ভোক্তা অধিকার অধিদফতর

অভিযোগ প্রমাণ হলেই পুরস্কার!

 

Vokta 1আমি, আপনি কিংবা যে কেউ যখন কোন পণ্য ক্রয় বা কোন সেবা নিয়ে নিয়ে থাকি তখন আমরা ভোক্তা হিসেবে গণ্য হই। সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যে সেবা পাওয়া কিংবা কোনও কিছু নির্ধারিত মূল্যের বেশি দামে বিক্রি করলে ভোক্তার অধিকার বিরোধী কাজ হয়ে থাকে। এর পাশাপাশি আরও কিছু কাজ যা করলে ভোক্তার অধিকার ক্ষুণ্ন হয়। সেইসব অধিকার ক্ষুণ্ন করা বিষয়গুলো যদি ভোক্তা অধিদফতরে প্রমাণ করা যায় তবেই মিলবে পুরস্কার। ভোক্তা অধিকারবিরোধী কাজগুলোর একটি তালিকা তুলে ধরছি-  

১. নির্ধারিত মূল্য অপেক্ষা অধিক মূল্যে কোনও পণ্য, ঔষধ বা সেবা বিক্রয় বা বিক্রয়ের প্রস্তাব করা।

২. জেনেশুনে ভোজাল মিশ্রিত পণ্য বা ঔষধ বিক্রয় বা বিক্রয়ের প্রস্তাব করা।

৩. স্বাস্থের জন্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিকারক দ্রব্য মিশ্রিত কোন খাদ্য পণ্য বিক্রয় বা বিক্রয়ের প্রস্তাব করা।

৪. মিথ্যা বিজ্ঞাপন দ্বারা ক্রেতা সাধারণকে প্রতারিত করা।

৫. প্রতিশ্রুত পণ্য বা সেবা যথাযথভাবে বিক্রয় বা সরবরাহ না করা।

৬. ওজনে ও বাটখারা বা ওজন পরিমাপক যন্ত্রে কারচুপি করা।

৭. পরিমাপে ও দৈর্ঘ্য পরিমাপক ফিতা বা অন্য কিছুতে কারচুপি করা।

৮. কোনও নকল পণ্য বা ঔষধ প্রস্তুত বা উৎপাদন করা।

৯. মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য বা ঔষধ বিক্রয় বা বিক্রয়ের প্রস্তাব করা।

১০. নিষিদ্ধ ঘোষিত কোনও কার্য করা যাতে সেবাগ্রহীতার জীবন বা নিরাপত্তা বিপন্ন হতে পারে।

১১. অবৈধ প্রক্রিয়ায় পণ্য উৎপাদন বা প্রক্রিয়াকরণ করা।

১২. অবহেলা, দায়িত্বহীনতা দ্বারা সেবাগ্রহীতার অর্থ বা স্বাস্থ্যহানী ঘটানো।

১৩. কোন পণ্য মোড়কাবদ্ধভাবে বিক্রয় করার এবং মোড়কের গায়ে পণ্যের উপাদান,সর্বোচ্চ খুচরা বিক্রয় মূল্য, উৎপাদনের তারিখ, মেয়াদ উর্ত্তিণের তারিখ ইত্যাদি লিপিবদ্ধ করার বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘন করা।

১৪. আইনানুগ বাধ্যবাধকতা অমান্য করে দোকান বা প্রতিষ্ঠানের সহজে দৃশ্যমান কোন স্থানে পণ্যের মূল্যের তালিকা লটকায়ে প্রদর্শন না করা।

১৫. আইনানুগ বাধ্যবাধকতা অমান্য করে দোকান বা প্রতিষ্ঠানের সেবার মূল্যের তালিকা সংরক্ষণ না করা এবং সংশ্লিষ্ট স্থানে বা সহজে দৃশ্যমান কোন স্থানে উক্ত তালিকা লটকায়ে প্রদর্শন না করা।  

উপরোক্ত কোন একটি যদি ভোক্তা হিসেবে আপনি কোন কিছু ক্রয় করার পূর্বে দেখতে পান তাহলে সেটা হবে আপনার অধিকার বিরোধী একটি কাজ। আর তার জন্য রয়েছে অভিযোগের ব্যবস্থা।

অভিযোগ করবেন কোথায়:  

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষনের জন্য রয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার আইন এবং তদারকি করার জন্য রয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তর।  ভোক্তা অধিকারবিরোধী কোনও কার্মকাণ্ড সংঘটিত হলে যেকোনও ভোক্তা, একই স্বার্থসংশ্লিষ্ট এক বা একাধিক ভোক্তা, সরকারি নিবন্ধিত কোনও ভোক্তা সংস্থা, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ বা তার পক্ষে অভিযোগ দায়েরের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনও কর্মকর্তা, সরকার বা সরকার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনও সরকারি কর্মকর্তা অথবা সংশ্লিষ্ট পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী অভিযোগ দায়ের করতে পারবে।

অভিযোগ দায়েরের সময়সীমা : 
কোনো ভোক্তা প্রতারণার শিকার হলে তাকে সেই দিন থেকে শুরু করে ৩০ দিনের মধ্যে অভিযোগ দায়ের করতে হবে। অন্যথায় অভিযোগটি গ্রহণযোগ্য হবে না।
দায়েরকৃত আমলযোগ্য অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত এবং জরিমানা করা হলে তাৎক্ষণিকভাবে অভিযোগকারী ভোক্তা জরিমানার ২৫ শতাংশ অর্থ পাবে।

অভিযোগ দায়েরের নিয়ম :
দায়েরকৃত অভিযোগ লিখিত উপায়ে করতে হবে। তবে সেটা ফ্যাক্স, ই-মেইল, ওয়েব সাইটের মাধ্যমে বা অন্য যেকোনও উপায়ে হতে পারে। অভিযোগের সঙ্গে পণ্য ক্রয়ের রশিদ বা রশিদের ছবি সংযুক্ত করতে হবে।
অভিযোগকারীকে অভিযোগে তার পূর্ণাঙ্গ নাম, পিতা ও মাতার নাম, ঠিকানা, ফোন, ফ্যাক্স ও ই-মেইল আইডি (যদি থাকে) এবং পেশা উল্লেখ করতে হবে।
অভিযোগ দায়েরের ঠিকানা :
মহাপরিচালক, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, ১ কারওয়ান বাজার (টিসিবি ভবন-৮ম তলা), ঢাকা, মোবাইল : ০১৭৭৭-৭৫৩৬৬৮, ফ্যাক্স : +৮৮০২ ৮১৮৯৪২৫। অথবা ই-মেইল করতে পারেন nccc@dncrp.gov.bd এই ঠিকানায়।

অভিযোগ গ্রহণের পর একটি তারিখ দেওয়া হবে শুনানির জন্য। উক্ত তারিখে উভয়পক্ষকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ উপস্থিত থাকতে হবে।

সূত্র: ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।

/এফএএন/