এশিয়ান এজ

আরএসএসকে আইএসের সঙ্গে তুলনা, ক্ষমা চাওয়ার দাবি বিজেপির

জমিnonameয়তে উলেমায়ে হিন্দের আলোচনায় জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের সঙ্গে আরএসএসের তুলনা করে বিতর্কের জন্ম দিলেন কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ। তার এই মন্তব্যের পর ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছে ভারতের কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। দলটির, ওই কংগ্রেস নেতাকে ক্ষমা চাইতে হবে।আরএসএস জানিয়েছে, এই মন্তব্য কংগ্রেসের ‘মানসিক দেউলিয়াপনা’র পরিচয়। আইনি পদক্ষেপের হুমকিও দিয়েছে সঙ্ঘ পরিবার।
শনিবার নয়াদিল্লিতে জমিয়তের ডাকা ‘জাতীয় সংহতি সম্মেলনের’ মঞ্চে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে আজাদ দাবি করেন, আইএস ও আরএসএস দু’পক্ষই সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে মানবসমাজে বিভেদ ছড়াতে চায়। তিনি বলেন, ‘মুসলিমদের একাংশেও আমরা এমনটা দেখি, যা আজ কয়েকটি ইসলামিক দেশের ধ্বংসের কারণও হচ্ছে। কিছু শক্তি এর পিছনে কাজ করছে। কিন্তু আমাদের বুঝতে হবে, কেন ওই মুসলিমরা এই ফাঁদে পড়ছে। তাই, আইএসের মতো সংগঠনগুলির বিরোধিতা আমরা করব। ঠিক যেভাবে আরএসএসের বিরোধিতা করি। যদি ইসলামে আমাদের মধ্যে কেউ ভুল কাজ করে, তা হলে তারা আরএসএসের থেকে কোনও অংশে কম নয়।
হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে এ মন্তব্যে পাল্টা আঘাত হানে বিজেপি। দলের জাতীয় সম্পাদক শ্রীকান্ত শর্মা বলেন,‘এই মন্তব্য খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আরএসএস একটি জাতীয়তাবাদী সংগঠন। আজাদকে ক্ষমা চাইতে হবে। নইলে সোনিয়া গান্ধীকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
জমিয়তের সভায় নিজের বার্তা পাঠাতে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী একটি চিঠি লিখেছিলেন। চিঠিতে তিনি লিখেন, দেশ ‘সংকটের দশা’র মধ্যে দিয়ে চলেছে, কারণ যারা ক্ষমতায় রয়েছে তারাই ধর্মনিরপেক্ষতাকে আক্রমণ করছে ও ‘বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে’। ওই চিঠিকেও ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ আখ্যা দিয়েছেন বিজেপি নেতা। শ্রীকান্ত বলেন, ‘জওহর লাল নেহেরু ও রাজীব গান্ধীর মতো বহু কংগ্রেস নেতা ওই সংগঠনকে (আরএসএস ) দমন করতে চেয়েছিলেন। কিন্ত তা আরও শক্তিশালী হয়েছে।’  তার অভিযোগ, কংগ্রেসই দেশকে জাত, ধর্ম ও প্রাদেশিকতার ভিত্তিতে ভাগ করেছে। তাই সোনিয়া নিজের দলের ‘কার্যকলাপের বিরুদ্ধে ’ কথা বলছেন। কংগ্রেস দেশ-বিরোধী শক্তিগুলিকে সমর্থন করছে।

অন্য দিকে, রাজস্থানের নাগাউরে অখিল ভারতীয় প্রতিনিধি সভা থেকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে আরএসএস। সংগঠনের নেতা জে আনন্দ কুমার বলেন, ‘এটা কংগ্রেসের মানসিক দেউলিয়াপনাকেই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। বুঝিয়ে দেয় যে, আইসিসের মতো মৌলবাদী ও হিংস্র শক্তিকে আটকাতে ওরা কতখানি অনিচ্ছুক। আমরা (আরএসএস নেতৃত্ব) এখানে একসঙ্গেই রয়েছি। আইনি পদক্ষেপের ব্যাপারে আলোচনা করে দেখব।’

সভা থেকে জমিয়তের সভাপতি মাওলানা আরশাদ মাদানি অভিযোগ করেন, দেশের শাসকদলের সাংসদরা যখন সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ঘৃণার ‘আগুন ছড়াচ্ছেন’, তখন প্রধানমন্ত্রী চুপ রয়েছেন। জেএনইউ-এর ছাত্র সংসদের সভাপতি কানহাইয়াকে সমর্থন করে মাদানি জানান, মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে খর্ব করা যাবে না। হায়দ্রাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রোহিত ভেমুলার আত্মহত্যার প্রসঙ্গে বলেন, ‘কোনও দলিত বাচ্চা নিজের অধিকার চেয়ে আত্মঘাতী হলে প্রধানমন্ত্রী মঞ্চে কাঁদেন। আমার মনে হয়, এটা কুমিরের কান্নার মতো! সবকা সাথ সবকা বিকাশের স্লোগান মিথ্যো। তিনি দাবি করেন, সংখ্যালঘুদের প্রতি মোদি সরকারের নীতি কী, তা প্রকাশ্যে জানাতে হবে। সূত্র: এশিয়ান এজ।

/এএ/