নিউ ইয়র্ক টাইমস

নিখোঁজ সিআইএ এজেন্টের ক্লু উদঘাটন

সিআইএ এজেন্ট রবার্ট এ. লেভিনসন। ২০০৭ সালে নিখোঁজ হন তিনি। সর্বশেষ পাঁচ বছর আগে অপহরণের একটি ছবি ও ভিডিওতে কমলা রঙের জাম্পশ্যুট পরা অবস্থায় তাকে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু এরপর আর তার কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। ইরানের নেতৃত্ব দাবি করে আসছিল, নিখোঁজ মার্কিন নাগরিক সম্পর্কে তাদের কাছে কোনও তথ্য নেই।পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারাও বলছিলেন, সিআইএ এজেন্ট হয়তো ইরানে নেই, হয়তো তিনি বেঁচেও নেই। তবে সম্প্রতি জানা গেছে, ইরানের কর্মকর্তারা লেভিনসনের ব্যাপারে বিস্তারিত জানতেন।
গত সপ্তাহে ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বন্দি বিনিময়ের সময় সিআইএ এজেন্ট রবার্ট এ. লেভিনসনের ইরানে নিখোঁজ হওয়ার রহস্য নিয়ে কিছু বলা হয়নি। তবে সম্প্রতি প্রকাশিত কয়েকটি নথি ঘেঁটে দেখা গেছে, ইরানের কর্মকর্তারা লেভিনসনের ব্যাপারে বিস্তারিত জানতেন।
নথিতে দেখা যায়, এরআগে ২০১১ সালে ইরানের একজন শীর্ষ কূটনীতিক স্বীকার করেছিলেন, তেহরান ওই মার্কিন নাগরিককে আটক করেছে। যদি যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ওপর নেতিবাচক পর্যালোচনা দেওয়ার কাজটি স্থগিত করে, তাহলে সিআইএ এজেন্টকে মুক্তি দেবে তেহরান।
নথি পর্যালোচনা করে দেখা যায়,ওই সময় ফ্রান্সে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত সিয়েদ মেহদি মিরাবউতালেবি প্যারিসে তার নিজ বাসভবনে এক বক্তব্য দিয়েছিলেন। সে সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন দ্য ফেলোশিপ ফাউন্ডেশন নামে যুক্তরাষ্ট্রের একটি ধর্মীয় সংগঠনে কাজ করা দুই ব্যক্তি। এ বৈঠকের ফলাফল জানিয়ে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনির কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন ওই ধর্মীয় সংগঠনটির এক নেতা। এ সংগঠনটি আগেও তেহরানে বন্দি মার্কিন নাগরিকের মুক্তি ব্যাপারে কাজ করেছিল।
নথিতে দেখা যায়, ২০১১ সালের অক্টোবরে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের হাতে একটি প্রতিবেদন আসে। ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, রাষ্ট্রদূত (ইরান) স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন লেভিনসন তাদের হাতে বন্দি রয়েছেন এবং ইরান শর্তহীনভাবে তাকে মুক্তি দিতে চায়। তবে ইরান চায় মার্কিন সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষকে তারা যে বার্তা দিতে চায় তা ঠিকঠাক পৌঁছার প্রতীকী নিশ্চয়তা।
শুক্রবার এক সাক্ষাৎকারে লেভিনসনের স্ত্রী ক্রিস্টিন জানান, প্যারিসের মিটিং বিষয়ে তাকে কখনও জানানো হয়নি। তার স্বামীকে মুক্ত করতে সরকারি কর্মকর্তারা কেন এসব তথ্যকে কাজে লাগায়নি তা তিনি ভেবে পাচ্ছেন না। তিনি বলেন, ‘যদি এটা (রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ফেলোশিপের বৈঠক) ২০১১ সালে ঘটে থাকে তাহলে আজও কেন বব দেশে ফিরে এলো না?’

এ বিষয়ে মন্তব্য জানার জন্য ইরানের রাষ্ট্রদূত মিরাবউতালেবির সঙ্গে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে নিউ ইয়র্কে ইরান সরকারের এক মুখপাত্র একটি বিবৃতি দিয়েছেন। তাতে ওবামা প্রশাসনের বক্তব্যই প্রতিধ্বনিত হয়েছে।

/এএ/বিএ/