সৌদি আরব যখনই মুক্ত মত প্রকাশের ওপর হস্তক্ষেপ করে কিংবা ভিন্নমত পোষণকারীদের ওপর ধরপাকড় চালায় তখন ছোটখাটো নিন্দা জানানোর মধ্য দিয়ে নিজেদের দায়িত্ব শেষ করে যুক্তরাষ্ট্র। বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু প্রয়োজন মেটায় সৌদি আরব। গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ ও ইরানের সঙ্গে তিক্ততার কারণে সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কাছের বন্ধু রাষ্ট্র। অবশ্য অনেক বছর ধরে সৌদি আরবের তেলের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নির্ভরযোগ্যতা থাকলেও বর্তমানে দেশটির নিজস্ব উৎপাদন সক্ষমতা গড়ে ওঠায় তা ধীরে ধীরে কমে এসেছে।
তবে মাঝে মাঝে যে সৌদি আরবের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক দোলাচলে পড়েনি তা নয়। ২০১১ সালে আরব বসন্তের সময় মিশরের হোসনি মোবারককে সমর্থন না দেওয়ায় সৌদি সরকারের নিন্দার মুখে পড়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। এছাড়া ইরানের সঙ্গে ছয় শক্তিধর দেশের পারমাণবিক চুক্তি প্রশ্নেও বিবাদ তৈরি হয়। তবে জুলাইয়ে পারমাণবিক চুক্তিটি সম্পন্ন হওয়ার পর সৌদি আরবকে ইরান চুক্তি মেনে চলবে বলে আশ্বস্ত করে ওবামা প্রশাসন। এছাড়া ক্যাম্পডেভিডে অনুষ্ঠিত একটি বৈঠকে সৌদি আরবকে ডাকা হয়। তাতে বোঝানোর চেষ্টা করা হয় যে, আরব মিত্রদের যুক্তরাষ্ট্র অবজ্ঞা করছে না। তবে ইয়েমেনে সৌদি জোটের বিমান হামলাকে ভালো চোখে নেয়নি যুক্তরাষ্ট্র।
সিরিয়া প্রশ্নেও সৌদি আরবকে বোঝাতে সক্ষম হতে পারছে না যুক্তরাষ্ট্র। সৌদি আরবের দাবি, বাশার আল আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার প্রশ্ন দূরে রেখেই আলোচনা করতে চাইবে ইরান। আর সেক্ষেত্রে কোনও চুক্তি সম্ভব নয়।
আর এবার, শিয়া নেতা নিমরকে শিরশ্ছেদের পর আবারও সৌদি আরব প্রশ্নে দোলাচলে পড়তে হল যুক্তরাষ্ট্রকে। সোমবার হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র স্বীকার করেন, নিমরকে শিরশ্ছেদ করার প্রশ্নে সৌদি আরবকে আগে থেকেই সতর্ক করা হয়েছিল এবং তাতে কোনও লাভ হয়নি।
উল্লেখ্য, সৌদি আরবে ২০১৫ সালে মোট ১৫৭ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। দুই দশকের মধ্যে এটিই দেশটিতে এক বছরে সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনা। মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, এদের মধ্যে প্রথম ১০০ জনের ৫৬ জনকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে মাদক সংক্রান্ত বিভিন্ন মামলায়।
/এফইউ/