রমজান ও ঈদে চাঁদাবাজি বন্ধে বিশেষ ব্যবস্থা পুলিশের


পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠকআসন্ন পবিত্র রমজান মাস ও ঈদ উল ফিতরকে কেন্দ্র করে সব ধরনের চাঁদাবাজি বন্ধে তৎপর থাকতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক। রমজান ও ঈদ উপলক্ষে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (২৪ মে) দুপুরে পুলিশ সদর দফতরের সম্মেলন কক্ষে পবিত্র রমজান ও ঈদ উল ফিতর উপলক্ষে আইন-শৃঙ্খলা এবং ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সভায় সভাপতিত্বকালে আইজিপি এ নির্দেশ দেন। তিনি খাদ্যে ভেজালবিরোধী অভিযান পরিচালনার ওপর জোর দেন।
সভায় ঢাকা মহানগরসহ সারা দেশে চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ রোধে বিশেষ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রেলওয়ে স্টেশন, বাস ও লঞ্চ টার্মিনালে পকেটমার ও অজ্ঞানপার্টির তৎপরতা প্রতিরোধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিয়োজিত থাকবেন। ঢাকা মহানগরীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের বড় বড় শহরে বিপনী বিতান ও শপিংমল যথাসম্ভব সিসিটিভির আওতায় এনে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জনসাধারণের কেনাকাটার সুবিধার্থে এবং তারাবির নামাজের সময় অপরাধমূলক তৎপরতা প্রতিরোধে গভীর রাত পর্যন্ত নৈশ টহলের ব্যবস্থা করা হবে। ব্যাংক ও অর্থলগ্নি প্রতিষ্ঠানে বড় অংকের আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে পুলিশ জনসাধারণকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবে। মহাসড়কে ডাকাতি প্রতিরোধ এবং যানজট নিরসনে হাইওয়ে এবং জেলা পুলিশ বিশেষ তৎপর থেকে দায়িত্ব পালন করবে।

পুলিশ প্রধান বলেন, মাদক উদ্ধার অভিযান জোরদার করতে হবে। সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন, জনগণের সঙ্গে পুলিশের দূরত্ব কমাতে হবে। তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া মহাসড়কে তল্লাশির নামে যানবাহন থামানো যাবে না বলেও নির্দেশ দেন আইজিপি।

সভায় অতিরিক্ত আইজিপি (অ্যাডমিন অ্যান্ড অপস) মো. মোখলেসুর রহমান, সিআইডির অতিরিক্ত আইজিপি শেখ হিমায়েত হোসেন, রেলওয়ে রেঞ্জের অতিরিক্ত আইজিপি মো. আবুল কাশেম, এপিবিএন’র অতিরিক্ত আইজিপি মো. সিদ্দিকুর রহমান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া, সকল পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ, হাইওয়ে, রেলওয়ে, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ, নৌপুলিশসহ অন্যান্য ইউনিটের ডিআইজি, টাঙ্গাইল, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপারগণ, পুলিশ সদর দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, র‌্যাব, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, আনসার এবং বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিনিধিরা উপস্থিতি ছিলেন।

সভায় পবিত্র রমজান মাসের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা, ট্রেন, বাস ও নৌপথে নিরাপদে চলাচল ও যাত্রীদের নিরাপত্তা, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনা, ঈদ জামায়াতের নিরাপত্তা এবং জাল টাকার অপব্যবহার রোধ ইত্যাদি সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করা হয়।

নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনের কার্যক্রম নিবিড় মনিটরিং এবং গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

ঈদ উদযাপনের জন্য ঘরমুখো মানুষের নিরাপদ যাতায়াতের লক্ষ্যে রেলওয়ে স্টেশন, বাস ও লঞ্চ টার্মিনালে টিকেট কালোবাজারি প্রতিরোধে পুলিশ, মালিক ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ এবং কমিউনিটি পুলিশের সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জাতীয় ঈদগাহ, ময়দানসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের ঈদ জামাতস্থলে পর্যাপ্ত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

রমজান, ঈদ এবং ঈদ পরবর্তী আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সার্বিক সমন্বয়ের লক্ষ্যে পুলিশ সদরদফতর ও প্রতিটি জেলা/ইউনিটে কন্ট্রোল রুম চালু থাকবে।

আরও পড়ুন: 

কাজে অনীহা, তাই ৪০ হাজার নারী গৃহকর্মীকে ফেরত পাঠিয়েছে সৌদি আরব!

প্রয়োজনে ফৌজদারি আইনে পরিবর্তন আসতে পারে

/এফএস/এপিএইচ/