খালেদ চৌধুরীর

‘পাস নম্বর ৩৩’ থেকে

nonameএকুশে গ্রন্থমেলা ২০১৭-তে খালেদ চৌধুরীর কবিতার বই ‘পাস নম্বর ৩৩’ প্রকাশিত হচ্ছে বেহুলা বাংলা  প্রকাশনী থেকে। বইটির প্রচ্ছদ এঁকেছেন মোস্তাফিজ কারিগর।



চোরসন্ধি

সেলোয়ারের ত্রিতলে
বকুল ফুলের লাল
ঘুম
রাতের
গভীরে
চু
ঢেলে
দেয়
গলে যাওয়া শব্দের পুস্তিকায়
নিকষ অন্ধতার স্রাব অপস্রিয়মাণ

চোরসন্ধির অধিকার বাগানে খয়েরি পাতা

ভাত শালিক

আরো এক তলা উঠবে বলে
পাঁচ তলা ছাদে পিলারের রড দৃশ্যমান।
একটা পিলারের সাথে আর একটা পিলারের—
                              দড়ির সংযোগ:
ঝুলন্ত দড়িতে প্যান্টের পাশে ব্রা শুকায়;
হলুদ বনের কাঁচা ঘ্রাণ
অরণ্যের বাঘকে উষ্কে দিলে
মশারির ভেতর মরিচ বাতি আয়োজন
রাত উজ্জ্বল ঊরুর রাঙা সুষমা।
তারারা ঘুমুতে গেলে মোরগ ডাকার সময় হয়

দিনের আলোয় অবশিষ্ট খুঁদ খায় ভাত শালিক।

সকালি ঘুমের পরিবর্তে

রোদসোনালি শাড়িতে জানলায় হাঁক দেয় সে
কে তুমি এখনো ঘুমাও, বের হও—দেখ—
আমাকে মাপ মতন জড়িয়ে ধর, আঁচল ধরে টান
দুধসিগ্ধ আলোয় ধুয়ে ফেল তোমার বিলাপি দেহ।


বিষাদ সরোবর


বিষাদ কথা কয় : চৈত্রে-মরুভূমিতে-হিরোসিমায়
অরণ্যে থাকলে বাঘ শিকারের নামে
                  আত্মহত্যার ছবক নিতাম।
কতটুকু জ্বললে দুঃখগুলো বৃষ্টি হয়?
সমুদ্রে মিশে নোনা হওয়া যায়।  

কী  পরিমাণ পাষাণের যোগফল ঈশ্বর!

চারিপাশের মৃত্যুরা মহাকালের প্রিয়জন
মানুষ সম্পর্কে বিধাতার অনুসিদ্ধান্ত চলতে থাকে
মস্তিষ্ক রেফ্রিজারেটরে রাখলে হীম নামে
            মাথার ভেতর অদ্ভুত অন্ধকার
ঘুম নেই, যৌনতা নেই, ক্ষুধা নেই।



ঘাস

সবাই পাখির ডানার কথা বলে
গাছের বুঝি ডানা নেই;
নুনের প্রসঙ্গ ওঠলে—
ঘামের সংলাপ পাশ কাটিয়ে
সমুদ্র বিলাপে
অধিকতর মনোসংযোগ
—এটা ঠিক না।

আবর্জনার শত্রুতার মাঝেও
সূর্যের পিপাসায় ঘাস কাতর
দূর্বারও রয়েছে উদ্ভিদ প্রাণ।

আঙুরলতা


মৃতদের সমান বয়সী আঙুরলতাটি
আমাদের ভাড়া বিল্ডিং-এর কোণায়
অজগর সাপের মতো কুণ্ডুলি পাকিয়ে ঘুমায়
                         কার্বন খায় পাতা ঝড়ায়
তার গায়ে হাঁটতে দেয় সোনালি পোকা;

কোনোদিন ফুল ফুটতে দেখি না

বাবাকে শুধাই বাবা : আঙুর ধরে না ক্যান?
মা আমার অবিরাম পানি ঢালে গাছের গোড়ায়...




খালেদ চৌধুরী। জন্ম ৯ নভেম্বর ১৯৮৫ কুমিল্লায়। ছোটগল্পও লেখেন।