মেট্রো

কাঁটাতার ও বুলডোজারের সঙ্গে হতাশাগ্রস্ত অভিবাসীদের যুদ্ধ

ইউরোপে ক্রমবর্ধমান অভিবাসী সংকট সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে সোমবার ফ্রান্স ও গ্রিসে ঘটে সহিংস ঘটনা। ফ্রান্সের ক্যালে বন্দরে অভিবাসীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। ক্যালে বন্দরে ‘দ্য জাঙ্গল’ নামে পরিচিত অভিবাসীদের অস্থায়ী শিবির পুলিশ উচ্ছেদ করতে গেলে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। শরণার্থীদের স্রোত ঠেকাতে মেসিডোনিয়ার তৈরি করা একটি বেষ্টনী ভেঙে ফেলেন শরণার্থীরা। এতে করে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন শরণার্থীরা।

noname

ফ্রান্সের কর্তৃপক্ষ এই শিবিরগুলো ধ্বংস করার চেষ্টা করেন। এতে অভিবাসীরা চড়াও হন। অন্যদিকে ফরাসি দাঙ্গা পুলিশও তাদের দিকে কাঁদানে গ্যাস ছুড়লে সৃষ্টি হয় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি। ওই শিবিরের বাইরে এখন তুলনামূলক শান্ত অবস্থা বিরাজ করছে।ফরাসি কর্তৃপক্ষ চাইছে, অভিবাসীদের সেখান থেকে সরিয়ে কিছু অভিবাসন কেন্দ্রে স্থানান্তর করতে।

শরণার্থীদের সঙ্গে এমন আচরণের বিষয়ে ফ্রান্সকে সতর্ক করে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার প্রধান লেনার্দ ডয়েল। তিনি বলেছেন, ‘জাতিসংঘের চুক্তি অনুযায়ী বিভিন্ন বাধ্যবাধকতা রয়েছে, মানবিক দায়বদ্ধতাও রয়েছে।

লেনার্দ ডয়েল বলেন ‘আফগানিস্তান, সিরিয়া ও ইরাক থেকে আসা এসব শরণার্থীদের দেখাশোনা করা আমাদের কর্তব্য। তাদের ওপর জলকামান ছোড়ার বদলে তাদের সাহায্য করা উচিত’।শরণার্থীদের সঙ্গে বিরূপ আচরণ ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভূমিকাকেও প্রশ্নের মুখে ফেলবে বলে উল্লেখ করেন অভিবাসন সংস্থার প্রধান।

ক্যালে বন্দরের সংঘর্ষের ঘটনায় অনেক শরণার্থীই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে শহরের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে গেছেন। কর্তৃপক্ষ বলছে, ওই শরণার্থীদের তারা ভিন্ন একটি স্থানে কিছু রূপান্তরিত শিপিং কন্টেইনারে থাকার ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু অধিকাংশ শরণার্থীই এই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন। অভিবাসীরা মনে করছে এমনটা করলে তাদের ব্রিটেনে যাবার আশা ফুরিয়ে যাবে এবং ফ্রান্সেই থাকতে হবে। 

গ্রিসের ইদোলমেনি ক্যাম্পের পাশের ওই সীমান্তের বেড়া ভেঙ্গে ফেলার পর শরণার্থীদের ওপর পাল্টা টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ এবং লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ। শরণার্থীরা বেড়ার একটি অংশ ভাঙতে সমর্থ হলেও কতজন ভিতরে ঢুকতে পেরেছে সেটা এখনও নিশ্চিত নয়।

এই সমস্ত শরণার্থীদের বেশিরভাগই যুদ্ধ বিধ্বস্ত সিরিয়া এবং ইরাক থেকে এসেছেন। গ্রিক সীমান্তের পাশে এই মুহূর্তে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার মানুষ আটকা পড়ে আছেন। মেসিডোনিয়া থেকেও খুব কম মানুষকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে। খাবার এবং ওষুধ না থাকায় শরণার্থীদের অবস্থা খুবই খারাপ। 

/এএ/