১১ দিন পর খুললো শাবির মূল ফটক ও ভবনগুলোর তালা

ভিসির পদত্যাগ দাবিতে বিগত দুই সপ্তাহ ধরে উত্তাল ছিল শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকসহ প্রশাসনিক ও শিক্ষাভবনগুলোতে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। তবে অনশনরত শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙার পরিপ্রেক্ষিতে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে ক্যাম্পাস পরিস্থিতি। দীর্ঘ ১১দিন পর খুলে দেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক ও তালাবদ্ধ করে রাখা প্রশাসনিক ও শিক্ষাভবনগুলো।

বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি)  সকাল থেকে ক্যাম্পাসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু হয়েছে৷ 

তবে অনশন ভাঙলেও ভিসির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষে মোহায়মিনুল বাসার বলেন,  বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক, অ্যাকাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবন খুলে দেওয়া হয়েছে। আমরা কোনও সহিংস আন্দোলন করতে চাইনি। তাই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে ভিসি পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে জানান তিনি। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক থেকে রড ও বালু ভর্তি বস্তা দিয়ে তৈরি বেরিক্যাড সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ ও চলাচলও স্বাভাবিক হয়েছে।   

মূল ফটকে কর্মরত এক নিরাপত্তাকর্মী বলেন, রাতে সবকিছু সরিয়ে নেওয়া হয়েছে গেট থেকে। রড কেটে মূল ফটক উন্মুক্ত করা হয়েছে। 

এদিকে প্রশাসনিক ও শিক্ষাভবনের কার্যক্রমও স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। সকাল থেকে বিভিন্ন ভবনের গেটের তালা খুলে দেওয়া হলে দাফতরিক কার্যক্রম শুরু হয়। 

ভিসি ভবনসহ প্রশাসনিক ও বিভিন্ন শিক্ষা ভবনের তালা খুলে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরাতবে ভিসির বাসভবনের সামনে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে আগের মতোই। এছাড়া প্রধান ফটকের সামনেও পুলিশ রয়েছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থানরত এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভূত পরিস্থিতি ও সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থেই পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। প্রশাসন থেকে যখন বলা হবে তখন ক্যাম্পাস ছেড়ে পুলিশ চলে যাবে, এমনটাই জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।

উল্লেখ্য, বুধবার বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক, লেখক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন হক অনশন ভাঙান শিক্ষার্থীদের। এর পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে। এর আগে গত ১৩ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার রাত থেকে প্রভোস্টের পদত্যাগসহ তিনদফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। পরে আন্দোলনরতদের ওপর ছাত্রলীগ ও পুলিশের হামলা হলে প্রতিবাদ জানিয়ে ১৬ জানুয়ারি থেকে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ, অবস্থান কর্মসূচি, গণস্বাক্ষর, আমরণ অনশন, মশাল মিছিল, উপাচার্যের কুশপুতুল দাহ, কাফন মিছিলসহ বিভিন্ন কর্মসচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া গ্রাফিতি ও দেয়াল লিখনসহ বিভিন্ন কর্মসূচিও পালন করেন তারা।