ভবিষ্যতে গণমাধ্যম হবে অনলাইন নির্ভর

আলী যাকেরপ্রথমেই বলি যে, আমাদের দেশে অনলাইন মিডিয়া এখনও সেভাবে প্রসার লাভ করেনি, যেমন বহির্বিশ্বে করেছে। এর প্রধান কারণ হতে পারে টেকনোলজি। কারিগরিভাবে আমরা সেরকম দক্ষতা অর্জন করিনি। অনলাইনের প্রসারে যতটুকু স্বয়ংসম্পূর্ণতা দরকার, তার অনেকখানি ঘাটতি আছে। তবে অচিরেই সে দক্ষতা অর্জন করতে যাচ্ছি বলেই আশা করছি।
যদি সোশ্যাল মিডিয়ার কথা ধরি, তবে বলা যায় আমরা বেশ এগিয়েই যাচ্ছি। এখন প্রায় তিন কোটি জনগণ ফেসবুক ব্যবহারকারী। ভবিষ্যতে প্রিন্ট মিডিয়া তো অনলাইনভিত্তিক হবেই; সঙ্গে ভিজুয়াল বা টেলিভিশনও অনলাইনে প্রচার-প্রসার লাভ করবে।
এখনই প্রিন্টেড মিডিয়ার ব্যাপ্তির চেয়ে অনলাইনের ব্যাপ্তি অনেক বেশি। পত্রপত্রিকার ক্ষেত্রে কাগজে ছাপিয়ে সেটি মানুষের বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। আবার অনেককে ব্যক্তিগতভাবে সংগ্রহ করতে হয়। এখানে অর্থের বিনিময়ও আছে। আমি নিয়মিত ঢাকা ট্রিবিউন পড়ি। এটির সার্কুলেশন কতই আর হবে। সর্বোচ্চ ৫০ হাজার লোকের কাছে পৌঁছে। ভবিষ্যতে আরও কম হবে, কারণ মানুষ পড়া থেকে দূরে সরে আসছে।
তবে অনলাইনের মজার বিষয়টি হচ্ছে, কম্পিউটারের একটি চাবি ঘুরিয়ে আমি ৮-১০টা পত্রিকা ঘুরে আসতে পারি। বাংলা ট্রিবিউন থেকে শুরু করে নিউ ইয়র্ক টাইমস সবকিছুই একসঙ্গে পড়তে সময়, শ্রম কোনওটাই  বেশি লাগে না। ভবিষ্যতে এটিই প্রধান গণমাধ্যম হবে নিশ্চিত।
একটি কথা না বললেই নয়, ছাপা পত্রিকার সঙ্গে আমাদের আবেগ জড়িয়ে আছে। ছাপার কাগজের গন্ধের যে মাদকতা, সেটি অনলাইনে পাওয়া যায় না। এখানে নিজস্বতার একটি বিষয় আছে। ১৬ পাতার পত্রিকাটিকে আমি অনুভব করি। এগুলো অবশ্য আবেগীয় ও দর্শনজাত বক্তব্য।
বাংলা ট্রিবিউন নিয়মিত নয়, মাঝে-মধ্যে পড়া হয়। এই নিউজ পেপারটির সবচেয়ে শক্তিশালী দিক  হচ্ছে সংস্কৃতি। বাংলা ট্রিবিউন শতায়ু হোক এবং তাদের ছায়ায় শিক্ষিত বাঙালি তৈরি হোক। মেধা এবং মননের সন্নিবেশ ঘটুক- এটাই আমার আশা। যদি জাতিকে শিক্ষিত করে তোলা না যায়, তবে তারা পড়া থেকে দূরে চলে যাবে। এবং এটি আদতে ক্ষতির কারণ হবে। তারা অনলাইন বা পত্রিকা কোনওটাই পড়বে না।
বাংলা ট্রিবিউনকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা।

লেখক: নাট্যব্যক্তিত্ব

আরও পড়ুন:  কাজী আনিস আহমেদবর্তমানের অনলাইন ভবিষ্যতের বাতিঘর

/এপিএইচ/