বাঙালির উৎসের উৎসব এই গ্রন্থমেলা

[ কবি আসাদ মান্নানের জন্ম ৩ নভেম্বর ১৯৫৭, চট্টগ্রামের সন্দীপে। কাব্যবুননে তাঁর নিজস্ব কৌশলে ও শৈলীর মাধ্যমে বাংলা কবিতার জগতে তৈরি করে নিয়েছেন আলাদা একটি বলয়। 'সুন্দর দক্ষিণে থাকে ' , 'সূর্যাস্তের উল্টোদিকে', 'সৈয়দ বংশের ফুল', 'ভালোবাসা আগুনের নদী ' ইত্যাদি তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ। কবিতায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি অর্জন করেছেন ১৯৭৭ ও ১৯৭৮ সালে টানা দুইবার শ্রেষ্ঠ তরুণ কবি হিসেবে স্বীকৃতিস্বরূপ 'বাংলাদেশ সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার' , 'কবিকুঞ্জ পুরস্কার -২০১১ ', 'বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (কবিতা) -২০২১' সহ উল্লেখযোগ্য সম্মাননা। অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০২২ প্রসঙ্গে কথা বলেন এই লেখক। ]

 

প্রশ্ন : অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২২ কেমন দেখতে চান?
উত্তর : এটি শুধু গ্রন্থমেলা নয়, লেখক-প্রকাশক আর পাঠকের মিলনমেলা। বাঙালির উৎসের উৎসবও বটে। প্রতিকূল অবস্থায় এ মেলার প্রকৃত আনন্দ প্রাণখুলে কীভাবে উপভোগ করা যায় তা একটু শঙ্কিত। পুরোপুরি স্বাস্থ্য বিধি মেনে সবাই মেলায় আসবেন সেটা নিশ্চিত করা চাই।

প্রশ্ন : এ বছর আপনার কি কি বই আসবে? কেন প্রকাশনা থেকে?
উত্তর : এ বছর আমার ৬টি কাব্যগ্রন্থ আসবে । পাঞ্জেরী পাবলিকেশন নিউ থেকে আসতে যাচ্ছে 'স্বনির্বাচিত কবিতা'। 'শ্রেষ্ঠ কবিতা' প্রকাশ করছে কাগজ প্রকাশন। এ ছাড়া  জিনিয়াস পাবলিকেশন থেকে প্রকাশিত হবে ৩টি নতুন কাব্য 'হাওরের পাখি ও অন্যান্য, অদৃশ্য জল্লাদ,  পিতা ও পতাকা। আগামী প্রকাশনী থেকে বের হচ্ছে 'জেগে ওঠে কফিনের কাঠ'।

প্রশ্ন : প্রকাশিতব্য বই সম্পর্কে জানতে চাই।
উত্তর :  ৩টি নতুন কাব্যসহ এবছর সব কাব্যগ্রন্থই আসবে।

প্রশ্ন : আপনার লেখা প্রথম বই প্রকাশের অনুভূতি কেমন ছিল? যদি বলতেন-
উত্তর : বই প্রকাশের আনন্দ অন্যরকম। বর্তমানে সহজে ও স্বল্প সময়ে একটি বই প্রকাশ করা সম্ভব কিন্তু তখন তা সহজ ছিল না।এখন তো সব প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে গেছে। সারা রাত জেগে জেগে ছাপার কাজ শেষ করে ছুটেছি প্রচ্ছদ-মুদ্রনের জন্য আরেক প্রেসে। প্রচ্ছদ ছাপার  পর বুকবাইন্ডার খুঁজতে খুঁজতে দিন শেষ। বাইন্ডারকে বিশ টাকা অগ্রিম দিয়ে এক রাতে ১০০ কপি বই দিতে রাজি করালাম। সে কী উত্তেজনা! পরের দিন  বাঁধাই করা বইটি হাতে পেয়ে। আজ তা বুঝাতে পারবো না।  মনে হয়েছিল পৃথিবীর সমস্ত ঐশ্বর্য ও সুন্দর সে মুহূর্তে আমার কব্জায়।  সে এক অতুলনীয় আনন্দ।

প্রশ্ন : অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২১-এর অভিজ্ঞতা কেমন?
উত্তর : দুঃখিত, কোভিডজনিত কারণে গত বইমেলায় যেতে পারিনি। কাজেই গতবছরের অভিজ্ঞতা আমার নেই। তবে শুনেছি মেলা খুব একটা জমেনি। প্রকাশকগণ দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। এবার আশা করি, উৎসবমুখর একটি পরিবেশ পাব।

প্রশ্ন : বইমেলার পরে আমাদের বই খুঁজে পাওয়া যায় না এবং দোকানও স্বল্প, এই পরিস্থিতিতে বই পাঠকের কাছে পৌঁছাতে আপনার ভাবনা যদি জানাতেন।
উত্তর : বই বিপণন ব্যবস্থা আরও পাঠক বান্ধব করা যায় কীভাবে তা নিয়ে লেখক-প্রকাশক-পাঠকদের একটি ফোরাম করা যেতে পারে। জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্র পাঠাগার স্থাপন ও পরিচালনার ক্ষেত্রে সহায়তা দিয়ে থাকেন।  এ- ক্ষেত্রে গ্রন্থকেন্দ্র একটা উদ্যোগ নিতে পারে।  বছরে অন্তত দুবার তারা রামর্শ দিতে পারেনÑবই বিপণন সহজ ও বই সহজলভ্য করার বিষয়ে।