দিনব্যাপী সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বক্তব্য রাখেন।
এছাড়া গবেষক, ব্যবসায়ী, মনোবিজ্ঞানী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সুশীল সমাজের অন্য প্রতিনিধিরা এ বিষয়ে বক্তব্য রাখেন।
পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক বলেন, এটি মতবাদের যুদ্ধ এবং এটিকে মোকাবিলা করার জন্য পাল্টা মতবাদ প্রচার করতে হবে। এর আগে নিরাপত্তা দিয়ে সন্ত্রাসবাদকে মোকাবিলা করার চেষ্টা করা হয়েছিল কিন্তু সেটি ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেন সন্ত্রাসবাদকে রুখতে হলে উন্নয়ন ও সম্পৃক্ততা দিয়ে এর মোকবিলা করতে হবে।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার সাখাওয়াত হোসেন বলেন, পাল্টা মতবাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে সহিংস উগ্রবাদ মোকবিলা এবং এর বিস্তার ঠেকানো। যেন করে একটি দেশ বা অঞ্চলে এটি প্রভাবিত করতে না পারে।
মেট্রোপলিটান চেম্বারের সভাপতি নাসিম মঞ্জুর বলেন গত ১২ মাসে প্রায় ৫০ জন ব্যক্তি নিহত হলেও গুলশান ১ এর ঘটনাটির প্রভাব সম্পূর্ণ ভিন্ন। তিনি বলেন, আগে আমরা বলতাম বাংলাদেশ একটি মডারেট মুসলিম দেশ কিন্তু এখন এটি আমাদের পক্ষে বলাটা মুশকিল হয়ে গেছে। নিরপত্তা ব্যবস্থার অবনতি হলে বাংলাদেশের রপ্তানি ও রেমিট্যান্স ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
নাসিম মঞ্জুর বলেন, বাংলাদেশের ৬০ শতাংশ মানুষের বয়স ৩০ বছরের নিচে এবং তারা বৃক্ততা, ধর্ম প্রচার বা জ্ঞান শুনতে চায় না। তারা যে ভাষায় শুনতে চায়, অনলাইন বা অফলাইন সেই ভাষায় আমাদের কথা বলতে হবে। তিনি বলেন, সন্ত্রাসীরা অনলাইনের মাধ্যমে দ্রুত তাদের মতাদর্শ প্রচার করে তাকে এবং সেজন্য সরকার এবং সুশীল সমাজকে তৈরি থাকতে হবে এর পাল্টা মতাদর্শ প্রচারের জন্য।
জামিয়া ইকরা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ বলেন, সন্ত্রাসিরা ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা দেয় এবং কোরআন বা হাদিসের খন্ডিত অংশ প্রচার করে। তিনি বলেন, আমাদের যুব সমাজের কাছে যেতে হবে এবং তাদের বোঝাতে হবে এটি ’জাহান্নামের পথ’। তাদের সেখান থেকে ফেরাতে হবে।
পুলিশের এআইজি মোহাম্মাদ মনিরুজ্জামান বলেন, সন্ত্রাসবাদ দমন পুলিশের একার কাজ নয়, এটি গোটা সমাজের কাজ। তিনি বলেন, সন্ত্রাসী বিষয়ে আমাদের গোয়েন্দা তথ্য নেই এবং এ বিষয়ে আমাদের অনেক হাজ করতে হবে। আমাদের সক্ষমতা নেই ভবিষ্যৎ কোনও আক্রমণ ঠেকানোর এবং এজন্য তিনি তাদের বাজেট বাড়ানোর ওপর জোর দেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী তার উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের সন্ত্রাসীরা আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনগুলোর কাছ থেকে কোনও দিকনির্দেশনা পাচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ ও উগ্র মতবাদের চক্র ভাঙতে সরকার বদ্ধপরিকর। এই সন্ত্রাসী ঘটনার পেছনে কারা রয়েছে তা বের করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাসবাদবিরোধী কমিটি এবং কমিউনিটি পুলিশিং জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন। জনগণ বিশেষ করে যুব সম্প্রদায় যাতে উগ্রমতবাদের দিকে ঝুঁকে না পড়ে তার জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।
/এসএসজেড/এমএনএইচ/