বাড়িতে আত্মীয়-স্বজন এলেই যশোরের মানুষ প্রথমে যে খাবারটি দিয়ে তাদের আপ্যায়ন করে, সেটি হচ্ছে ছিটেরুটি আর মুরগির মাংসের লাল ঝোল। কিংবা কারও বাড়ি দাওয়াত নিলে আগে থেকেই যে মেন্যুটির করে থাকে সেটি হচ্ছে ছিটেরুটি আর কুকড়ো লাল ঝোল।
স্থানীয় ভাষায় মুরগির মাংস রান্নাকে বলা হয়- কুকড়োর ঝোল। কখনও-সখনও শীতকালে মুরগির মাংসের স্থলে হাঁসের মাংসও দেওয়া হয়।
ছিটেরুটি ও মুরগির মাংসের এই খাবারটি এই অঞ্চলের মানুষের কাছে বেশ লোভনীয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ছিটেরুটি বানানোর সময় হয়ে না উঠলেও উৎসব আয়োজনে, পারিবারিক জমায়েতে এই খাবার আবশ্যক। তবে যশোর শহরবাসীর জন্য জয়তী হেঁশেল ও ক্যাফে প্রেসক্লাব নামে দুটো রেস্তোরাঁ ছিটেরুটি ও কুকড়োর ঝোল তৈরি করে দেয়। তবে এ বছর থেকে ক্যাফে প্রেসক্লাব এই মেন্যুটি আর সরবরাহ করছে না। একমাত্র ভরসা এখন জয়তী হেঁশেল।
যশোর সদরের পোলতাডাঙ্গা গ্রামের ৬০ বছর বয়সী সুরাইয়া বেগম নিত্য এই পিঠা তৈরির চেষ্টা করেন। তিনি বাংলা ট্রিবিউনের পাঠকদের জন্য দিয়েছেন ছিটেরুটির রেসিপি।
তিনি জানান, তার বাড়িতে চারজন অতিথি এসেছেন, তারা নিজেরা ছয়জন। মোট ১০ জনের জন্য তিনি দুই কেজি চালের গুঁড়ো (ঢেঁকি দিয়ে আতপ চাল ভেঙে তৈরি আটা) দিয়ে তৈরি করেছেন ছিটেরুটি। ছিটেরুটি খেতে তার ছেলের বউ নীলুফা বেগম রান্না করেছেন দুটি মোরগ।
সুরাইয়া বেগম জানান, ছিটেরুটি তৈরি করতে হলে ভাল করে আগে চালের গুঁড়োর মিশ্রণ করতে হয়। যেন মিশ্রণ খুব ঘণ কিংবা পাতলা না হয়। চুলো জ্বালিয়ে প্রথমে কড়াইটা একটু গরম করে তারপরে কলার ডাটি দিয়ে অল্প করে তেল ব্রাশ করে নিয়ে পরে গোলা হাতের আঙুলের মাধ্যমে আস্তে আস্তে ছিটিয়ে দিতে হয় কড়াইয়ে। একটু পরেই খুন্তি দিয়ে সেগুলো তুলে ফের একই কায়দায় গোলা ছিটিয়ে ছিটেরুটি তৈরি করতে হয়। ২ কেজি চালের গুঁড়োয় ৮-১০জন পরিপূর্ণভাবে খেতে পারে।