মেলায় এসেছে জহর সেনমজুমদারের শ্রেষ্ঠ কবিতা

noname
একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে জহর সেনমজুমদারের ‘শ্রেষ্ঠ কবিতা।’ বইটি প্রকাশ করেছে কাগজ প্রকাশন। স্টল নং : ৪২০-২১। প্রচ্ছদ এঁকেছেন, মাসুক হেলাল। অলঙ্করণ করেছেন, মোস্তাফিজ কারিগর। ২৪০ পৃষ্ঠার এই বইয়ের মূল্য ৪০০ টাকা।

বইয়ের ভেতরে লেখকের একটি ছোট ভূমিকা এবং নিজের কবিতা ভাবনা আছে। এছাড়া শেষে পাঠ অভিজ্ঞতা লিখেছেন, তপোধীর ভট্টাচার্য এবং শামীম রেজা। পাঠকদের জন্য ভূমিকাটি প্রকাশ করা হলো:

অন্তর্গত রচনা
লিখবার পর, লেখা হয়ে যাবার পর, প্রথম প্রথম বেশ কিছুদিন, মনে হয়, দারুণ লিখলাম, জীবনের শ্রেষ্ঠ কবিতা লিখলাম; কয়েক সপ্তাহ পর, আরও আরও কয়েক সপ্তাহ পর, যখন কবিতাগুলো আবার পড়লাম, তৎক্ষণাৎ মনে হলো—খুব একটা মারাত্মক কিছু নয়; ভালো—তবে ততখানি যেন অন্তর্গত সংরচনায় খুব বেশি ভালো বলে মন যেন মানতে পারছে না; সুতরাং পরিমার্জন দরকার; বেশ কিছুদিন পর, আরও আরও বেশ কিছুদিন পর, পরিমার্জন করতে গিয়েই চৈতন্যে আঘাত নেমে আসে; ঝুঁটি বাধা মন ঝুঁটি নেড়ে বলতে থাকে, না, কিচ্ছু হয়নি, কিচ্ছু না; সুতরাং এইভাবেই একদিন শ্রেষ্ঠ কবিতাগুলো নিজের কাছেই ক্রমশ হাস্যকর প্রহসন হয়ে দাঁড়ায়; কাল যাকে লিখিত মুগ্ধতায় শ্রেষ্ঠ কবিতা মনে হয়েছিল, সময়ের পর্বে পর্বান্তরে একসময় শূন্য মনে হয়; সব শূন্য মনে হয় ...
তবুও আমরা বলি—শ্রেষ্ঠ কবিতা; আসলে বন্ধ ঘরে চাবি খুলে ভেতরে প্রবেশ করলে টিকটিকি যেমন ছবির পেছনে লুকিয়ে পড়ে, শ্রেষ্ঠ কবিতাও অনেকটা তাই; একজন আত্মমগড়ব কবিও সারাজীবন প্রাণপণে তার লুকিয়ে লিখবার পর, বহুদিন পর, আমিও আজ খুঁজতে বার হয়েছি আমারই লুকিয়ে পড়া ছলপুট শ্রেষ্ঠতাকে; হাস্যকর শ্রেষ্ঠতাকে; গহনগভীর অন্ধকারাচ্ছন্ন বনভূমির ভেতর হ্যারিকেন জ্বালিয়ে সরু সর্পিল পথ ধরে ক্রমাগত এগিয়ে যাচ্ছি আর একটার পর একটা সাপ সুরুৎ করে ঢুকে যাচ্ছে ঘাসের তলায় জঙ্গলের ফাঁকফোকরে; অনেকটা যেন ওই শ্রেষ্ঠ কবিতারই মতো; সারাক্ষণ চলছে একটা লুকোচুরি খেলা; আমার সঙ্গে শ্রেষ্ঠ কবিতা খুঁজতে বার হয়েছে শামীম রেজা, কবির হুমায়ূন, পারভেজ হোসেন, মাসুদুজ্জামান, জাহিদ সোহাগ; অন্ধকারাচ্ছন্ন বনভূমির ভেতর খুঁজতে খুঁজতে ওরা হঠাৎ হঠাৎ যতবার চিৎকার করছে—পেয়েছি, পেয়েছি, ততবারই অন্তর্গত সংরচনায়, আমিও কিন্তু পাল্টা ফিসফিস করে একটা কথাই শুধু বলে যাচ্ছি—পাইনি; পাইনি...