বব ডিলান শুধুমাত্র গান নিয়েই পড়ে থেকেছেন তা নয়। গান লেখা এবং গাওয়ার পাশাপাশি রচনা করেছেন একাধিক কাব্যগ্রন্থ। ‘কোরনিকেলস; ভলিউম ওয়ান’ নামে লিখেছেন নিজের একটি আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থও। এছাড়া জীবনের বিভিন্ন সময়ে প্রচুর ছবি এঁকেছেন। যার প্রদর্শনীর মাধ্যমে চিত্রশিল্পী হিসেবে বব ডিলান অর্জন করেছেন বিশ্বজোড়া সুখ্যাতি। ২০০৯ সালে চিত্রকলায় বিশেষ অবদানের জন্য পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদক ‘মেডেল অফ আর্টস’।
ছোটবেলা থেকেই গানের সাথে সাথে ছবি আঁকার চর্চা চালিয়ে গেলেও অনেক পরে চিত্রশিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন ডিলান। প্রথমবারের মতো ডিলানের চিত্রকলা সবার নজরে আসে ১৯৭০ সালে। সে বছর ডিলানের অন্যতম জনপ্রিয় এ্যালবাম ‘সেলফ পোট্রেট’ প্রকাশিত হয় যার প্রচ্ছদ ডিলান নিজে হাতে একেছিলেন। এ্যালবামটির প্রচ্ছদ হিসেবে ডিলান নিজের মুখমণ্ডলের একটি প্রতিকৃতি একেছিলেন, পরবর্তীতে ডিলানের আঁকা নিজের এই প্রতিকৃতি বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করে। এরপর ১৯৭৪ সালে প্রকাশিত এ্যালবাম ‘প্লানেট ওয়েভস’-এর প্রচ্ছদও ডিলান নিজেই আঁকেন। এর বেশ কিছু বছর পর ১৯৯৪ সালে বিশ্বের সবচেয়ে বড় চিত্রকলা বইয়ের প্রকাশনী ‘পেঙ্গুইন র্যান্ডম বুক হাউজ’ প্রকাশ করে ডিলানের প্রথম চিত্রকলার বই ‘ড্রোন ব্লাঙ্ক’। কিন্তু প্রথম বই প্রকাশ হওয়ার ১৩ বছর পর ডিলানের চিত্রকলার প্রথম প্রদর্শনী হয়। ২০০৭ সালে জার্মানির কেমনিত্জ শহরের কুনসামলাঙ্গায় ‘দ্য ড্রোন ব্লাঙ্ক সিরিজ’ নামে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। এতে ডিলানের প্রায় ২ শ’র অধিক জলরং এবং গোয়াশে আঁকা ছবি প্রদর্শিত হয়। এই প্রদর্শনী থেকেই বেছে সেরা ১৭০টি ছবি একত্র করে সে বছর প্রকাশিত হয় ডিলানের ২য় চিত্রকলার বই ‘দ্য ড্রোন ব্লাঙ্ক সিরিজ’।
এছাড়া ২০১৩ সালে আগস্ট মাসে ব্রিটেনের ন্যাশনাল পোট্রেট গ্যালারীতে ‘ফেস ভ্যালু’ এবং নভেম্বরে লন্ডনের হ্যাল্কন গ্যালারীতে ‘মুড সুইংস’ শিরোনামে ডিলানের চিত্রকলার দুইটি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।
এপর্যন্ত ডিলানের মোট ৬ টি চিত্রকলার বই প্রকাশিত হয়েছে। এগুলো যথাক্রমে ‘ড্রোন ব্লাঙ্ক’ (১৯৯৪), ‘দ্য ড্রোন ব্ল্যাংক সিরিজ’ (২০০৮), ‘দ্য ব্রাজিল সিরিজ’ (২০১০), ‘দি এশিয়া সিরিজ’ (২০১১), ‘রেভিসিওনিস্ট আর্ট’ (২০১৩) এবং ‘বব ডিলান: ফেস ভ্যালু’ (২০১৪)। বিভিন্ন সময়ে এই বইগুলো সর্বাধিক বিক্রিত বইয়ের তালিকায় থেকে প্রচুর পরিমাণে আলোচিত হয়েছে যে কারণে চিত্রশিল্পী হিসেবে ডিলানের খ্যাতি অনস্বীকার্য।