অ্যাটউডের ‘দ্য টেস্টামেন্টস’ ও সমকালীন নারীবাদ | কেরি র‍্যাডফোর্ড

nonameকানাডার কবি, কথাসাহিত্যিক ও সাহিত্য-সমালোচক মার্গারেট অ্যাটউড তার উপন্যাস ‘দ্য হ্যান্ডমেইড’স টেল-এর সিক্যুয়েল ‘দ্য টেস্টামেন্টস : দ্য সিকুয়েল টু দ্য হ্যান্ডমেড’স টেল’-এর জন্য ২০১৯ সালে বুকার পুরস্কার পেয়েছেন। দ্বিতীয়বারের মতো বুকারজয়ী এই লেখকের নাম বেশ কয়েক বছর ধরে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারের জন্য উচ্চারিত হয়ে আসছে। তিনি তার উপন্যাস ‘দ্য টেস্টামেন্টস’-এ সমকালীন বিশ্বের নারীবাদের স্বরুপ তুলে ধরেছেন।

মার্গারেট অ্যাটউড বলেন, প্রতিটি আন্দোলনের জন্য মূর্তশিল্পের প্রয়োজন, যেমন প্রয়োজন নারী অগ্রযাত্রার যুগে নারীবাদের জন্য। খুব কমই নারীই আছে যারা দাসীদের থেকে একটু বেশি দৃঢ়। তবে এই দাসীরাই উত্তর আয়ারল্যান্ডে গর্ভপাতের অধিকার নিয়ে রাস্তায় নেমেছে, তারা লন্ডনে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মিছিল করেছে এবং বুয়েনস আইরেসে প্রচারণা চালিয়েছে।

এখন একুশ শতকের দ্বিতীয় দশক এবং আমরা অনেক কৌতূহলী প্রস্তাবনার ভিতরে বসবাস করছি, যেখানে জনগন ‘প্রথাগত ধর্ষণের শিকার’ হিসেবে তাদের পোষা  প্রাণীকেও বেশ ধরায়। আমার মৌলিক অবস্থান হচ্ছে যে, নারী পবিত্র ও দুষ্ট ব্যবহারে এমনকি অপরাধের সংমিশ্রণে গঠিত মানুষ। তারা দেবদূত নন, তারাও ভুল করতে পারে। যদি তারা এমন না হতো, তবে এই বৈধ প্রথার প্রয়োজন পড়তো না।

উদাহরণ স্বরূপ মি-টু মুভমেন্টের কথা বলা যায়। কারণ যথাযথ বৈধ প্রক্রিয়ার সমর্থনে লেখা চিঠি অন্য সময়ে নিষ্প্রভ মনে হলেও মি-টু-এর ভিতর এটা গভীর ও যোক্তিক ক্রোধের ভিত্তি পেলো যা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা যৌন নির্যাতনের সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করবে।

অ্যাটউড তার গিলিড উপন্যাসে মানবের মেজাজ ও বুদ্ধির আদর্শ নরম হাতের সুতার স্থীর নৈতিকতাকে বপন করে বলে মত দিয়েছেন। তার মতে মি-টু মুভমেন্ট হচ্ছে ভগ্ন বৈধ প্রথার লক্ষণ যা রাজনৈতিক মধ্যপন্থি ও ঔপন্যাসিকদের ভূমিকার মধ্যে সম্পর্ক স্হাপন করেছে।

গল্প লেখকগন মূলত সন্দেহভাজন হন কারণ তারা মানুষ নিয়ে লেখেন এবং মানুষ নৈতিকভাবে দ্ব্যর্থক। চিন্তাধারায় দ্ব্যর্থতা দূর করাই মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। The Testament হচ্ছে এসব ধারণা প্রকাশের যথার্থ পাত্র। যেহেতু অ্যাটউড গিলিডের শুরু ও শেষ উভয় জায়গায় অঙ্কিত করেছেন যে, মানুষ শত্রুকে চিত্রিত করতে চায় না, বরং শত্রু হচ্ছে চরমপন্থী চিন্তাধারা যা পুরুষদের শক্তি ও নারীদের ভয়াবহ পছন্দকে এগিয়ে দেয়।

The Testament-এর তিন জন লেখকের মাঝে Aunt Lydia আসল উপন্যাসের অলস দাসীদের মাঝে মহিলাদের চেতনার জন্য নারী শাসকের ভয়াবহ রূপ দেখিয়েছেন। যদি Aunt Lydia ‘The Handmaid’s Tale’-এর কোনো চরিত্র হতেন, তবে শয়তানের রূপ পেতেন৷ The Testament's-এ তার একটি ভিন্ন উপস্থাপন রয়েছে। উপন্যাসটি পূর্ব ঘটনার প্রকাশ ঘটিয়েছে। সেখানে দেখানো হয়, সে ট্রেইলার পার্কের এক পরিবারের সন্তান যে কলেজে শিক্ষা গ্রহণ করতে ও বিচারক হতে তার অভদ্র বাবার হাত থেকে পালিয়েছে। গিনিড অভ্যূত্থানের পর সে অস্তিত্বকে বেছে নিয়েছে, এবং তার সময়ের সর্বশক্তিমান মহিলাতে পরিণত হয়েছে। তার (Lydia) দৃষ্টিকোণ থেকে অ্যাটউড রবার্ট ফ্রস্টের কবিতার ভাষায় লেখেন ‘হলুদ গাছ  দুই রাস্তাকে পৃথক করেছে। আমি অধিক ভ্রমণকৃত রাস্তাকে গ্রহণ করলাম। এটি ছিল শবে পরিপূর্ণ, রাস্তাটি যেমন ভয়ের ছিল। এবং যখন আপনি লক্ষ্য করবেন, দেখবেন সেখানে আমার শব-দেহটি নেই।’

চালাকি, উগ্রতা, সমঝোতা মিশ্রণে Aunt Lydia এক বিস্ময়কর বক্তা। এই নৈতিক দ্ব্যর্থতা আসল উপন্যাসের সাথে সংগতিপূর্ণ। যদি এমন চরিত্র রূপায়ন ব্যর্থ হতো যা ছিল অফরিদের রক্ষক, যে মূলত শক্তিশালী গৃহপতি ও সর্বদা চাকরী, স্ত্রী, তরুণ চাকরানীদের গর্ভবতী করার চেষ্টায় থাকতো।

ইন্ডিপেনডেন্ট