মঙ্গলবার দিবাগত রাতে একাত্তরের আলবদর কমাণ্ডার নিজামীর ফাঁসি কার্যকরের খবরে এমনই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন তারা। সবাই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে দল হিসেবে জামায়াতের বিচারের দাবি জানান।
শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. আব্দুল আলীমের স্ত্রী শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী বলেন, ফাঁসির রায় শুনে খুশি হয়েছিলাম আর কার্যকরের খবর শুনে স্বস্তি পাচ্ছি। তিনি বলেন, যে নিষ্ঠুরতার সঙ্গে একাত্তরে এই আলবদররা হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল তাদের ফাঁসিই একমাত্র শাস্তি। গত ৪৫ বছর ধরে আমরা শহীদ পরিবারের সদস্যরা এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করেছি। এখন দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বিচার দেখতে চাই।
শহীদ সন্তান তৌহিদ রেজা নূর বলেন, এ ধরনের অপরাধের বিচার কখনও তামাদি হয় না। একটা কথা নিশ্চিত, দায়মুক্তির ঘটনাগুলো ঘটছে এইসব রায় কার্যকরের মধ্য দিয়ে। আমরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও উদাহরণ সৃষ্টি করতে পারছি।
শহীদ সন্তান সাংবাদিক জাহীদ রেজা নূর ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, তোমাদের যা বলার ছিল, বলছে কি তা বাংলাদেশ? বাবা, জেনে রাখো, তোমাকে আর তোমার সতীর্থদের যারা নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল তারা শাস্তি পাচ্ছে।তোমার চওড়া কপালের ভাজে আমি গোটা বাংলাদেশ দেখতে পাচ্ছি।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবীর বলেন, একে একে শীর্ষস্থানীয় জামায়াত নেতার ফাঁসি কার্যকর হওয়ার স্বস্তি হচ্ছে। কিন্তু এও ভাবতে হবে, জামায়াত একেবারে বন্ধুহীন হয়ে যায়নি। তারা আন্তর্জাতিকভাবে ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত তৈরি করার কাজ করেই চলেছে। ফলে দল হিসেবে জামায়াতের বিচার হওয়া জরুরি। এ সংগঠনকে নিষিদ্ধ করে কার্যক্রম বন্ধ না করা পর্যন্ত পূর্ণ স্বস্তি হবে না।
মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ ট্রাস্টের পরিচালক সাব্বির হোসাইন বলেন, একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি কার্যকর করার মধ্য দিয়ে ন্যায়বিচার ও মানবতার জয় হলো। একাত্তরে আল-বদর বাহিনীর মত নৃশংস বাহিনী গঠন ও নেতৃত্ব দিয়েছিল নিজামী। একাত্তরে এত ভয়ংকর মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের পরও জিয়া ও বিএনপির মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে পুনর্বাসিত হওয়াসহ মন্ত্রীত্ব পর্যন্ত পেয়েছিল; এই কাজটি ছিল একাত্তরের শহীদ ও বাংলাদেশের প্রতি চরম অবমাননা। তার ফাঁসি কার্যকর হওয়ার মধ্য দিয়ে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের চার দশকের বিচারহীনতার অবসান হলো, আাইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হলো।
ছবি: নাসিরুল ইসলাম
/ইউআই/এজে