সঙ্গীর সঙ্গে প্রত্যাশার ফারাক?

দুটো আলাদা মানুষের যেমন চিন্তাভাবনার পার্থক্য থাকতে পারে, তেমনি দুটো মানুষ যখন দিনের পর দিন একই ছাদের তলায় কাটিয়ে দেন, তখন ছোটখাট মনোমালিন্য থাকাটাও স্বাভাবিক। অনেক সময় এই ছোট চিড়গুলোই ফাটলের আকার নেয়। এর একটি প্রধান কারণ হচ্ছে দু’জনের সম্পর্কে প্রত্যাশার ফারাক। সংসারের শুরুতে যে কাজগুলো করতে ভালো লাগতো, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেগুলো একঘেয়ে হয়ে যায়। রান্না, অফিস, সন্তানদের স্কুল- সব মিলিয়ে হাঁসফাঁস অবস্থা থেকে মুক্তির পথ খুঁজে পাওয়া যায় না। এমন পরিস্থিতিতে যদি সঙ্গীর সাহায্য না পাওয়া যায়, তবে আরও বেশি হতাশা কাজ করে। আবার হয়তো সঙ্গী মনে করেন যে এই কাজগুলো আপনারই করার কথা, কারণ সংসারের শুরু থেকে আপনিই সেগুলো করে আসছেন। নিজের জন্য সময় বের করতে না পারার আক্ষেপ নিয়ে এভাবে চলতে চলতে অভিমান জমতে থাকে। সেটা একসময় পরিণত হয় ক্ষোভে। ঝগড়া, তর্ক, দোষারোপের আঘাতে সম্পর্কে ফাটল ধরতে থাকে। এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠা কিন্তু খুব একটা শক্ত কাজ নয়। প্রয়োজন শুধু সহমর্মিতা আর একটু যত্নের।

depositphotos_300569312-stock-video-silhouette-of-woman-fighting-with

  • স্বামীর কাছে স্ত্রীর বা স্ত্রীর কাছে স্বামীর প্রত্যাশা থাকাটা স্বাভাবিক। কিন্তু খেয়াল রাখুন সেটা যেন লাগামছাড়া হয়ে না যায়। আপনার নিজেকেও খেয়াল রাখতে হবে যেন অন্যের অতিরিক্ত প্রত্যাশা নিজের উপর না চেপে বসে। তাই ঘরে বাইরে কাজের মধ্যে একটা সামঞ্জস্য রাখা জরুরি। প্রয়োজনে ‘না’ বলতে শিখুন। তর্কে না গিয়ে আপনার সমস্যা, অসুবিধার কথা সঙ্গীকে বুঝিয়ে বলুন। 
  • বাড়িতে এবং বাইরের সব কাজ কারোর পক্ষেই একা করা সম্ভব নয়। এতে একটা সময়ের পর ক্লান্তি, একঘেয়েমি এবং বিরক্তি আসবেই। সব মিলিয়ে কাজটা সুষ্ঠুভাবে করা সম্ভব হয় না। চেষ্টা করুন কিছু কাজ দু’জনে মিলে করার। ঘরের কোনও কাজ করার সময় হালকা মিউজিক চালিয়ে নিতে পারেন। বা দু’জনে গল্প করতে করতে কাজটা করুন। এতে কারও একার উপর চাপ পড়বে না এবং কাজটা করতেও ভালো লাগবে।
  • প্রশংসা করা বা উৎসাহ প্রদান জরুরি। সঙ্গীর কাজের প্রশংসা করুন।
  • সঙ্গীর প্রতি রাগ, অভিমান থাকলে, তা মিছিমিছি মনের মধ্যে জমিয়ে রাখবেন না। এতে আপনার কষ্টটাই বাড়বে।
  • সমস্যা যত বড় হোক না কেন, সমাধানের পথটা কখনও বন্ধ করবেন না। রাগ হলে সাময়িক ভাবে সিচুয়েশন থেকে সরে যান। পরিস্থিতি হালকা হলে আবার আলোচনা করুন।
  • রাতে সব কাজ সেরে সোশ্যাল সাইটে ব্যস্ত হয়ে না পড়ে নিজেরা আড্ডা দিন। তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করে দুজনে মিলে একটা সিনেমা দেখে ফেলতে পারেন। ছুটির দিন পরিবারের সবাই মিলে ঘুরতে বের হন।
  • সাংসারিক কর্তব্য পালনের পাশাপাশি নিজেদের জন্য সময় বের করা খুব জরুরি। কাজের ফাঁকে খানিকটা ফ্রি টাইম বের করে সঙ্গীর সঙ্গে গল্প করা, বাসায় ফেরার সময় সঙ্গীর প্রিয় কিছু নিয়ে এসে তাকে চমকে দেওয়া- এগুলো সম্পর্কের একঘেয়েমি কাটাবে।