দ্য হিন্দুস্তান টাইমস

বাবরি মসজিদ সংকট: মধ্যস্থতাকারীদের সুযোগ দিলো ভারতের আদালত

মধ্যস্থতার মাধ্যমে ভারতের অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ সংকট সমাধানে তিন সদস্যের কমিটি নির্ধারণ করে দিয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। এই কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন সাবেক একজন বিচারপতি। আদালত মনে করে, মধ্যস্থতাকারীদের নেতৃত্বে বন্ধুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়ায় উভয়পক্ষের মধ্যে গ্রহণযোগ্য একটি সমাধানে পৌঁছানো যাবে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস ২০০৯ সালের ০৯ মার্চ মুদ্রিত সংখ্যার প্রধান শিরোনাম করেছে এ বিষয়ে, ‘সুপ্রিম কোর্ট গিভস মেডিয়েশন অ্যা চান্স ইন অযোধ্যা কেস।’1552157372

উত্তর প্রদেশের ফৈজাবাদে বাবরি মসজিদের অবস্থান। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের একাংশের দাবি, যেখানে মসজিদ গড়ে তোলা হয়েছে সেখানে ছিল রামের জন্মভূমি। সেটি ভেঙে বাবরি মসজিদ বানানো হয়েছে। এ নিয়ে হিন্দু-মুসলিম বিরোধ বহু দিনের। ১৯৯২ সালে বিজেপি সরকার ক্ষমতাসীন থাকার সময়ে বাবরি মসজিদে হামলা হয়। ভাঙচুর করা হয় স্থাপনাটির। একে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় প্রাণ হারায় অন্তত দুই হাজার মানুষ। ভারতের প্রাচীন শহর অযোধ্যার ওই বিতর্কিত স্থানটি কোনও সম্প্রদায়ের দখলে থাকবে, তা নিয়ে মামলা চলছে ৬০ বছর ধরে।
গত শুক্রবার (৮ মার্চ) ভারতের প্রধান রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের একটি পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে বাবরি মসজিদ সংকট সমাধানে ঘোষণা করে, কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি এফএমআই কলিফুল্লাহ। তার সঙ্গে কমিটিতে আরও থাকবেন হিন্দু ধর্মীয় গুরু রবি শংকর এবং বর্ষীয়ান আইনজীবী শ্রী রাম পাঞ্চু।
আদালত মধ্যস্থতাকারী কমিটিকে চার সপ্তাহের মধ্যে প্রথম প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছে। মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে সমস্যাটির সমাধানের যে আদেশ দেওয়া হচ্ছে তা বাবরি মসজিদের বিষয় চলমান আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যেই শেষ করতে হবে। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি দেওয়া রায় আদালতে একই কথা বলেছিল। সেই অনুযায়ী পরবর্তী শুনানি হওয়ার কথা আট সপ্তাহ পরে। এর মধ্যে যদি মধ্যস্থতাকারীদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে হয় তাহলে তা এমন একসময় প্রকাশিত হবে যখন ভারতের রাজনীতি অত্যন্ত স্পর্শকাতর অবস্থায় থাকবে। কারণ সেসময়টি নির্বাচনের। ভারতে আগামী লোকসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এপ্রিল থেকে মে মাসের মধ্যে।
রঞ্জন গগৈ ছাড়াও সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের সদস্য ছিলেন বিচারপতি এসএ বোবড়ে, বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি অশোক ভূষণ এবং বিচারপতি এসএ নাজির। বেঞ্চের ভাষ্য, ‘এ বিষয়ে যে বিরোধের উত্থান হয়েছে, তার প্রকৃতি আমরা বিবেচনা করেছি, বিবাদমান পক্ষগুলোর মধ্যে সমঝোতার অভাবকে মাথায় রেখে আমরা মনে করি, মধ্যস্থতার মাধ্যমে সমস্যাটির সমাধান করা যেতে পারে।’