অনলাইন সাংবাদিকতা নিয়ে আমি হতাশ। তবে কিছুটা আশার আলোও দেখতে পাই। কারণ হাজারও অনলাইনের ভিড়ে দু-চারটা অনলাইন নিউজসাইট ভালো করছে। তাদের জবাবদিহির চর্চা আছে, দায়বদ্ধতা রয়েছে। এসব নিউজ পেপার কোনও সংবাদ প্রকাশের আগে একাধিকবার ভাবে, ক্রস চেক করে এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সংবাদ প্রকাশ করে। যেসব অনলাইন গণমাধ্যম দায়িত্ব নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করছে, যেগুলো সমাজ, দেশ, মানবিকতা ও দেশপ্রেমকে গুরুত্ব দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করছে, সেগুলো দীর্ঘদিন টিকে থাকবে। ভালো অবস্থানে থাকবে।
আজকাল যেন অনলাইন সাইট তৈরি করা খুব সহজ হয়ে গেছে। বিডির সঙ্গে কিছু একটা দিয়ে তার সঙ্গে টোয়েন্টিফোর জুড়ে দিয়েই অনলাইন করা হচ্ছে। তারা মানের দিকে তাকাচ্ছেন না। কপি পেস্ট করে ভিত্তিহীন খবর প্রকাশের মাধ্যমে তারা জনপ্রিয়তা পাচ্ছেন। যখন কোনও সমস্যা হচ্ছে, তখনই নাম বদলে আরেক নামে আসছে। এগুলো বেশিরভাগই হচ্ছে দেশের বাইরে থেকে।
আমরা এখন আর আগের দিনের খবর পড়তে পরের দিনের সংবাদপত্রের জন্য অপেক্ষা কারি না। ঘটনা ঘটার পরে তা জানার জন্য অনলাইনকেই বেছে নেই। অফিসের কম্পিউটারে কখনও চোখ বুলিয়ে নেই। চলার পথে থাকলে টেলিভিশন দেখার সুযোগ পাই না। তখন মোবাইল ফোনটাকে বেছে নেই। ফলে প্রতিনিয়ত আপডেটও থাকতে পারি।
আমি মনে করি, একটি নীতিমালা অবশ্যই থাকা উচিত। আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে চাই না। তবে জবাবদিহিতা থাকতে হবে। মানুষের মত-প্রকাশের স্বাধীনতা ও অধিকার থাকবে। আমরা এসবের বাধা হতে চাই না। কিন্তু অনলাইনগুলোর দায়বদ্ধতা থাকা জরুরি। প্রয়োজনে আমরা অনেক সময় সংশ্লিষ্ট সাইটের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারি না। ঠিকানা খুঁজতে গিয়ে দেখা গেল, সাইটের কোনও ঠিকানা নেই। একটা নীতিমালা থাকলে সবার মাঝে একটা দায়বদ্ধতার জায়গা তৈরি হবে। আমি তথ্যমন্ত্রীকে বলেছি, অনলাইন এক হাজার বা দুই হাজারটা থাকতে পারে। কিন্তু তাদের একটা ন্যূনতম মান, দায়বদ্ধতা এবং জবাবদিহি থাকতেই হবে।
অনলাইন নিউজ পেপারগুলোকে সবসময় চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করতে হয়। সময়ের সঙ্গে চলাটাই তাদের বড় চ্যালেঞ্জ। একটা ঘটনা ঘটলে দ্রুত নিউজ আপলোড করতে হয়। ঘটনা সংঘটন এবং নিউজ প্রকাশের মাঝে সময় খুব বেশি থাকে না। এই সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে খবরের নির্ভরযোগ্যতা, সত্য-মিথ্যা যাচাই করেই খবর প্রকাশ করা উচিত।
অনলাইন নিউজ পোর্টালের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। নিয়মতান্ত্রিকতার মধ্যে থাকলে অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলো অনেকদূর যাবে। আগামী দিনে তা হয়ে উঠবে মূলধারার শক্তিশালী গণমাধ্যম।
শ্রুতিলিখন: হিটলার এ. হালিম
আরও পড়ুন: অনলাইন পত্রিকা জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনে অবদান রাখছে
/এপিএইচ/আপ-এমও