জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদকে প্রশ্রয় দেবো না, সিদ্ধান্ত নিয়েছি: প্রধানমন্ত্রী

জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদকে কোনওভাবেই প্রশ্রয় দেবো না। এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এমনটাই মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার সংসদ অধিবেশনের প্রশ্নোত্তর পর্বে একথা বলেন তিনি।

সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান সরকারের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সবসময় আমাদের একটি সন্ত্রাসবিরোধী ভূমিকা রয়েছে। বাংলাদেশে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ যাতে না থাকে সেজন্য আমরা জিরো ট্রলারেন্স অর্থাৎ কোনওমতেই জঙ্গিবাদ সন্ত্রাসকে প্রশ্রয় না দেওয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ হওয়া এবং এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাই। ওআইসিতে (অরগানাইজেশন অব ইসলামিক) যতবার আমি গেছি এ প্রশ্নটা আমি তুলেছি। ওআইসি মহাসচিবের সঙ্গে যখনই দেখা হয়েছে আমি এ কথাটা বলেছি।’

জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সৌদি আরব একটি ইসলামী জোট গঠন করেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস দূর করতে এ জোটে বাংলাদেশ যুক্ত হয়েছে। প্রায় ৪০টা দেশ এ জোটে যুক্ত হয়েছে। এরফলে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে গোটা মুসলিম উম্মাহের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে। ইসলাম শান্তির ধর্ম।’

আবুল কালাম আজাদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এরকম অনেক অপরাধী পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রয়েছে। বাংলাদেশ সবসময় সেসব সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে তাদের ফিরিয়ে আনতে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। যাতে অপরাধীগুলো যাদের বিরুদ্ধে মামলা, ওয়ারেন্ট রয়েছে তাদেরকে নিয়ে আসা। সাজা দেওয়া বাংলাদেশের কর্তব্য। যে ভদ্রলোকের নাম উনি বললেন, সে সৌদি আরবের কোথায় আছে সে বিষয়টা নিশ্চয়ই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করবে যাতে এ আসামিকে ধরে নিয়ে এসে সাজা দেওয়া যায়।’

শাজাহান কামালের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশে আর্থসমাজিক উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি, উৎপাদন বৃদ্ধি এসব লক্ষ্য নিয়েই অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলেছি। বিদেশি বিনিয়োগ যাতে দেশে আসে সেজন্যে আমরা বিশেষ সুবিধাগুলো দিয়ে যাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক উদার নীতি গ্রহণ করেছে। এ কারণে বিদেশি বিনিয়োগ আমাদের দেশে প্রচুর বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিশ্বে বিরাট সুযোগ দিচ্ছে এটা বিশ্বে স্বীকৃত। বিনিয়োগ ২০১৪ সালের তুলনায় এবার ৪৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নারী-পুরুষ সবার জন্যে উন্মুক্ত। নারী, পুরুষ যে কেউ এই নির্বাচনে অংশ নিতে পারে। এটা শুধু পুরুষদের নির্বাচন বলে কথা নেই। নারীরা সরাসরি নির্বাচন করে। আমরা ৯৬’ সালে ক্ষমতায় আসার পর তৃণমূল থেকে নারী নেতৃত্ব গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে প্রথম নারীদের জন্যে সংরক্ষিত আসন নির্বাচনের ব্যবস্থা করে দেই। সংরক্ষিত আসনগুলোতে শুধু নারীরাই দাঁড়াতে পারে। পুরুষ পারে না। এখানে শুধু নারীরাই দাঁড়াতে পারে। নারীর ক্ষমতায়নে এটা মাইলফলক। এটা হচ্ছে নারীদের জন্যে একেবারে সংরক্ষিত আসন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম প্রশ্নটি হবে নারীদের এত ক্ষমতা দিলাম পুরুষদের জন্যে কিছু করব কিনা। উনি সেই প্রশ্নটা করবেন। তবে সেইদিন বেশি দূরে নয়, ভবিষ্যতে হয়ত দেখা যাবে পুরুষ অধিকার সংরক্ষণ কমিটি করা হচ্ছে, আমার সমর্থন পাবেন।’

আরও পড়ুন: ক্রসফায়ার এক, গ্রেফতার এক, বাকি চারজনের অবস্থান কোথায়

/পিএইচসি/এসটি/