে। তাদের ভাষ্য, প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে কনজারভেটিভ পার্টিকে গোঁড়া ব্রেক্সিটপন্থীদের হাতে চলে যেতে দিয়েছেন। ফলে দলটির সংস্কার প্রক্রিয়া কার্যত ব্যর্থ হয়েছে। ডেভিড ক্যামেরনের প্রধানমন্ত্রীত্বকালে যে কনজারভেটিভ পার্টিকে তারা দেখেছিলেন, থেরেসা মের নেতৃত্বে কার্যত সেই কনজারভেটিভ পার্টির মৃত্যু হয়েছে।
এমপি সৌবরি মন্তব্য করেছেন, ‘আমি কনজারভেটিভ পার্টি থেকে চলে যাইনি। দলই আসলে আমাদের ছেড়ে চলে গেছে।’ আর কখনও দলে ফিরবেন কি না জানতে চাইলে এমপি হেইডি অ্যালেন মন্তব্য করেছেন, ‘আমরা যা করতে চাই তা ঠিকভাবে সম্পন্ন হলে ফিরে যাওয়ার জন্য আর কোনও কনজারভেটিভ পার্টিই অবশিষ্ট থাকবে না। আমরা এমন কিছু একটা গড়ে তুলতে চাই, যা ব্রিটিশ রাজনীতির মধ্যপন্থী ধারাকে ধারণ করবে।’
গার্ডিয়ান লিখেছে এর মধ্য দিয়ে থেরেসা মে সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠল। সরকার চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতার ক্ষেত্রে এখন কনজারভেটিভ পার্টির মাত্র আট জন সংসদ সদ্য বেশি রয়েছে। আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে, পদত্যাগী সংসদ সদস্যদেরকে কনজারভেটিভ পার্টির প্রায় এক তৃতীয়াংশ সদস্যই জানিয়েছেন, তারাও অসন্তুষ্ট। অর্থাৎ ক্ষমতাসীন দলের ১০০ জনের মতো এমপি পদত্যাগীদের সদস্যদের সঙ্গে একমত পোষণ করেন। সরকারের সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ডোমিনিক গ্রিভ মন্তব্য করেছেন, ‘যে সরকারকে আমি সমর্থন করে চলেছি তা কোনও চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। এখন আমি কী করব? সরকারের প্রতি সমর্থন বজায় রাখা আমার পক্ষে সম্ভব হবে না। আমাকে দল থেকে সরে যেতে হবে।’