খাদ্যে ফরমালিন ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের আহ্বান রাষ্ট্রপতির

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদফরমালিনের বিষক্রিয়ার ফলে জাতি হিসেবে আমরা পঙ্গু হয়ে যাচ্ছি বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তিনি বলেন, ‘ফলমূল, শাকসবজিসহ সবকিছুতেই এখন ফরমালিন। এসব খাওয়ার ফলে দেশে ক্যান্সার রোগী বাড়ছে। গত ২০-৩০ বছর আগেও এত ক্যান্সার রোগীর কথা আমরা শুনতাম না। অথচ বর্তমানে ফরমালিনযুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে ক্যান্সারের এ সংখ্যা বাড়ছে। এ কারণে ধীরে-ধীরে আমরা জাতি হিসেবে পঙ্গু হয়ে যাচ্ছি।’

বুধবার (৮ জানুয়ারি) বিকালে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় সমাবর্তনে এসব কথা বলেন তিনি।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘একজন মানুষকে হত্যার অপরাধে ৩০২ ধারায় যাবজ্জীবন অথবা মৃত্যুদণ্ড হয়। অথচ কিছু মানুষ খাবারে ফরমালিন দিয়ে ব্যবসার নামে লুটপাট ও গণহত্যা চালাচ্ছে। দেশের সার্বিক বিষয় চিন্তা করে এদের বিরুদ্ধে সরকারি পদক্ষেপ ও সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি।’ 

আমাদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার মন-মানসিকতা উঠে গেছে মন্তব্য করে রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ‘শাহজালাল (রহ.) ও শাহ পরান (র.)সহ অসংখ্য ওলি-আউলিয়ার পুণ্যভূমি সিলেট। অথচ এখানকার রাস্তাঘাট দেখে মনে হচ্ছে আমাদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার মন-মানসিকতা উঠে গেছে। পলিথিন, কাগজপত্র, পেপার যাচ্ছেতাই পড়ে আছে রাস্তায়। অথচ বিদেশে থুথু ফেলারও সুযোগ নেই। আমরা যারা আছি তারা স্কুল,কলেজ,মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদেরকে মোটিভেট করতে হবে। আমরাসহ যারা দেশের বিভিন্ন স্তরের নেতারা আছেন, তারা দেশের সর্বস্তরের মানুষকে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করতে হবে।’

লিখিত বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি আরও বলেন,‘দেশের উন্নয়ন ও ইতিবাচক পরিবর্তনে তরুণ সমাজই মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে থাকে। আমাদের দেশও তার ব্যতিক্রম নয়। সুতরাং আজ তোমরা যারা গ্র্যাজুয়েট হলে আমার সামনে এই যে তরুণ প্রজন্ম, তোমরা এক একটি আলোর প্রদীপ। তোমাদের সবাইকে দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় এগিয়ে আসতে হবে। কাঁধে নিতে হবে দেশ ও জাতির দায়ভার। আমি মনে করি, তোমাদের মেধা ও শ্রমেই গড়ে উঠবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’। বিশ্ববিদ্যালয়ে কঠোর জ্ঞান তপস্যা ও শৃঙ্খলার মাধ্যমে তোমরা ডিগ্রি অর্জন করেছো। তোমরা ভালো করেই জানো তোমাদের বিদ্যালাভ ও সত্যিকার মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার পেছনে যারা শক্তি, সাহস ও অর্থ জুগিয়েছেন তারা হচ্ছেন এ দেশের জনগণ। তাই বাংলাদেশের জনগণের প্রতি জীবনব্যাপী তোমাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা জাতি প্রত্যাশা করে।’

সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ ইশফাকুল হোসেনের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। এছাড়া সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম। এসময় মঞ্চে সব অনুষদের ডিনরা উপস্থিত ছিলেন।