ভারতে তুমুল জনপ্রিয় বাংলাদেশি পটাটা বিস্কুট

বাংলাদেশের প্রাণ ফুড কোম্পানির একটি বিস্কুট ভারতে বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম লাইভমিন্ট এক প্রতিবেদনে এই বিস্কুটটি কীভাবে জনপ্রিয় হলো তা তুলে ধরেছে। ভারত জয় করা প্রাণের এই বিস্কুটটির নাম 'প্রাণ পটাটা স্পাইসি ফ্লেভার্ড বিস্কুট'।

প্রতিবেদনটিতে লেখক উল্লেখ করেছেন, প্রথমে তিনি একটি টুইট দেখেন বিস্কুটটি সম্পর্কে। এতে বলা হয়েছে, ‘এই বিস্কুট সত্যিকার অর্থে নেশার মতো’। কিছু দিন পর টুইটারের টাইমলাইনে বিস্কুটটি প্যাকেট দেখতে শুরু করেন। লকডাউনের মধ্যে বিস্কুটটি কীভাবে পাওয়া যাবে মানুষ কথা বলছেন টুইটার, ইন্সটাগ্রাম পোস্ট ও স্টোরিতে। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপগুলোতে মেড- ইন-বাংলাদেশ বিস্কুটটি নিয়ে আলোচনা।

প্যাকেটজাত পণ্যের তুমুল জনপ্রিয় হওয়ার বিষয়ে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, কিছু কিছু পণ্য হয়ত স্মৃতিকাতরতার সঙ্গে নতুনত্বের মধুরত স্থান জয় করে। ম্যাগি নুডলস, কোকা-কোলা, আমুল বাটার বা হলদিরামের আলু ভুজিয়া এই কাজ করতে পেরেছিল। বাংলাদেশের কোম্পানি প্রাণের এই বিস্কুটটিও হয়ত সেই জায়গা খুঁজে পেয়েছে।

বিস্কুটটি সম্পর্কে প্রতিবেদনে লেখক প্রথমবার খাওয়ার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন। তিনি লিখেছেন, প্যাকেটের ভেতর চিকন সারিতে গোল ও সোনালি চাকতির মতো বিস্কুটগুলো সুন্দর করে রাখা। এতে প্রচুর পরিমাণে আলুকে বিস্কুটে রূপান্তরিত করা হয়েছে। এগুলো ওয়েফারের মতো পাতলা, ছোট এবং মুচমুচে। স্বাদের মিশ্রণ, প্রয়োজনীয় মিষ্টি-লবণ-টক-মসলার সমন্বয় এটিকে উপমহাদেশীয় স্বাদের আধারে পরিণত করেছে।

বিস্কুটটির প্রশংসাকারীদের একজন মুম্বাইভিত্তিক কনটেন্ট ক্রিয়েটর রাহুল যাদব। তার মাধ্যমে অনেকের কাছেই টুইটার প্রোফাইলে বিস্কুটটি হাজির হয়। তিনি এটি সম্পর্কে বলেছেন, ‘এটি একেবারেই বহুমুখী স্বাদের। চিজ এবং মসলাদার আলুর তরকারি হিসেবেও এটিকে পরখ করেছি। এটি স্বাদে অনন্য।’

রাহুল জানালেন, ২০১৯ সালে রকি সিং ও ময়ুর শর্মার খাবারের অনুষ্ঠান হাইওয়ে অন মাই প্লেট-এর যৌথ টুইটার হ্যান্ডেলের মাধ্যমে বিস্কুটটি সম্পর্কে জানতে পারেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক দশক আগে মূলত ভারতের উত্তর-পূর্ব ও পশ্চিমবঙ্গে প্রাণের পণ্য জনপ্রিয় হতে শুরু করে। বিশেষ করে তাদের রাস্ক বিস্কুট, প্যাকেটজাত ঝাল মুড়ি, ইন্সট্যান্ট নুডলস ও প্যাকেটজাত জুস। পটাটাই হলো প্রাণের প্রথম পণ্য যারা পুরো ভারতজুড়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বিস্কুটটি পাওয়া যাচ্ছে পশ্চিমের জয়পুর থেকে দক্ষিণের মাঙ্গালুরুতে।

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও আহসান খান চৌধুরী জানান, আমাদের জন্য ভারত একটি বিশাল বাজার। আমরা ভারতের ৭০০ তালুকে পৌঁছাতে চাই। অনুপ্রেরণার জন্য আমরা করপোরেট ভারতের দিকে তাকাই। আমাদের লক্ষ্য হলো বৈশ্বিক কোম্পানিতে পরিণত হওয়া। সীমান্ত অর্থহীন।

২০১৫ সালে ত্রিপুরার আগরতলাতে কোম্পানিটি প্রথম কারখানা স্থাপন করেছে।

পটাটা বিস্কুট সম্পর্কে আহসান খান বলেন, চীন ভ্রমণের সময় তাদের আলুর ওয়েফারের মতো বিস্কুট দেখে এটি তৈরির উৎসাহ পান। বাংলাদেশে ফিরে তিনি খাদ্য বিজ্ঞানীদের আলুর প্লেক্স, পেস্ট ও স্টার্চের সঙ্গে ফ্লেভার মিশিয়ে এটিকে ওয়েফারের মতো পাতলা কিন্তু খেতে মচমচে হবে এমন বিস্কুট তৈরি করতে বলেছিলেন।