গুজরাটে লস্কর ই তৈয়বার কার্যক্রম নিয়ে সরকারি কৌঁসুলি উজ্জ্বল নিকমের করা এক প্রশ্নের জবাবে হেডলি জানান, লস্কর ই তৈয়বার নেতা জাকিউর রহমান লাখভি তাকে ভারতে একটি অপারেশনের কথা জানিয়েছিলেন, যেখানে এক নারী আত্মঘাতী জঙ্গি পুলিশের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে মারা যায়। সে সময় সম্ভাব্য তিনজনের নাম উল্লেখ করে নিকম। এরপর হেডলি জানান, ওই জঙ্গির নাম ইশরাত জহান!
এ সেই ইশরাত জাহান, যাকে সাজানো বন্দুকযুদ্ধে মারার অভিযোগ ওঠেছিল গুজরাট পুলিশের বিরুদ্ধে। মোদির নেতৃত্বাধীন সেসময়কার গুজরাট সরকারের বিরুদ্ধেও উঠেছিলো সমালোচনার ঝড়। তবে বৃহস্পতিবার মুম্বাইয়ের আদালতে হেডলির এই দাবি দিল্লির রাজনৈতিক অঙ্গনে ঝড় তুলেছে। হেডলির চাঞ্চল্যকর দাবি বিজেপির হাতে নয়া অস্ত্র তুলে দিয়েছে। এই ইস্যুতে কংগ্রেসের ক্ষমাপ্রার্থনা দাবি করেছে বিজেপি। তাদের দাবি, ইশরাতের মৃত্যুকে হাতিয়ার করে মোদির বিরুদ্ধে সে সময় প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতি করেছে কংগ্রেস।
এর আগে,দ্বিতীয় দিনের সাক্ষ্যে পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এর সঙ্গে লস্কর ই তৈয়বাসহ অন্য সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর ঘনিষ্ঠ সমন্বয় রয়েছে বলে দাবি করেন হেডলি। তার দাবি, লস্কর ই তৈয়বাকে আর্থিক, সামরিক ও নৈতিক সমর্থনগত সহায়তা দিয়ে থাকে আইএসআই। হেডলি জানান, আইএসআই কেবল লস্কর ই তৈয়বাকেই যে এরকম সহায়তা দিয়ে থাকে তা নয়, হিজবুল মুজাহিদীন, জয়েশ ই মোহাম্মদের মতো সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোও আইএসআই-এর সমর্থন পায়। আর এ জয়েশ ই মোহাম্মদ নামের সংগঠনটিই গত মাসে পাঠানকোটের বিমান ঘাঁটিতে হামলার দায় স্বীকার করেছে।
হেডলি জানান, লস্কর ই তৈয়বাসহ অন্য সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো ইউনাইটেড জিহাদ কাউন্সিলের আওতায় একসঙ্গে কাজ করে থাকে।
২০০৯ সালে শিকাগো বিমানবন্দর থেকে হেডলিকে গ্রেফতার করে মার্কিন প্রশাসন। বিচার পর্বের শেষে ২০১৩ সালে মুম্বাই হামলাসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগে হেডলিকে ৩৫ বছর কারাদণ্ডের আদেশ দেয় মার্কিন আদালত। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে কারাভোগ করছেন তিনি। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তার এ সাক্ষ্য প্রদানের বিষয়ে সরকারি কৌঁসুলি জানান, ভারতের বিচার ব্যবস্থার ইতিহাসে এই প্রথম কোনও ‘বিদেশি জঙ্গি’ ভারতের আদালতে সাক্ষ্য দিচ্ছেন।
/এফইউ/