এর আগে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টের চার বর্গ কিলোমিটার এলাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। গণমাধ্যমকর্মীদের ওই এলাকা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। রেস্টেুরেন্টের ভেতরে সন্ত্রাসীরা এখনও জিম্মি করে রেখেছে দেশি-বিদেশিদের নাগরিকদের। এর মধ্যেই যৌথ বাহিনীর পক্ষ থেকে হ্যান্ড মাইকে জঙ্গিদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হয়। কিন্তু জঙ্গিরা আত্মসমর্পণ করেনি।
জিম্মি অবস্থা চলে শুক্রবার রাত সোয়া ৯টা থেকে। পুলিশ বেষ্টনীর বাইরে উৎকণ্ঠায় সময় কাটাচ্ছেন জিম্মিদের স্বজনরা। এরমধ্যেই নিহত ডিবির এসি রবিউল করিম ও বনানী থানার ওসি সালাহউদ্দিনের আত্মীয়-স্বজনরা ঘটনাস্থলে এসে চলে গেছেন। সাংবাদিকরা ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৫০০ গজ দূরে অবস্থান করছেন। এর মধ্যেই শুরু হয়েছে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি।
ঘটনাস্থলে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করতে ৮৪ নম্বর রোডের ইরানি অ্যাম্বাসি ও ইতালি অ্যাম্বাসির সামনে ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। পুলিশের রায়ট কার ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়িও এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর পাশপাশি রয়েছে র্যাব ও নেভির কমান্ডো এবং সোয়াত টিম।
এর আগে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রেস্টুরেন্টের ভেতরে অস্ত্রধারীদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে। যৌথবাহিনী গুলশানের রেস্টুরেন্টে জিম্মি সংকটের অবসান ঘটাতে জঙ্গিদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানালে জঙ্গিরা তিনটি শর্ত দিয়েছিলো। শর্ত তিনটি হলো- ১. একদিন আগে ডেমরা থেকে আটক জেএমবি নেতা খালেদ সাইফুল্লাহকে মুক্তি দিতে হবে। ২. তাদেরকে নিরাপদে বের হয়ে যেতে দিতে হবে। ৩. ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তাদের এই অভিযান- স্বীকৃতি দিতে হবে।
প্রত্যক্ষদর্শী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা জানান, জঙ্গিরা বার বার রেস্টুরেন্টের ভেতর থেকে চিৎকার করে তাদের শর্তের কথা জানায়।
প্রসঙ্গত, রাজধানীর গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর সড়কের একটি রেস্তোরাঁয় সন্ত্রাসীদের সঙ্গে পুলিশের গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ডিবির সহকারী (এসি) রবিউল করিম ও বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহউদ্দিন নিহত হয়েছেন। এছাড়া পুলিশসহ অর্ধশত আহত হয়েছেন।
ওই রেস্টুরেন্টের ভেতরে ২০ জনের বেশি বিদেশি নাগরিক জিম্মি হয়ে আছেন বলে জানা গেছে। একই ভবনে ‘ও কিচেন’ নামে আরেকটি রেস্তোরাঁর আরও পাঁচজনকে সন্ত্রাসীরা জিম্মি করে রেকেছে বলেও জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিচালক (আইজিপি)।
এদিকে, এই হামলার ঘটনায় আইএস দায় স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে সাইট ইন্টিলিজেন্স। একইসঙ্গে তারা জানিয়েছে, আইএস দাবি করেছে, গুলশানে ২০ জনের বেশি বিদেশি নাগরিককে হত্যা করা হয়েছে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কিছুই বলা হয়নি। পুলিশ শুধু দুই কর্মকর্তার নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
ছবি: নাসিরুল ইসলাম
/এমও/এজে/এমএনএইচ/ এএইচ/