দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

পানামা পেপারস: তদন্তের নির্দেশ দিলেন নরেন্দ্র মোদি

পানামা পেপারসে ফাঁস হওয়া ভারতীয় নাগরিকদের বিদেশে সম্পদ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সরকার সোমবার একাধিক সংস্থাকে নিয়ে একটি বিশেষ গ্রুপ গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। এ বিশেষ গ্রুপ পানামা পেপারসে যেসব ভারতীয় ব্যক্তি কর ফাঁকি দিয়ে বিদেশে সম্পত্তির মালিক হয়েছেন, তাদের সবার বিষয়ে তদন্ত করবে। মঙ্গলবার খবরটি দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস প্রধান শিরোনাম হিসেবে প্রকাশ করেছে।

যে কোনও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা স্বাগত ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিশেষ গ্রুপটিতে থাকবেন সেন্ট্রাল বোর্ড অব ডিরেক্ট ট্যাক্সেস এবং এ সংস্থার বিদেশ কর ও কর গবেষণা বিভাগ, ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট। ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া প্রতিটি মামলা পর্যবেক্ষণ করবে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকার কালো টাকা আয় ও চিহ্নিত করতে বদ্ধ পরিকর। পানামা পেপারসে ফাঁস হওয়া তথ্য সরকারকে এ ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবে। বিদেশি সরকারসহ সব উৎস থেকে এ বিষয়ে সর্বোচ্চ তথ্য পেতে সরকার সম্ভাব্য সবকিছু করবে।

কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি সোমবার বলেছেন, এ ধরনের খবর যে ফাঁস হচ্ছে, তা সুলক্ষণ। বিদেশে বেআইনিভাবে যাঁরা অর্থ রাখেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

রবিবার বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ধনী ও ক্ষমতাবান ব্যক্তি থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপ্রধান পর্যন্ত কিভাবে কর ফাঁকি দিয়ে সম্পদ গোপন করেন এবং কিভাবে অর্থ পাচার করেন; তা প্রকাশিত হয় পানামার একটি আইনি প্রতিষ্ঠানের এক কোটি ১৫ লাখ কর নথি ফাঁস হওয়ার পর।  

গোপনীয়তা রক্ষাকারী হিসেবে পৃথিবীর অন্যতম প্রতিষ্ঠান মোস্যাক ফনসেকা, যেটি পানামার একটি আইনি প্রতিষ্ঠান, সেখান থেকেই সম্প্রতি ফাঁস হয়েছে ১১ মিলিয়ন নথিপত্র। বিশ্বের ৩৫টির বেশি দেশে প্রতিষ্ঠানটির শাখা রয়েছে। ফাঁস হওয়া নথিগুলোতে দেখা যাচ্ছে, অর্থ পাচার করতে, কর ফাঁকি দিতে এবং বিভিন্ন রকম নিষেধাজ্ঞা এড়াতে এই আইনি প্রতিষ্ঠানটি তার মক্কেলদেরকে পরামর্শ দিয়ে আসছে।

ওই ফাঁস হওয়া নথি থেকে জানা গেছে, সাবেক ও বর্তমান ৭২ জন রাষ্ট্রপ্রধান তাদের দেশের সম্পদ লুণ্ঠনের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। ফাঁস হওয়া নথিতে উঠে এসেছে ফিফার দুর্নীতির প্রসঙ্গও। জার্মান দৈনিক জিড্ডয়েটশ সাইটুঙ্গ ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস বা আইসিআইজের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি জানিয়ে দেয়। এ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ভারতের বেশ কয়েকজনের কর ফাঁকি দিয়ে বিদেশে সম্পদের বিবরণ প্রকাশ করে। ফাঁস হওয়া প্রায় ১১ মিলিয়ন নথিপত্রে পাঁচ শতাধিক ভারতীয় ব্যক্তির আর্থিক লেনদেনের বিষয় প্রকাশিত হয়েছে। তালিকায় শীর্ষ চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব অমিতাভ বচ্চন ও তাঁর পুত্রবধূ ঐশ্বরিয়া রাই, করপোরেট ব্যবসায়ী কে পি সিং ও তাঁর পরিবারের নয়জন সদস্য, আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা গৌতম আদানির বড় ভাই বিনোদ আদানি প্রমুখের নাম রয়েছে।

/এএ/