20191128_101336সারি সারি ছনের চালা ঘর, তাতে সাজানো নতুন চালের পিঠার মৌ-মৌ গন্ধ। তার সঙ্গে আছে বাঁদর নাচ, সাপ খেলা, নাগরদোলা। সব মিলিয়ে গ্রাম বাংলার মেলার মাঠের আবহ। ঢাকা শহরের ব্যস্ত জীবনের মাঝে এমনই গ্রামীণ মেলার ছোঁয়া পেতে চাইলে অপানাকে যেতে হবে রাজধানীর রবীন্দ্র সরোবরে ‘প্রাণ চিনিগুড়া চাল নবান্ন উৎসব’-এ।
আবহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী উৎসব নবান্নকে শহরের মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে প্রাণ চিনিগুড়া চালের আয়োজনে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়েছে এই উৎসব। রবীন্দ্র সরোবরে আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে এই আয়োজন।
উৎসবের প্রথমদিন (২৮ নভেম্বর) সকালে লোকসংগীতের সুরে শুরু হয় নবান্নের আয়োজন। দিনব্যাপী থাকছে পথনাটক, আবৃত্তি, দলীয় সংগীত, নৃত্য। বায়োস্কোপ, নাগরদোলা, সাপ খেলা, বানর নাচতো আছেই। এছাড়াও থাকছে পালকি, লাঠি খেলা, জামাই মেলা, পালা গান, পুতুল নাচ। হারিয়ে যাওয়া ধান ভানা ঢেঁকি, কুলা, মাথাল, যাতাকলসহ গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নানা জিনিসের প্রদর্শনীও থাকছে এই আয়োজনে
20191128_101410নবান্ন মানেই পিঠা উৎসব। তাই এই স্টল গুলোতে পিঠার কমতি নেই। সারি দেওয়া স্টলগুলোতে দেখা মিলছে নাম জানা-অজানা বাহারি সব পিঠার। রয়েছে অঞ্চল ভিত্তিক পিঠার স্টলও। বরিশাল, গোপালগঞ্জ, ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া, নোয়াখালি, বিক্রমপুরসহ বিভিন্ন অঞ্চলের পিঠার জন্য আছে আলাদা স্টল। স্টলগুলোতে দর্শনার্থীরা গরম পিঠার স্বাদ নিচ্ছেন।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে উৎসবে আসা স্কুল শিক্ষিকা নুশমা রহমান বলেন, নবান্নের সময় যখন ধান উঠতো তখন বাড়িতে মা কতরকম পিঠা বানাতেন, গ্রামের সব বাড়িতে পিঠা হতো, গ্রামের স্কুল মাঠে মেলা বসতো৷ এখানে নানারকম পিঠা পাওয়া যাচ্ছে, নাগরদোলায় উঠেছি, মেলায় এসে মনে হচ্ছে ছোটো বেলায় ফিরে গেছি।
বাবার সঙ্গে উৎসবে আসা ভিকারুননিসা নূন স্কুলের ছাত্রী তাসবাহ্ বলেন, মেলায় এসে নাগরদোলায় উঠেছি, বানর নাচ- সাপ খেলা দেখেছি, পিঠা খাচ্ছি খুব ভালো লাগছে।
20191128_094549নবান্ন উৎসবের আয়োজক কমিটির সদস্য মানজার চৌধুরী সুইট বলেন, নতুন প্রজন্মকে বাঙালির ঐতিহ্য নবান্ন উৎসবের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে আমাদের এই আয়োজন। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম স্বপ্ন ছিলো ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সাম্য ও ন্যায়ের বাংলাদেশ। নবান্ন উৎসবের মতো আয়োজনের মাধ্যমেই এ স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করতে পারবো আমরা। আমরা মেলা প্রাঙ্গণ জুড়ে গ্রাম বাংলার ছাপ রেখেছি, নবান্ন নিয়ে গান-কবিতার আয়োজন করেছি যাতে আমাদের নতুন প্রজন্মের মাঝে নবান্নকে ছড়িয়ে দেওয়া যায়।