তৈরি হচ্ছে রাজধানীর ভবনগুলোর ডাটাবেজ: আতাউল হক

আতাউল হকরাজধানীর ছোট-বড় সব ভবনের ডিজাইনের ডিজিটাল ডাটাবেজ তৈরির কাজ চলছে বলে জানালেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ও ফায়ার সার্ভিসের প্রকল্প পরিচালক আতাউল হক। তিনি জানান,  ডিজিটাল ফরমেটে ডাটাবেজ তৈরি হলে অনুমোদনের বাইরে ভবন নির্মাণকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে। ডাটাবেজটি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ করলেও ফায়ার সার্ভিসের ডাটাবেজের সঙ্গে এর শেয়ারিং থাকবে। যেন ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা যেকোনও দুর্যোগে উদ্ধার তৎপরতায় ঝাঁপিয়ে পড়তে পারেন।  শুক্রবার একান্ত আলাপকালে বাংলা ট্রিবিউনকে এ সব কথা বলেন।

আতাউল হক বলেন, আগের তুলনায় ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা অনেক বেড়েছে। এরপরও দেশের যেকোনও দুর্যোগে প্রথম সাড়াদানকারী সংস্থা ফায়ার সার্ভিসের কার্যক্রমে আরও আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, রাজউক ও ফায়ার সার্ভিসের সম্মিলিত পরামর্শে ও ডিজাইনে ভবন নির্মাণ করলে সাড়ে সাত মাত্রার ভূমিকম্পেও ক্ষয়ক্ষতি থাকবে খুবই সীমিত।

আতাউল হক বলেন, বর্তমানে ফায়ার সার্ভিস সড়ক ও নৌপথে যেকোনও দুর্ঘটনায় উদ্ধার কার্যক্রম চালাতে সক্ষম। নৌপথে উদ্ধার কার্যক্রম চালাতে চলতি বছর তিনটি জাহাজ যুক্ত হবে। যেগুলো খুলনা শিপইয়ার্ডে তৈরি করা হচ্ছে। এ বছরের শেষ নাগাদ এগুলো চালু করা যাবে বলে মনে করেন তিনি।

বাংলা ট্রিবিউনের অন্য এক প্রশ্নের জবাবে আতাউল হক বলেন, মাল্টিপারপাস ভেহিক্যাল ও এরিয়েল প্লাটফর্ম লেডার ফায়ার সার্ভিসের স্পেশাল ভেহিক্যাল। যা দিয়ে ২১ হাজার লিটার পানি ও ১৭ হাজার লিটার ফোম বহন করা যায়। এসব ভেহিক্যাল থেকে ৫৪ মিটার পর্যন্ত উচ্চতায় যেতে পারেন ফায়ারম্যানরা। যা আগে ১৬ তলা পর্যন্তও সামর্থ্য ছিল না। তিনি বলেন, যেখানে অত্যধিক তাপমাত্রার উপস্থিতিতে সহজে প্রবেশ করা যায় না, সেখানে কোল্ড কাট (কোবরা)-এর মাধ্যমে আগুন নেভানো যায়। কোবরা একটি আধুনিক অগ্নি নির্বাপণী সরঞ্জাম।  অতি উচ্চচাপে পানি ব্যবহার করে মেটাল, কংক্রিট জাতীয় পদার্থ কাটা ও ছিদ্র করার মাধ্যমে কনফাইনড স্পেসে এই সরঞ্জামের সাহায্যে প্রবেশ করা যায়। রয়েছে ইমারজেন্সি টেন্ডার (ইটি) নামের সরঞ্জামও।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই যুগ্মসচিব  ফায়ার সার্ভিসের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিসকে আরও সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে ২০২০ সালের মধ্যে মিরপুরে সদর দফতর প্রতিষ্ঠার জন্য ১০ তলা বিশিষ্ট ভবন তৈরি করবে। ২০১৭ সালের মধ্যে ৫৪৯টি স্টেশন করা হবে। বর্তমানে স্টেশন রয়েছে ২৯৫টি। পূর্বাচলে আধুনিক মানের ফায়ার একাডেমি করা হবে। এজন্য নয় একর জমি অধিগ্রহণ করে ফায়ার সার্ভিসের কাছে হস্তান্তর করেছে রাজউক।

আতাউল হক আরও বলেন, সারাদেশে ফায়ারম্যানদের সহযোগিতায় ৬ লাখ ২২ হাজার আরবান ভলান্টিয়ার সৃষ্টি করা হবে। যারা সাড়ে পাঁচশ স্টেশনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকবেন। এরইমধ্যে ৩০ হাজার আরবান ভলান্টিয়ার সৃষ্টি করা হয়েছে। যারা ফায়ারম্যানদের সঙ্গে বিভিন্নস্থানে কাজ করছেন। বর্তমানে ফায়ার সার্ভিসে আট হাজার ফায়ার ম্যান রয়েছেন। ২০১৮ সালে সেটা দাঁড়াবে ১৫ হাজারে। তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিসের ২০২০ সালের ভিশন হচ্ছে ২০ মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছানো। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দুর্যোগ মোকাবেলায় ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি রাস্তায় নামবে। ঘটনাস্থল থেকে হতাহতদের দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছাতে এ সংস্থার অ্যাম্বুলেন্স সেবাও সম্প্রসারণ করা হবে। বর্তমানে দেশের ১১১টি ফায়ার স্টেশনে ১৩৪টি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে।

/এমএনএইচ/