‘মনে হচ্ছে বিয়ের পরে স্ত্রীকে চিনতে পারছি না’

প্রশ্ন: আমার বয়স ৩৩ বছর। দুই সন্তান আমার, একজনের বয়স এক আরেকজনের বয়স চার। দ্বিতীয় সন্তান হওয়ার পর থেকেই আমি ক্রমান্বয়ে মেজাজ হারিয়ে ফেলছি। বড় বাচ্চাটার উপরেও কারণে অকারণে মেজাজ দেখাই। স্বামীর উপরেও ভীষণ রাগ হয়। স্বামী খুব একটা সাপোর্টিভ না। একা হাতেই বাচ্চা দুইটাকে সামলাতে হয়। হেল্পিং হ্যান্ড খুঁজেও পাইনি। কীভাবে নিজেকে শান্ত রাখবো?

উত্তর: আপনি প্রসব পরবর্তী বিষণ্ণতা (Postpartum Depression) রোগে ভুগছেন যা সন্তান জন্মদানের পর ১০ থেকে ১৫ শতাংশ মায়েদের মধ্যে দেখা যায়। এটি সাধারণত প্রসবের পর তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে শুরু হয়। প্রসব পরবর্তী বিষণ্ণতার কারণগুলো বিভিন্ন হতে পারে, যেমন হরমোনের পরিবর্তন, মানসিক চাপ, এবং পারিবারিক ইতিহাস। কিছু মায়ের ক্ষেত্রে, এটি গুরুতর হয়ে দীর্ঘস্থায়ী বিষণ্ণতা বা মেজর ডিপ্রেশনে পরিণত হতে পারে। চিকিৎসার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব, যার মধ্যে সাইকোথেরাপি এবং ঔষধ প্রয়োগ অন্তর্ভুক্ত। সেইসাথে আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের সাথে যোগাযোগ বাড়ান। নিয়মিত ব্যায়াম, মেডিটেশন ও ব্রিদিং এক্সারসাইজ করুন, প্রতিদিন কিছুটা সময় রোদে এবং খালি পায়ে মাটি বা ঘাসের উপরে দাঁড়ান। বেশি করে ডিম এবং প্রাণিজ প্রোটিন খান। শখের কাজে অধিক মনোনিবেশ করুন। নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হোন এবং বন্ধুত্ব গড়ে তুলুন। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী কাজে সম্পৃক্ত হোন।

প্রশ্ন: আমার বয়স ২৮ বছর। বিয়ে করেছি সম্প্রতি। মনে হচ্ছে বিয়ের পরে স্ত্রীকে চিনতে পারছি না। যদিও আমাদের দীর্ঘদিনের প্রেমের বিয়ে ছিল। কিন্তু এখন দেখছি সে আসলে আমাকে ঠিক মতো রেসপেক্ট করে না। আমাদের নিজেদের ব্যক্তিগত কথা বন্ধুদের জানায়, পরিবারকে জানায়। কথায় কথায় প্রচণ্ড খারাপ ব্যবহার করে আমার সঙ্গে। কী করবো বুঝতে পারছি না।

উত্তর: বিয়ের পরের জীবন অনেক পরিবর্তন হয়, যা স্ত্রীর জন্য চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। এ কারণে স্ত্রীর আচরণে পরিবর্তন দেখা দিতে পারে। এই পরিস্থিতিতে স্বামী হিসেবে আপনাকে ধৈর্য্যশীল হতে হবে এবং স্ত্রীর দৃষ্টিভঙ্গি ও অনুভূতিগুলি বোঝার চেষ্টা করতে হবে। তার আচরণের কারণ জানার চেষ্টা করুন এবং আপনার অনুভূতিগুলি খোলামেলা ও সততার সঙ্গে আলোচনা করুন। তাকে জানান যে আপনি সম্মান আশা করেন এবং তাকে সম্মানও করেন। ব্যক্তিগত বিষয়গুলি বন্ধু বা পরিবারের সঙ্গে শেয়ার করা উচিত কিনা, তা নিয়ে আলোচনা করুন এবং কিছু সীমা নির্ধারণ করুন। যদি স্ত্রীর আচরণ পরিবর্তনের জন্য পরিবারের বা বন্ধুবান্ধবের সাহায্য প্রয়োজন হয়, তবে তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন। সমস্যাগুলো যদি আরও জটিল হয়ে যায়, তাহলে পেশাদার কাউন্সেলিং বা থেরাপি নিতে পারেন। আপনার মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দিন; নিয়মিত ব্যায়াম, মেডিটেশন বা পছন্দের শখে সময় কাটান। মনে রাখবেন, সম্পর্কের উন্নতি ও সমাধান খুঁজে পাওয়ার জন্য সময় ও ধৈর্য্যের প্রয়োজন।