আনন্দময়, প্রাণবন্ত, উৎসবমুখর মেলা চাই

[আহমাদ মোস্তফা কামালের লেখালিখির শুরু ১৯৯০ দশকের শুরুতে। জন্ম ১৪ ডিসেম্বর ১৯৬৯। তার চতুর্থ গল্পগ্রন্থ ‘ঘরভরতি মানুষ অথবা নৈঃশব্দ্য’-এর জন্য ২০০৭ সালে লাভ করেছেন ‘প্রথম আলো বর্ষসেরা বই’ পুরস্কার, দ্বিতীয় উপন্যাস ‘অন্ধ জাদুকর’ ভূষিত হয়েছে ‘এইচএসবিসি-কালি ও কলম পুরস্কার ২০০৯’-এ, তার তৃতীয় উপন্যাস ‘কান্নাপর্ব’ ২০১২ সালের শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ হিসেবে লাভ করেছে ‘জেমকন সাহিত্য পুরস্কার ২০১৩’। অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২২ নিয়ে এই খ্যাতিমান কথাসাহিত্যিকের সঙ্গে কথা বলেছেন শ্যাম পুলক।]

 

প্রশ্ন : অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২২ বইমেলা কেমন চান?
উত্তর : আনন্দময়, প্রাণবন্ত, উৎসবমুখর মেলা চাই।

প্রশ্ন : এ বছর আপনার কি কি বই আসবে? কোন প্রকাশনা থেকে?
উত্তর : পাঠক সমাবেশ থেকে আসবে 'গল্পসংগ্রহ' এবং অন্যপ্রকাশ থেকে আসবে 'সেরা দশ গল্প'।

প্রশ্ন : প্রকাশিতব্য বই সম্পর্কে জানতে চাই।
উত্তর : আমার প্রকাশিত গল্পগ্রন্থ এগারোটি। প্রথম থেকে শেষ গল্পগ্রন্থে গ্রন্থিত সবকটা গল্প নিয়ে প্রকাশিত হচ্ছে 'গল্পসংগ্রহ'। মোট ৯৫টি গল্প থাকছে এই সংকলনে। 'সেরা দশ গল্প' হলো নির্বাচিত দশটি গল্পের সংকলন।


প্রশ্ন :  অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২১-এর অভিজ্ঞতা কেমন?
উত্তর : খুব মন খারাপ করা অভিজ্ঞতা। ফেব্রুয়ারি থেকে পিছিয়ে মেলা চলে গেল মার্চ-এপ্রিলে। ওটা তো গরমের সময়, মেলার জন্য ঠিক উপযুক্ত নয়। সে-সময় কোভিড সংক্রমণের হারও ফেব্রুয়ারির চেয়ে বেশি ছিল। কেন যে পেছানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিল, বুঝিনি এখনো। তারপর এলো আরো অদ্ভুত সিদ্ধান্ত—বিকেলের মধ্যেই স্টল বন্ধ করতে হবে, মেলা-প্রাঙ্গন খালি করতে হবে। মানুষ তো মেলায় যায়ই বিকালে বা সন্ধ্যায়। চাকরিজীবীরা যায় সন্ধ্যার পর। চৈত্রের দুপুরে কেউ মেলায় যায় নাকি? এই সিদ্ধান্তের পর আমি তো একদিনও যেতে পারিনি। খুবই বিরক্ত এবং হতাশ হয়েছি। গতবারের মেলায় লেখক-পাঠক-প্রকাশক সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরকম মেলা হওয়ার চেয়ে না হওয়াই ভালো।

প্রশ্ন : বইমেলার পর আমাদের বই খুঁজে পাওয়া যায় না এবং বইয়ের দোকানও স্বল্প। এই পরিস্থিতিতে বই পাঠকের কাছে পৌঁছাতে আপনার ভাবনা যদি জানাতেন।
উত্তর : এই সমস্যার আপাতত কোনো সমাধান নেই। অনলাইন বুকশপ থেকে বই বিক্রি বেড়েছে বটে কিন্তু তাতে বই দেখে এবং খানিকটা পড়ে কেনার আনন্দটা থাকে না। বই তো যেকোনো পণ্যের মতো নয়, এর সঙ্গে অনেকরকম অনুভূতি আর  আবেগ জড়িয়ে থাকে। সেজন্যই পাঠকরা অনলাইনে বই কেনার চেয়ে বইয়ের দোকান থেকে কিনতে বেশি পছন্দ করে। কিন্তু সারা দেশেই বইয়ের দোকান খুব কম। পাঠক সমাবেশ বা বাতিঘরের মতো বইয়ের দোকান সারা দেশে থাকলে বই বিক্রির পরিমাণটা নিশ্চিতভাবেই বাড়তো। আমি প্রকাশক সমিতিকে একাধিকবার বলেছি, তাঁরা যেন স্ব-উদ্যোগে প্রতি জেলায় অন্তত একটা করে বড়োসড়ো বিক্রয়কেন্দ্র তৈরি করেন। চেইনশপের মতো ব্যাপার হবে সেটা। ওরকম হলে স্বাভাবিকভাবেই বই সহজলভ্য হতো। কিন্তু এসব বলে কী লাভ, বলুন! কেউ আর পাঠকের কাছে বই পৌঁছানো নিয়ে মাথা ঘামায় না এখন।