প্রতিদিন ১০ হাজার কদম হাঁটলে মিলবে এই ৮ উপকারিতা

হাঁটা ব্যায়ামের সবচেয়ে সহজ উপায়, কিন্তু ভীষণ সবচেয়ে কার্যকরী ব্যায়াম এটি। প্রতিদিন নিয়ম করে হাঁটলে অনেক দীর্ঘমেয়াদি রোগ আপনার কাছে ঘেঁষতে পারবে না। টাইমস অব ইন্ডিয়ার একটি রিপোর্ট বিশেষজ্ঞের বরাত দিয়ে জানাচ্ছে যে, প্রতিদিন ১০ হাজার কদম হাঁটলে মিলবে বেশ কিছু উপকারিতা। জেনে নিন সেগুলো কী কী।

 

  1. নিয়মিত হাঁটলে ফুসফুস শক্তিশালী হয়। কার্ডিওপালমোনারি রিহ্যাবিলিটেশন অ্যান্ড প্রিভেনশন জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা অনুসারে, হাঁটা শ্বাসযন্ত্রের পেশীকে শক্তিশালী করে, বায়ু চলাচল উন্নত করে এবং সামগ্রিক ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়ায়। 
  2. হাঁটার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সুবিধা হলো হৃদরোগের উপর এর ইতিবাচক প্রভাব। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন দ্বারা পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে যে প্রতিদিন কমপক্ষে ১০ হাজার পদক্ষেপ হাঁটা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারে। নিয়মিত হাঁটা রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে, কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় এবং রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে। এই সবই হৃদরোগ থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করে। 
  3. স্ট্রোক জার্নালে প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে নারীরা প্রতিদিন ১০ হাজার কদম বা তার বেশি হাঁটলে তাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে। গবেষকরা এক দশক ধরে ১৩ হাজার নারীর উপর সমীক্ষা চালিয়ে এই সিদ্ধান্তে আসেন যে, যারা বেশি হাঁটেন তাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি ১২ শতাংশ কম। হাঁটা রক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে, রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এবং ধমনীতে প্লেক জমা হওয়ার ঝুঁকি কমায়। এগুলো সবই স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।
  4. টাইপ ২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমাতে হাঁটা একটি সহজ কিন্তু কার্যকর উপায়। ডায়াবেটোলজিয়া জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রতিদিন ১০ হাজার কদম হাঁটলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে। গবেষকরা ১০ বছর ধরে ২ হাজার জনেরও বেশি ব্যক্তিকে অনুসরণ করেছেন এবং দেখেছেন যে যারা বেশি হাঁটেন তাদের ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কম সক্রিয়দের তুলনায় ৫০ শতাংশ কম। হাঁটা ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করতে সাহায্য করে, রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে। এগুলো সবই ডায়াবেটিস প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ।
  5. হাঁটা মানসিক স্বাস্থ্যের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে, মন ভালো রাখে এবং মানসিক চাপের মাত্রা কমায়। ব্রিটিশ জার্নাল অব স্পোর্টস মেডিসিনে প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, দিনে মাত্র ১০ মিনিট হাঁটা বিষণ্ণতা এবং উদ্বেগের লক্ষণগুলো কমাতে সহায়তা করে।। হাঁটা এন্ডোরফিন নিঃসরণ করে, যা প্রাকৃতিকভাবে মন ভালো রাখে এবং শরীরে স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা কমায়।
  6. বাড়তি ওজন অনেক রোগের কারণ। হাঁটা ক্যালোরি পোড়াতে সাহায্য করে ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। দিনে ১০ হাজারের বেশি স্টেপ হাঁটলে চর্বিহীন থাকে শরীর ও বিপাক বৃদ্ধি পায়। জার্নাল অব ওবেসিটিতে প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, প্রতিদিন ১০ হাজার কদম হাঁটা ওজন বৃদ্ধি রোধ করতে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে, এমনকি উল্লেখযোগ্য ডায়েটে পরিবর্তন না করেও।
  7. ঘুমের সমস্যা দূর করতে পারে নিয়মিত হাঁটা। জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল স্লিপ মেডিসিনে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রাপ্তবয়স্করা যারা সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট হাঁটেন, তাদের ঘুম ভালো হয়। 
  8. নিয়মিত হাঁটলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয়। শরীরকে সংক্রমণ ও অসুস্থতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে হাঁটার অভ্যাস। ব্রিটিশ জার্নাল অব স্পোর্টস মেডিসিনে প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রাপ্তবয়স্করা যারা দিনে কমপক্ষে ১০ হাজার কদম হাঁটেন তাদের ঠান্ডা লাগার ঝুঁকি কম।