চায়না ডেইলি

শক্তি প্রদর্শনে কোরিয়া সীমান্তে মার্কিন বোমারু বিমান উড্ডয়ন

সামরিক শক্তি প্রদর্শন করতে উত্তর কোরিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়া সীমান্তে বোমারু বিমান উড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। উত্তর কোরিয়ার হাইড্রোজেন বোমা পরীক্ষার প্রতিক্রিয়াতেই এই শক্তি প্রদর্শন করা হয়। সোমবার চীনের গুরুত্বপূর্ণ দৈনিক পত্রিকা চায়না ডেইলির প্রথম পাতায় খবরটি গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করা হয়েছে।

খবরে বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়ার হাইড্রোজেন বোমা পরীক্ষার পর দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে এর নিন্দা জানিয়ে প্রতিবেদন প্রচার করা হয়। উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমও প্রায় একই ধরনের প্রতিবেদন প্রচার করে তার জবাব দেয়।

রবিবার গুয়ামের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যান্ডারসন বিমান ঘাঁটি থেকে বি-৫২ বোমারু বিমানটি উড্ডয়ন করে। স্থানীয় সময় দুপুরের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার গিয়েনেজি প্রদেশের আকাশসীমায় পৌছায়। এই শক্তিশালী বিমানের সঙ্গে দুটি দক্ষিণ কোরিয়ার এফ-১৫ কে ও দুটি যুক্তরাষ্ট্রের এফ ১৬ দক্ষিণ কোরিয়ার আকাশ পরিভ্রমণ করছে।

noname

লেফটেন্যান্ট জেনারেল ট্যারেন্স ও’শানেসি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’ তিনি আরও জানান, উত্তর কোরিয়ার হাইড্রোজেন বোমা পরীক্ষার জবাব হিসেবেই বি-৫২ বিমান মহড়া চালানো হয়েছে।

এদিকে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন দাবি করেন, হাইড্রোজেন বোমা পরীক্ষাটি উত্তর কোরিয়ার প্রতিরক্ষার জন্য করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে তিনি আরও বলেন, ‘যে কোন সার্বভৌম রাষ্ট্রের এ ধরনের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার রয়েছে।এ বিষয়ে কেউ সমালোচনা করতে পারে না।’ 

কোনও সূত্রের উল্লেখ না করে চায়না ডেইলি জানায়, উত্তর কোরিয়ার হাইড্রোজেন বোমা পরীক্ষার ঘোষণার পরে যুক্তরাষ্ট্র আগামী মাসে পরমাণু শক্তি সমৃদ্ধ একটি বিমানবাহী যুদ্ধ জাহাজ কোরীয় উপদ্বীপে পাঠানোর চিন্তা ভাবনা করছে। ইউএসএস রোনাল্ড রিগ্যান নামের ওই যুদ্ধ জাহাজ বর্তমানে জাপানে অবস্থান করছে। এ জাহাজে যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক বোমা বহনকারী সাবমেরিন ও এফ-২২ যুদ্ধ বিমান রয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র বাহিনীর ডেপুটি কমান্ডার ও ইউএস সেভেন্থ এয়ারফোর্স কমান্ডার লেফট্যানেন্ট জেনারেল টোরেন্স জানান, দক্ষিণ কোরিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির পার্টি স্কুলের কোরিয়ান স্টাডিজ বিভাগের বিশেষজ্ঞ জ্যাং লিয়ানগুই জানান, যুক্তরাষ্ট্রের বি-৫২ বোমারু বিমান উড্ডয়ন উত্তর কোরিয়াকে উত্যক্ত করার প্ররোচনার প্রমাণ।

উত্তর কোরিয়ার সিনমুন পত্রিকার সম্পাদকীয়তে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি শান্তিচুক্তি করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

বি-৫২ বিমান পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপে সক্ষম। দক্ষিণ কোরিয়ায় অবতরণ করলে উত্তর কোরিয়া এটিকে ‍হুমকি হিসেবে বিবেচনা করতে পারে। এর আগে ২০১৩ সালে তৃতীয় বারের মতো পারমাণবিক বোমা পরীক্ষা করার সময়েও যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়ায় শক্তিশালী বিমান বহর পাঠিয়ে ছিল।

প্রসঙ্গত, ১৯৫৩ সাল থেকেই দুই কোরিয়া পরস্পরের প্রতি যুদ্ধংদেহী মনোভাব অব্যাহত রেখেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে মিত্রতার সুবাদে বোমারু বিমান মহড়া করে সমর্থণ জানাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

/এএ/