ডন

মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট হলেন সু চি’র বন্ধু

মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন দেশটির গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির দীর্ঘদিনের বন্ধু থিন কিইউ। দেশটির এমপিরা পার্লামেন্টে ভোটাভুটির মাধ্যমে তাকে এ পদে নির্বাচিত করেছেন। পাঁচ দশকের বেশি সময়ের মধ্যে তিনিই দেশটিতে প্রথম বেসামরিক ব্যক্তি হিসেবে এ পদে আসীন হতে যাচ্ছেন। এ বিষয়টি নিয়ে বুধবার প্রধান প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডন।

৬৯ বছর বয়সী থিন কিইউ দুই কক্ষের ৬৫২ ভোটের মধ্যে ৩৬০টি ভোট পান। তাকে বিজয়ী ঘোষণা করার সময় আইনপ্রণেতারা তুমুল করতালি দিয়ে স্বাগত জানান। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টিকে সু চি’র বিজয় বলে অভিহিত করেন থিন কিইউ।

Dawn

অক্সফোর্ড থেকে স্নাতক ডিগ্রিধারী ৭০ বছর বয়সী থিন কিয়াও সু চি’র ছোটবেলার বন্ধু। সুখে-দুঃখে সবসময় তিনি সু চি’র পাশে থেকেছেন। একসময় তার গাড়িও চালিয়েছেন। ২০০৮ সালে সেনাবাহিনী প্রবর্তিত সংবিধানের ধারা অনুযায়ী, স্বামী-সন্তান বিদেশি নাগরিক হওয়ায় ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) প্রধান সু চি প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য ছিলেন। তখন তিনি এ পদে বন্ধু ও কাছের মানুষ থিনকে মনোনীত করেন। ১৫ মার্চ ২০১৬ মঙ্গলবার থিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এর ফলে সু চি’ই দেশ শাসন করতে পারবেন। থিন মিয়ানমারের প্রখ্যাত কবি এবং প্রবীণ এনএলডি নেতা মিন থু ইউনের ছেলে। মিয়ানমারে গণতন্ত্রের আন্দোলনের সঙ্গে তিনি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। থিনের স্ত্রী সু সু এলউইন এনএলডির সাংসদ। সু সুর বাবা একসময় দলের মুখপাত্র ছিলেন।

থিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। ৭০ ও ৮০-এর দশকে তিনি শিল্প ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কর্মরত ছিলেন।

২০১৫ সালের ৮ নভেম্বর মিয়ানমারে ২৫ বছরের মধ্যে প্রথম অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ৮০ শতাংশ আসনে জয় পায় অং সান সুচি’র দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)। তার ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার নিজ দল থেকে দেশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করে এনএলডি।

১৯৬২ সাল থেকে মিয়ানমারের ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করছে দেশটির সামরিক বাহিনী। এ সময়ের মধ্যে জান্তা সরকারের রোষানলে ১৫ বছর সু চি’কে গৃহবন্দী অবস্থায় কাটাতে হয়েছে। গত ২০ বছর ধরে মিয়ানমারে সু চি’র দলকে সরকারের প্রতিপক্ষ মনে করা হতো। এ সময়ে দলটির বহু নেতাকে কারাগারে পাঠানো হয়। সময়ের পরিবর্তনে পার্লামেন্টের বৃহত্তম দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে দলটি। তবে নির্বাচনে সু চি’র দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও দেশটির পার্লামেন্টে সেনাবাহিনীর প্রভাব থাকছে। কারণ তাদের জন্য ১৬৬টি আসন সংরক্ষিত রয়েছে। কিছু গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও থাকছে তাদের হাতে।

/এমপি/