টিপ পরায় শিক্ষককে হেনস্তা, কনস্টেবলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি

রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় টিপ পরায় নারী শিক্ষককে হেনস্তার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন পূজা উদযাপন পরিষদ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতৃবৃন্দ। সোমবার (৪ এপ্রিল) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনের সামনে এ মানববন্ধন করেন তারা।

মানববন্ধন শেষে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ড. হিমাদ্রী শেখর রায়, সাধারণ সম্পাদক অশোক বর্মন অসীম, উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. নারায়ণ সাহা ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পূরবী চ্যাটার্জী প্রমুখ। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় বিশ্বে রোল মডেল হতে চলেছে বাংলাদেশ। কিন্তু মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির দিক থেকে এখনও পিছিয়ে রয়েছি আমরা। টিপ পরায় শিক্ষককে নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য যে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন, তার সেই সাম্প্রদায়িক চিন্তা আমাদের ব্যথিত করেছে। আমরা মনে করি, টিপ পরা বাঙালির ঐতিহ্য। এতে কোনও ধর্মীয় বিষয় নেই। তারপরও যদি কেউ ধর্মীয় বিশ্বাসে টিপ পরে, তাতে কারও এমন মন্তব্য করা উচিত নয়। আমরা টিপ পরা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওই সদস্যের কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই। ইতোমধ্যে জানতে পেরেছি, ওই পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।’

বক্তারা আরও বলেন, ‘টিপ পরা নিয়ে একজন নারীকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যের এমন মন্তব্য কুরুচিপূর্ণ ও উসকানিমূলক। এই মন্তব্যের প্রতিবাদ জানাচ্ছি। পাশাপাশি তাকে গ্রেফতার করায় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পুলিশ বাহিনীকে ধন্যবাদ জানাই। তবে তাকে গ্রেফতারের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।’

এর আগে সোমবার সকালে পুলিশ কনস্টেবল নাজমুল তারেককে শনাক্ত করে হেফাজতে নেওয়া হয়। ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার ওই কনস্টেবলকে শনাক্তের বিষয়ে বলেন, ওই কনস্টেবলের নাম নাজমুল তারেক। ঘটনার সঙ্গে জড়িত হিসেবে তাকে চিহ্নিত করেছি আমরা। সেই সঙ্গে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

শনিবার রাজধানীর গ্রিন রোডের বাসা থেকে কলেজে যাওয়ার পথে উত্ত্যক্তের শিকার হন তেজগাঁও কলেজের ওই প্রভাষক। তিনি অভিযোগ করেন, হেঁটে কলেজের দিকে যাওয়ার সময় পাশ থেকে মধ্যবয়সী, লম্বা দাড়িওয়ালা একজন ‘টিপ পরছোস কেন’ বলে গালি দেন। ওই ব্যক্তির গায়ে পুলিশের পোশাক ছিল।