আটটি হলের তালা ভেঙে ঢুকে গেছে জাবির শিক্ষার্থীরা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অমান্য করে এরইমধ্যে ৮টি হলের তালা ভেঙে শিক্ষার্থীরা উঠে গেছে। তবে এখনও তাদের হল থেকে বের হয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনার পর হল খুলে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনও সিদ্ধান্ত দিতে না পারায় শিক্ষার্থীরা নিজ দায়িত্বেই উঠে গেছেন আবাসিক হলগুলোতে। বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেছে, মোট ১৬টি আবাসিক হলের ৮টিতেই উঠে গেছে শিক্ষার্থীরা।  

হলে শিক্ষার্থীদের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এ ব্যাপারে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে, সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।’

ক্যাম্পাসের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রক্টর বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের বারবার অনুরোধ করেছি, এখনও করছি তারা যেন হল থেকে বের হয়ে যায়। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ আছে সরকারি সিদ্ধান্তে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব কোনও সিদ্ধান্তে না। সরকারি সিদ্ধান্ত যেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা মানেন এটাই বারবার আমাদের অনুরোধ।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতি আমরা সরকারকে অবহিত করবো। এ ব্যাপারে আমরা সরকারের সঙ্গে কথা বলবো। সরকার যে সিদ্ধান্ত দেবে সে অনুযায়ী আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেবো।’

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কার্যালয় থেকে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়, আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যয়ভার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহন করবে। মিছিল, গণজমায়েত, আবাসিক হলের তালা ভাঙা সিন্ডিকেট সিদ্ধান্তের পরিপন্থী। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এর আগে, ১৬ মার্চ ২০২০ তারিখে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের জরুরি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ‘পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ক্যাম্পাসে দর্শনার্থীদের প্রবেশ এবং সকল ধরনের অনুষ্ঠান ও জমায়েত নিষিদ্ধ’ করা হয়েছিল।

পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা উত্তরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহিল কাফি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ ক্যাম্পাসের পেছনে গেরুয়া এলাকায় শতাধিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত আছি। পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে। গতরাতের পরিস্থিতি নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনও মামলা আমাদের এখানে করা হয়নি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য লায়েক সাজ্জাদ এনদেল্লাহ সাংবাদিকদের জানান, ‘এখনও মামলা করা হয়নি, মামলা করার জন্য কাজ চলছে।’

এদিকে আন্দোলনকারীরা বলছেন, ‘আমরা হলেই অবস্থান করবো। প্রশাসন কিছু করতে চাইলে প্রয়োজনে নতুন কর্মসূচিতে যাবো।’