নিজামীর অপরাধের দালিলিক প্রমাণ

জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেষ বিচারে মৃদ্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার পরও তার অনুসারীরা তাকে ‘ইসলামী স্কলার’ বলার চেষ্টা করেন। যদিও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যালেই বিচারের সময় জমা দেওয়া হয় দালিলিক নানা প্রমাণ এবং নিজামীর কার্যকলাপের যে প্রমাণাদি রয়েছে তাতে তিনিই মানবতাবিরোধী অপরাধী ও আলবদর কমান্ডার।

১. একাত্তরে নিজামীর ভূমিকাজামায়াতের আজকের আমির নিজামী চার দশক আগে ছিলেন জামায়াতেরই ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের নাজিমে আলা বা সভাপতি। সেই সূত্রেই পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতার জন্য গঠিত আলবদর বাহিনীর প্রধান হন তিনি। সাধারণ স্বাধীনতাকামী বাঙালির ওপর দমন-পীড়ন চালাতে পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতার জন্য গঠিত রাজাকার বাহিনী ও শান্তি কমিটিতেও নিজামীর ভূমিকার কথা উল্লেখ আছে ট্রাইবব্যুনালের রায়ে। সেখানে বলা হয়েছে, একাত্তরে জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের সভাপতি ও আল-বদর বাহিনীর প্রধান নিজামী নিজে বিভিন্ন অপরাধের ঘটনায় অংশ নেন।

২. একাত্তরে নিজামীর ভূমিকাছাত্রসংঘ নামে পরিচিত একাত্তরের আলবদর বাহিনী গঠনকারী এই সংগঠনের মূল নাম জমিয়তে তালাবা। পাকিস্তানে এখনও ওই নামে চলে তাদের কার্যক্রম। জমিয়তে তালাবার ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ১৯৬৯ সালের নভেম্বরে বার্ষিক সম্মেলনে প্রথমবারের মতো নিজামীকে নাজিমে আলা নির্বাচিত করা হয়। লাহোরে অনুষ্ঠিত ওই সম্মেলনে ২ হাজার ৩৪০ জন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
দীর্ঘ শুনানির পর দীর্ঘ ৫ বছর পর এসে বিচারকাজ শেষে শেষবিচারেও নিজামী ফাঁসি বহাল থাকে। ১৯৭১ সালে নিজামীর ভূমিকা অস্বীকারের সুযোগ নেই কেননা জামায়াতের বক্তৃতা বিবৃতি এবং সংবাদপত্রে নিজামীর বিরোধীতার বিস্তর প্রমাণ রয়েছে।৩. একাত্তরে নিজামীর ভূমিকা
ট্রাইব্যুনালের পূর্ণাঙ্গ রায়ের ১৬১ পৃষ্ঠায় বলেছে, একাত্তরের ৫ আগস্ট দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকায় নিজামীর একটি বক্তব্য প্রকাশিত হয়। তাতে নিজামী বলেন, ‘পাকিস্তান আল্লাহর ঘর। আল্লাহ একে বারবার রক্ষা করেছেন। ভবিষ্যতেও রক্ষা করবেন। দুনিয়ার কোনও শক্তি পাকিস্তানকে নিশ্চিহ্ন করতে পারবে না।’
ট্রাইব্যুনাল বলেন, নিজামীর এ বক্তব্য স্পষ্টতই সুরা হজের ২৬ নম্বর আয়াতের বিকৃতি। কারণ, এই সুরায় একমাত্র কাবাঘরকে আল্লাহর ঘর বলা হয়েছে। কিন্তু নিজামী পাকিস্তানকে আল্লাহর ঘরের সঙ্গে তুলনা করেছেন।
ছবি কৃতজ্ঞতা: সিজিবিআর