দ্য গার্ডিয়ান

থেরেসা মেকে তিন মাসের মধ্যে নেতৃত্ব ছাড়তে বলবেন মন্ত্রীরা

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মেকে তার নিজের মন্ত্রীসভার মন্ত্রীরা আর নেতৃত্ব দেখতে চান না। তাদের প্রত্যাশা থেরেসা মে তিন মাসের মধ্যে ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন নিয়ে যতটুকু পারা যায়, ততটুকু সম্পন্ন করে সরে দাঁড়াবেন। ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের হাল ধরবেন কনজারভেটিভ পার্টির নতুন কোনও নেতা। মে যদি তা না করেন, তাহলে আবার সংসদে আস্থা ভোটের আয়োজন করা হবে এবং এর মাধ্যমে বিদায় নিতে হবে তাকে। তিন মাসের মধ্যে বিদায় না নিলে প্রকাশ্যে তার বিরুদ্ধে মুখ খোলা শুরু করতে পারেন দলটির অনেক নেতৃস্থানীয় রাজনীতিবিদ। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান ২০১৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি মুদ্রিত সংখ্যার প্রধান শিরোনাম করেছে এ বিষয়ে, ‘মিনিস্টার্স মেসেজ টু মে: কুইট ইন নেক্সট থ্রি মান্থস।’Untitled-1

ব্রেক্সিট নিয়ে থেরেসা মে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যে চুক্তি করেছিলেন তা দেশটির সংসদে বিপুল ভোটে হেরেছে। খোদ কনজারভেটিভ পার্টির সদস্যরাই এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন। মূল আপত্তির বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড নিয়ে কোনও সন্তোষজনক সমাধানে পৌঁছাতে না পারার বিষয়টি। নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে ইইউভুক্ত দেশ আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে নিয়মিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা কার্যকর করতে চায় না কোনও পক্ষই। আবার তা না করলে নার্দান আয়ারল্যান্ডে কার্যকর হয়ে থাকবে ইইউ শুল্ক ব্যবস্থা।

সেক্ষেত্রে কার্যত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা লাগবে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড ও ব্রিটেনের মূলভূমির মধ্যে। সেটাও কোনওভাবে গ্রহণযোগ্য নয় কনজারভেটিভ পার্টির বেশিরভাগ সংসদ সদস্যের কাছে। পথ খোলা থাকছে, নো-ডিল ব্রেক্সিটের। যার অর্থ হচ্ছে চুক্তি চূড়ান্ত না করেই ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়া। সেক্ষেত্রে ব্রেক্সিট পরবর্তী সময়ে ইইউয়ের সঙ্গে সম্পর্ক অনির্ধারিত থেকে যাবে। এদিকে যুক্তরাজ্যের ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার দিন আগামী ২৯ মার্চ। কিন্তু চুক্তি এখনও চূড়ান্ত করতে পারেননি থেরেসা মে।

তার খসড়া প্রস্তাব যেমন সংসদ সদস্যদের ভোটে পরাজিত হয়েছে, তেমনি তার বিরুদ্ধে আনা হয়েছিল অনাস্থা প্রস্তাব। নিজের দলের সংসদ সদস্যদের বিরোধিতা এমন পর্যায়ে উঠেছিল তার নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছিলেন ১১৭ জন টোরি সংসদ সদস্য। এদিকে গত ২০ ফেব্রুয়ারি মের নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে কনজারভেটিভ পার্টির সংসদ সদস্য অ্যানা সৌবরি, সারাহ ওলাস্টন এবং হেইডি অ্যালেন দল থেকেই পদত্যাগ করেছেন।

এমন পরিস্থিতিতে কনজারভেটিভ পার্টি শীর্ষস্থানীয় মন্ত্রীরা চান, তিন মাসের মধ্যে থেরেসা মে যেন নেতৃত্ব থেকে সরে যান। তা না হলে এ বছরের শেষ নাগাদ আবার অনাস্থা ভোটের আয়োজন করে তাকে সরিয়ে দেওয়া হবে। তাদের তিন মাসের সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার বিষয়ে গার্ডিয়ান সামনে এনেছে মে মাসে অনুষ্ঠিতব্য স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রসঙ্গ। ২৯ মার্চের মধ্যে থেরেসা মে যদি সত্যি গ্রহণযোগ্য কোনও চুক্তি সংসদে পাস করিয়ে নিতে পারেন, তাহলে অন্তত ওই নির্বাচনে মুখ রক্ষা করে বিদায় নিতে পারবেন তিনি। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা মনে করছেন, ওই নির্বাচনের পর ব্রিটিশ কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্ব যাওয়া উচিত নতুন কোনও নেতার হাতে, যিনি ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের পরবর্তী পদক্ষেপগুলো নিয়ে কাজ করবেন।