দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস

অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে ওবামার নির্বাহী আদেশ কি কেবলই কথার কথা?

আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণে কংগ্রেসকে পাশ কাটিয়ে নির্বাহী আদেশ প্রদানের সিদ্ধান্তে রিপাবলিকান আর অস্ত্র ব্যবসায়ীদের তোপের মুখে পড়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। এরজন্য কম ঝামেলা সহ্য করতে হয়নি তাকে। তবে যে আদেশ তিনি দিয়েছেন, তা বাস্তবে প্রয়োগের তেমন নজির পাওয়া যাচ্ছে না। সবমিলে প্রশ্ন উঠেছে, এই আদেশ কি তবে কেবলই কথার কথা? অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে ধীর গতির এই পরিস্থিতি নিয়েই প্রধান শিরোনাম করেছে শীর্ষস্থানীয় মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস।


প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের নির্বাহী আদেশ পাশ হওয়ার একমাস পেরিয়ে গেলেও তা বাস্তবায়নে খুব একটা অগ্রগতি নেই। এ পর্যন্ত যেটুকু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তার মধ্যে, একটি ওয়েবসাইট আপডেট করা হয়েছে এবং ১০ হাজার লিফলেট অস্ত্র দোকানগুলোতে বিতরণ করেছেন।
ওবামা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে তদন্ত বৃদ্ধি, গ্রেফতার অথবা আইন অমান্য করে অস্ত্র বিক্রেতাদের বিচারের আওতায় আনার জন্য তাদের কোনও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই। অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন কার্যকর করতে কোনও টাস্কফোর্সও গঠন করা হয়নি। এমনকি এক্ষেত্রে কোনও নির্দিষ্ট এজেন্ট ও প্রসিকিউটরকে দায়িত্বও দেওয়া হয়নি। অস্ত্র বিক্রি তদন্তে ওয়াশিংটন ও দেশের ৯৩টি অ্যাটর্নি কার্যালয়ের জন্য কোনও অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।
ন্যাশনাল রাইফেল অ্যাসোসিয়েশন ওবামার পদক্ষেপে উদ্বিগ্ন নয়। ন্যাশনাল শ্যুটিং স্পোর্টস ফাউন্ডেশনের মুখপাত্র মাইক বাজিনেট জানান, যা দেখা যাচ্ছে তাতে অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি।
প্রশাসনের কর্মকর্তারা মনে করেন, অপরাধীদের অস্ত্রের সহজলভ্যতা প্রতিরোধে হোয়াইট হাউসের পরিকল্পনার বিসয়ে কংগ্রেস এ আইনী পদক্ষেপ নিতে চাচ্ছে না।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি এরিক স্কুল্টজ জানান, প্রেসিডেন্ট যা ঘোষণা দিয়েছিলেন, তা ছিলো প্রচলিত আইনের মধ্যে সর্বোচ্চ যা করা সম্ভব।
বিরোধিতা থাকলেও অনেক বিশেষজ্ঞ এখনও মনে করেন, ওবামার পরিকল্পনা যদি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা হয় তাহলে তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
যুক্তরাষ্ট্রে একের পর এক বন্দুক হামলার প্রেক্ষাপটে দেশটিতে বেশ কয়েকবার আগ্নেয়ান্ত্রের আইন কঠোর করার চেষ্টা করেও সফল হওয়া যায়নি। ২০১৩ সালে কানেকটিকাটে বন্দুকধারীর হামলায় ২০ শিশুসহ ২৬ জন নিহত হওয়ার পর অস্ত্র ক্রেতাদের তথ্য যাচাইসহ বিভিন্ন বাধ্যবাধকতার বিধান রেখে একটি যৌথ বিল পাসে ব্যর্থ হয় ডেমোক্র্যাট-রিপাবলিকানরা। বিলটি পাসের জন্য প্রয়োজনীয় ৬০ ভোটও পাওয়া যায়নি তখন।
১ জানুয়ারি বছরের প্রথম সাপ্তাহিক ভাষণে প্রস্তাবিত বন্দুকনীতির জন্য কংগ্রেসের সমর্থন না পাওয়াকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের সবচেয়ে বড় হতাশা বলেও উল্লেখ করেছিলেন তিনি।
এরপর ৫ জানুয়ারি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক সহিংসতা ঠেকাতে কংগ্রেস ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ করে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণে নির্বাহী ক্ষমতাবলে একতরফা ব্যবস্থা নেওয়ার এ ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।  
/এএ/বিএ/