৩৯ বছরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

ইবি-৩৩বাংলাদেশে ইসলামী গবেষণা বা শিক্ষার প্রসারে ইসলামী বিশ্ববিশ্ববিদ্যালই সর্বপ্রথম স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান। ২২ নভেম্বর ১৯৭৯ সালে তৎকালীন সরকার কুষ্টিয়ার শান্তিডাঙ্গা-দুলালপুরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে। পরবর্তীতে স্থান পরিবর্তনসহ নানা প্রতিকূলতার পর এ বিশ্ববিদ্যালয় তার শিক্ষাকার্যক্রম শুরু করে ১৯৮৫ সালে। এরপর ১৯৮৫-৮৬ শিক্ষাবর্ষে থিওলজি অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদ এবং মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়টি। আগামী ২২ নভেম্বর ৩৮ বছর শেষে ৩৯ বছরে পদার্পণ করবে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। বর্তমানে ৫টি অনুষদের অধীনে ২৫টি বিভাগ, ১টি ইনিস্টিউট, প্রায় ১৩ হাজার শিক্ষার্থী, ৩৫৬ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা, ৩০০ জন কর্মকর্তা, ১৭৯ সহায়ক কর্মচারী এবং ২৯৫ জন সাধারণ কর্মচারী নিয়ে পরিচলিত হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রয়েছে প্রায় ১হাজার ৪০০ ফাযিল ও কামিল মাদ্রাসা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. মাহবুবর রহমান বলেন,‘বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় অন্যান্য যেকোনো সময়ের চেয়ে প্রতিটি ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। একাডেমিক, অবকাঠামোগত ও আইন-শৃঙ্খলাসহ সব ক্ষেত্রেই অভূতপূর্ব উন্নয়ন হচ্ছে।’

ইবি-১বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী তাসনিম লিমা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার আগে সেশনজটের ভয়াবহয়তার কথা শুনেছিলাম কিন্তু ভর্তি হওয়ার পর দেখলাম অবস্থা পাল্টে গেছে। নির্দিষ্ট সময়ে ক্লাস পরীক্ষা হওয়ায় সেশনজট প্রায়  কেটে গেছে।’

বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান বলেন,‘বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে ইন্টারনেট সংযোগ নিরবিচ্ছিন্ন থাকায় শিক্ষর্থীরা উপকৃত হচ্ছে। পড়াশোনার জন্য এখন তারা লাইব্রেরিতে বেশি সময় ব্যয় করছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার ও আইন বিভাগের প্রফেসর ড. সেলিম তোহা বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় একটি নিভৃত পল্লীতে অবস্থিত হওয়ায় এটি শহুরে কোলাহল মুক্ত। এই প্রান্তিক অবস্থানে থেকেও আমার বিভাগেরসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কর্মক্ষেত্রে দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সফলতার সাক্ষর রেখে চলেছে।’

ইব-২২বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. রাশিদ আসকারী বলেন,‘এ বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে আমি অনেক বড় স্বপ্ন দেখি। একটি সুন্দর ক্যাম্পাসে একটি সুন্দর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস এই চিন্তাকে সামনে রেখে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি গবেষণা নির্ভর আন্তর্জাতিক মানের ও আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।’

তবে বিভিন্ন সমস্যা কারণে বিশ্ববিদ্যালয় তার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও বর্তমানে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. ম. আনোয়ার হোসেন বলেন,‘বিশ্ববিদ্যালয় পর্যাপ্ত আবাসন সুবিধা না থাকায় অধিকাংশ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ থেকে যথাক্রমে ২৪ ও ২২ দীর্ঘ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে বিশ্বদ্যিালয়ে আসতে হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৩৮ বছর পরেও এখানে নেই পর্যাপ্ত গবেষণার সুযোগ-সুবিধা।’