টিএসসিতে চায়ের আড্ডায় কাটছে ঢাবি শিক্ষার্থীদের শীত

কয়েক দিন ধরেই সারা দেশের মতো রাজধানীতেও পড়ছে তীব্র শীত। আর এই শীতের তীব্রতা বাড়িয়ে দেয় অলসতা। কর্মজীবীদের যেমন কোনও কাজে মন বসে না, আবার শীতে কম্বল ছেড়ে ঘর থেকে বের হতে মন চায় না অনেকের। তবে এমন হাড়ভাঙা শীতে বেশি বিপদে পড়েন শ্রমজীবী মানুষ। শিশু ও প্রবীণ রোগীর ভিড় বাড়ে হাসপাতালে।

যেকোনও ঋতু উদযাপন করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি)। ঋতুভেদে থাকে নানা আয়োজন। এই শীতে ঢাবির শিক্ষার্থীরা সেমিস্টার ব্রেকে করছেন বারবিকিউর আয়োজন। এ ছাড়া রয়েছে বিভিন্ন বিভাগ ও জেলা সংগঠনের আয়োজন; হচ্ছে পিঠাপুলি আর পৌষ উৎসবও।

তবে এই শীতে ঢাবি শিক্ষার্থীদের সময় কাটছে টিএসসির চায়ের আড্ডায়। সকাল বেলা ক্লাসের ফাঁকে, ক্লাসের শুরুতে কিংবা ক্লাসে এক চুমুক চা-ই যেন কমিয়ে দিতে পারে শীতের তীব্রতা।

টিএসসিতে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও বারবিকিউর আয়োজন

টিএসসির লাল চা, গুড়ের চা, তেঁতুলের চা, মরিচের চা ও দুধের চাসহ হরেক রকম চায়ে শীত কাটাচ্ছেন তারা। প্রতিদিন সন্ধ্যা হলেই দলবেঁধে বন্ধুরাসহ টিএসসি চায়ের স্টলে ভিড় জমান।

টিএসসিতে সন্ধ্যায় চা পান করতে আসা শাহরিয়ার হোসেন বলেন, শীতের তীব্রতায় সকাল থেকেই হল থেকে বের হইনি। বিকাল বেলায় টিউশনি না থাকলে সন্ধ্যায় বন্ধুরাসহ টিএসসিতে চা খেতে আসি। আর টিএসসির চায়ে এখন শীত কাটাচ্ছি। চা খেলে কিছুটা শীত কমে অন্তত কিছুক্ষণের জন্য হলেও।

উর্দু বিভাগের শিক্ষার্থী অন্তরা তালুকদার বলেন, শীত আমাদের পছন্দের ঋতু। আর চা সবচেয়ে পছন্দের পানীয়। দুটিই যখন একসঙ্গে, তখন তো আর কথাই নেই। একটি শখের সঙ্গে অপরটির কোনও বিরোধ নেই। শীতটা মোটামুটি উপভোগ্য। তবে শীতের দিনের সবচেয়ে বাজে হচ্ছে সকাল ৮টার ক্লাস। এই শীতে এত সকাল ক্লাস করতে কার ভালো লাগে বলুন?

অনেক শিক্ষার্থী বাড়ি থেকে ফেরেননি এখনও

শীতকে চা বিক্রির মৌসুম বলছেন টিএসসির দোকানিরা। চা স্টলের মালিক মোহাম্মদ কালাম বলেন, শীত উপলক্ষে চায়ের বিক্রি বেশ ভালোই বেড়েছে। সঙ্গে বেড়েছে বিড়ি-সিগারেটের বিক্রিও। আর শীতকাল তো চা বিক্রির সময়।

এদিকে শীতকালীন ছুটি শেষ হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শীতকালীন ছুটি করে কিছু বিভাগ ক্লাস শুরু করলেও, বাড়ি থেকে ফেরেননি অনেক শিক্ষার্থী।

ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন বলেন, গত ১০ জানুয়ারি থেকে ক্লাস শুরু হলেও, অনেকেই এখনও বাড়ি থেকে ফিরেনি, তবে ক্লাস চলছে।

উল্লেখ্য, গত বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বহিরাগতদের উপদ্রব কমাতে ভ্রাম্যমাণ দোকান নিষিদ্ধ করার পর এখন আর শীতকালীন পিঠাপুলির দোকান বসে না বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়। যার ফলে কেউ কেউ এসব পিঠা মিস করলেও, বহিরাগতদের সমাগম কমায় খুশি শিক্ষার্থীরা।