শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের ওপর টিয়ারশেল ও লাঠিচার্জ, আহত শতাধিক 

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে মুক্ত করতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ছুড়েছে পুলিশ। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করা হয়েছে। এতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

রবিবার (১৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি ভবনের সামনে এই ঘটনা ঘটে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলামসহ ১৫ জন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী নাদিম নামে এক শিক্ষার্থী জানান, আইআইসিটি ভবনে ভিসি অবরুদ্ধ থাকা অবস্থায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভবনের সামনেই আলোচনা চলছিল। এর কিছুক্ষণ পর হঠাৎ পুলিশ সেখানে রাবার বুলেট ছুড়তে থাকে। শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে ঘটনাস্থলে ২০টির বেশি সাউন্ড গ্রেনেড (বোমা) নিক্ষেপ করে। 

এ সময় শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা শুরু করে পুলিশ। এতে শিক্ষার্থীরা এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন। শতাধিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। আহত শিক্ষার্থীদের সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে জানান নাদিম। 

পরে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে উদ্ধার করে উপাচার্য বাসভবনে নিয়ে নিয়ে যায় পুলিশ। বর্তমানে উপাচার্য বাসভবনের সামনে ২০-৩০ জন পুলিশ নিযুক্ত আছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. আলমগীর কবীরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

এর আগে দুপুর আড়াইটা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। ভবনের তিন তলার ৩৩৩ নম্বর কক্ষে কিছু কর্মকর্তা ও শিক্ষকসহ তিনি অবস্থান করেন। বিকাল ৪টায় আইআইসিটি ভবনের সামনে উপাচার্যকে মুক্ত করতে পুলিশ উপস্থিত হয়। এ সময় ‘ক্যাম্পাসে পুলিশ কেন? প্রশাসন জবাব চাই’ স্লোগানে ফেটে পড়েন শিক্ষার্থীরা।

বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হল প্রভোস্ট বডির সবার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবি ও অবস্থান কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের হামলার ঘটনার প্রতিবাদে চতুর্থ দিনের মতো আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশমুখ গোল চত্বরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এর ফলে রাস্তার উভয় পাশে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বাস ও ব্যক্তিগত গাড়িসহ অন্যান্য যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। 

ছাত্রীদের তিন দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, প্রভোস্ট কমিটি পদত্যাগ, হলের যাবতীয় অব্যবস্থাপনা দূর করে হলের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা, অবিলম্বে দায়িত্বশীল প্রভোস্ট কমিটি নিয়োগ দেওয়া। পাশাপাশি ছাত্রলীগের হামলার সুষ্ঠু বিচারের দাবিও জানান তারা। 

উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের সাথে হল প্রভোস্টের অসদাচরণের অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার রাত ৯টা থেকে আন্দোলনে নামেন বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীরা। সেদিন রাত ৩টা পর্যন্ত উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।

আরও পড়ুন—

উত্তাল শাবিপ্রবিতে পুলিশ মোতায়েন 

শাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগ