দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

প্রচারণায় উস্কানি ছড়ানোয় ৪ নেতার শাস্তি

সুপ্রিম কোর্টের উদ্যোগের পর নির্বাচনি প্রচারণায় উস্কানি ছড়ানোর অভিযোগে চার রাজনৈতিক নেতার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে ভারতের নির্বাচন কমিশন। কমিশনের বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে নির্বাচনি প্রচারণায় তাদের সাময়িক নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এদের মধ্যে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, বহুজন সমাজ পার্টির প্রধান ও সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতীকে তিন দিন (৭২ ঘণ্টা) এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মানেকা গান্ধী এবং সমাজবাদী পার্টি নেতা আজম খানকে দুই দিন (৪৮ ঘণ্টা) নির্বাচনি প্রচারণায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে এই সময় গণণা শুরু হয়েছে। দ্বিতীয়বারের মতো কমিশনের এই বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগের খবরকে মঙ্গলবারের প্রধান শিরোনাম করেছে দেশটির প্রভাবশালী দৈনিক দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

মঙ্গলবারের দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সোমবার নির্বাচনি প্রচারণায় সাম্প্রদায়িক বক্তব্যের ব্যবহার ও ভোট প্রার্থনায় ধর্মীয় অনুভূতির ব্যবহার সংক্রান্ত এক রিটের শুনানির সময় ভারতের সুপ্রিম কোর্টে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোআ হয়। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-এর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ কমিশনের সদস্য অমিত শর্মার কাছে জানতে চান এ ধরণের অভিযোগের বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সাড়ে দশটার মধ্যে প্রতিনিধি পাঠিয়ে এবিষয়ে জানানোর আদেশ দেয় আদালত। অন্যথায় পরে বিষয়টি পরীক্ষা করা হবে বলে জানানো হয়। আদালতের এই অবস্থানের ঘোষণার পরই চার নেতার বিরুদ্ধে শাস্তি ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।

এনিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে নির্বাচনি প্রচারণায় কোনও রাজনৈতিক নেতাকে সাময়িক নিষিদ্ধ করলো ভারতের নির্বাচন কমিশন। ২০১৪ সালে এখনকার বিজেপি প্রধান অমিত শাহ ও সমাজবাদী পার্টির নেতা আজম খানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছিল কমিশন। সেবার উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়েও নির্বাচন কমিশনের নোটিশ অগ্রাহ্য করেছিলেন এই দুই নেতা।

এবারে প্রচারণায় উস্কানির অভিযোগ পাওয়ার পর আদিত্যনাথ, মায়াবতী ও মানেকা গান্ধীকে তাদের বক্তব্যের স্বপক্ষে ব্যাখ্যা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হলেও আজম খানের বিরুদ্ধে সরাসরি শাস্তি ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের তরফে বলা হয়েছে, আজম তার প্রচারণার পদ্ধতি বদলাননি।নির্বাচন কমিশনের শাস্তির মুখে পড়া ভারতের চার রাজনৈতিক নেতা

গত ৭ এপ্রিল শরনপুর ও বারেইলি জেলায় বহুজন সমাজ পার্টি ও সমাজবাদী পার্টির এক যৌথ মিছিলে করা বক্তব্যের কারণে শাস্তি পেয়েছেন মায়াবতী। সরাসরি মুসলিম ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করেছিলেন তিনি। আর আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ৯ এপ্রিল মেরাটে করা বক্তব্যের কারণে। ওই বক্তব্যে তিনি ‘আলি এবং বজরংবলি’ উদ্ধৃত করেছিলেন এছাড়া মুসলমানদের ইঙ্গিত করে তিনি ‘গ্রিন ভাইরাস’ বলেছিলেন।

১১ এপ্রিল সুলতানপুরে এক সভায় মানেকা গান্ধী বলেছিলেন, মুসলমানরা ভোট না দিলে তিনি তাদের সাহায্য করতে ইচ্ছুক নন। এই বক্তব্যের কারণে শাস্তি পেয়েছেন তিনি। আর আজম খানের বিরুদ্ধে শাস্তি ঘোষণা করা হয়েছে ১৪ এপ্রিল বিজেপি’র রামপুরের প্রার্থী জয়া প্রদার বিরুদ্ধে ‘অশোভন ও আপত্তিকর’ বক্তব্য রাখার কারণে।

শাস্তি পাওয়া চার নেতা নিষিদ্ধ থাকার সময়ে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কোনও জনসভা, মিছিল, শোডাউন, সাক্ষাৎকার, সংবাদমাধ্যমে বক্তব্য রাখতে পারবেন না।