তালা ভেঙে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হল দখল করলো ছাত্রদল-শিবির

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের তালা ভেঙে দখল নিলেন শাখা ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা। সোমবার (৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহজালাল ও শাহ আমানত হলের তালা ভেঙে বিভিন্ন কক্ষ দখল নিয়েছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর জানাজানি হওয়ার পরই শাখা ছাত্রদলের বিভিন্ন নেতাকর্মী ক্যাম্পাসে আসেন। একই সঙ্গে ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরাও ক্যাম্পাসে আসেন। পরে তারা ছাত্রলীগের দখল করা হলের বিভিন্ন কক্ষের তালা ভেঙে তল্লাশি করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও অনুষদের সাধারণ শিক্ষার্থীরাও সে সময় ছিলেন।

তারা তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী, শাহজালাল, শাহ আমানত, এএফ রহমান ও আলাওল হলের বিভিন্ন কক্ষে তল্লাশি চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ধারালো অস্ত্র ও একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের দাবি করেছেন।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি মোহাম্মদ আলাউদ্দিন মহসিন জানান, দীর্ঘদিন ধরে তাদের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন নির্যাতন সহ্য করে হলের বাইরে ছিলেন। এখন সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে যে যার বরাদ্দ করা কক্ষে উঠেছেন। তারা শাহ আমানত ও শাহজালাল হলের বিভিন্ন কক্ষে অবস্থান করছেন। এ বিষয়ে ছাত্রশিবিরের কারও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

ক্যাম্পাস সূত্র জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে হল রয়েছে ১৪টি। এর মধ্যে চালু আছে ১২টি। চালু থাকা হলের মধ্যে ছাত্রদের সাতটি, বাকি পাঁচটি ছাত্রীদের। ছাত্রীদের হলে বরাদ্দ প্রক্রিয়া চলমান। নিয়ম মেনে ছাত্রদের হলগুলোতে সর্বশেষ ২০১৭ সালের জুনে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। ২০১৯ সালে কর্তৃপক্ষ আসন বরাদ্দের বিজ্ঞপ্তি দেয়। সেবার প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষার্থী আবেদন করেছিলেন। এ ছাড়া ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পর আবেদন করেন এক হাজার ৬০ শিক্ষার্থী। আবেদন করলেও শিক্ষার্থীরা বৈধভাবে হলে উঠতে পারেননি।

এত দিন ধরে ছাত্রদের সাতটি হলে একক নিয়ন্ত্রণ ছিল ছাত্রলীগের। তবে এখন ধীরে ধীরে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা এই হলগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিতে শুরু করেছেন।

এদিকে, রাত পৌনে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুর করেছেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বঙ্গবন্ধু ম্যুরালের সামনে জাতীয় দিবসের বিভিন্ন সভা ও সমাবেশ হতো।

শাখা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেনের নেতৃত্বে এই ভাঙচুর করা হয়েছে বলে সূত্রে জানা গেছে। ভাঙচুরে নেতৃত্ব দেওয়ার বিষয়টি তিনি স্বীকার করেছেন। তবে এর বেশি কিছু তিনি বলেননি।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আবু তাহের জানান, তিনি বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন। এ বিষয়ে কিছু জানেন না।