দেশীয় মোটিফের নানা আয়োজন নিয়ে প্রদর্শনী

কাঁথা ফোঁড়ের ঐকতান আর উপকরণের অলংকৃত সুরিয়েরিজম নিয়ে কিউরিয়াসে শুরু হয়েছে ‘উইন্টার এক্সিবিশন’। গতকাল (৩০ নভেম্বর) রাজধানীর বনানীতে তাদের ফ্ল্যাগশিপ আউটলেটে শুরু হয় এই প্রদর্শনী।  

কিউ গ্যালারিতে ঢুকলেই চোখে পড়বে নজড়কাড়া আয়োজন। একপাশে পোশাক আর অন্যপাশে গয়না। ভিন্ন ধরনের এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী, একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির, কিউরিয়াসের পরিচালক, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আর চেয়ারপারসন। মিট দ্য প্রেস পর্বটি সঞ্চালনা করেন এই প্রদর্শনীর কিউরেটর ডিজাইনার চন্দ্র শেখর সাহা।


প্রদর্শনীটির সংবাদ সম্মেলনে পুরোনোকে উজ্জীবন করে নতুন আয়োজনের ভাবনাকে তুলে ধরা হয়। এখানে গুরুত্ব পেয়েছে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তন আর তারই পরিপ্রেক্ষিত পোশাকশিল্প আর ফ্যাশন দুনিয়ার দায়িত্বশীলতা। যে হারে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বাড়ছে, এভাবে চলতে থাকলে ৫০ বছর পর শীতকাল বলে আর কিছু থাকবে কি না, তাই নিয়েও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।


চন্দ্র শেখর সাহা বলেন, ‘যে দাদিকে শিশু দেখেনি, কিন্ত তার বোনা সোয়েটার শরীরে চাপিয়ে বড় হয়েছে। এই যে একজন আরেক মানুষের স্নেহের স্পর্শ গায়ে জড়িয়ে চলেছে, পোশাকের আজকের কালেকশন সেটিকে উদযাপন করার প্রয়াস মাত্র। আর যেগুলোকে আপনারা গয়নারূপে দেখছেন, এর উপকরণগুলোকে আমরা বীজ, মেটাল, কাপড়, কাঠরূপে পরে থাকতে দেখি। কিন্তু কখনও সেগুলোকে গয়না হিসেবে কল্পনা করি না। আমাদের এই গয়নার কালেকশন তাই অলক্ষে পড়ে থাকা টুকরো বাস্তবতা আর স্বপ্নের সম্মিলন। পুরো প্রদর্শনীকে ভাগ করা হয়েছে দুই ভাবে। কাঁথা ফোঁড়ের ঐক্যতান এবং উপকরণের অলংকৃত সুরিয়েলিজম।’



কাঁথা ফোঁড়ের ঐক্যতান
সময়ের অতীত থেকে গৌরবময় সৃজন ঐতিহ্য, আমাদের শিল্প সংস্কৃতি ও জীবধারাকে সব সময়েই সমৃদ্ধ করে এসেছে। নকশীকাঁথা বাঙালির মমতা জড়ানো কারুশৈলির চিরন্তন অনুভব। ‘কিউরিয়াস’ এর প্রদর্শনীটির প্রেরণায় ছিলো নকশীকাঁথা ফোঁড়ের বর্ণিল সারফেস, সহযোগী হিসেবে সংযুক্ত হয়েছে বাটনস্টিচের সুরেলা বর্ডার। লাইনিং এর প্রিন্ট ডিজাইনে শিল্পীর নিপুণ ড্রয়িং-এর স্বপ্ন তৈরি করেছে প্রকৃতির ছায়াময় বাগান। এবারে শীতের পেশাকে স্টাইলের মাধ্যমে আরও সংযোজিত হয়েছে সময়ের আধুনিক মাত্রা।


উপকরণের অলংকৃত সুরিয়েলিজম

অলংকার শিল্পের উদ্ভব হয়েছে ৫ হাজার বছরেরও আগে। হারিয়ে যাওয়া সবগুলো সভ্যতাতেই তার উদাহরণের নিদর্শন পৃথিবীর বিভিন্ন জাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে। কিউরিয়াস তার গুণগ্রাহী পৃষ্ঠপোষকদের জন্য গহনার নতুন ভাবনা রচনা করেছে যেখানে উপস্থাপিত হয়েছে ঐতিহ্য ও আধুনিকতার সম্পর্কিত সময় ও ভাবনার বৈচিত্র্য অভিনবত্ব।

সবার জন্য উন্মুক্ত প্রদর্শনীটি চলবে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।